শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


মিরপুর ওয়াজাহাতি জোড় থেকে ৯ ঘোষণা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হামিম আরিফ: তাবলিগ জামাতের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি হওয়া শঙ্কার বিষয়গুলো স্পষ্ট করতে মিরপুরে অনুষ্ঠিত হলো ওয়াজাহাতি জোড়। এতে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম ও তাবলিগের মুরব্বিগণ বয়ান পেশ করেন।

সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয়ে জোড় শেষ হয় দুপুর দেড় টায়। বয়ান শেষে সংক্ষিপ্ত মুনাজাতে তাবলিগের চলমান পরিস্থিতি নিরসনে সবাইকে ইখলাসের সঙ্গে কাজের পরামর্শ দেয়া হয়।

তাবলীগি মেহনতের জীবন্ত কারগুজারি

জোড়ে বক্তব্য দেন হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, কাকরাইল মারকাজের শুরা সদস্য মাওলানা যুবাইর আহমদ ও মাওলানা রবিউল হক, জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, আরজাবাদ মাদরাসার পরিচালক মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, কাপাশিয়ার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, শাইখুল হাদীস মাওলানা সা‌জিদুর রহমান, উত্তরা আল মানহাল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আজহারী, ট‌ঙ্গি দারুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মাসউদুল করিম প্রমুখ।

জোড়ে আলেমগণ ছাড়াও স্থানীয় এমপি আলহাজ ইলিয়াস উদ্দীন মোল্লা ও আসলামুল হক বক্তব্য দেন।

জোড় থেকে ৯ টি ঘোষণা সম্মলিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এগুলো হলো-

১। জমহুর উলামায়ে কেরাম একমত হয়েছেন তিনটি মৌলিক কারণে:- ক. কুরআন ও হাদীসের মনগড়া ব্যাখ্যা। খ. তাবলীগের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে তাবলীগ ব্যতীত দ্বীনের অন্যান্য মেহনতকে যথা দ্বীনি শিক্ষা ও তাসাউফ ইত্যাদিকে হেয় প্রতিপন্ন করা।

গ. পূর্ববর্তী তিন হযরতজীর উসূল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে মাওলানা সা'দ সাহেবকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণভাবে বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ।।

২। মাওলানা সা'দ সাহেব হযরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ. এর রেখে যাওয়া শুরায়ী নেযামকে উপেক্ষা করে নিজেই নিজেকে আমীর দাবী করেছেন, যা শরীয়ত বিরােধী। তাই তার কোন সিদ্ধান্ত এবং ফায়সালা বা নির্দেশ কাকরাইল তথা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা যাবে না।।

৩। দারুল উলুম দেওবন্দ আশংঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, মাওলানা সাদ সাহেব আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতাদর্শ থেকে সরে গিয়ে নতুন কোন ফেরকা গঠনের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

এহেন পরিস্থিতিতে বালাদেশের কোনো জামাত বা ব্যক্তিকে নিযামুদ্দীনে পাঠানাে বা যাওয়া মুনাসিব হবে না। অনুরুপভাত নেযামুদ্দিন থেকে আগত কোনাে জামাতকে কোন জেলায়/থানা/ইউনিয়নে কাজ করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। 

কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন

৪. মাওলানা ইলিয়াস রহ., মাওলানা ইউসুফ রহ. ও হযরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ এর বাতলানো পদ্ধতিতে তাবলিগের কাজ সারা দুনিয়ায় সমা সমাদ্ভূত ও গৃহীত হয়েছে।

তাই বাংলাদেশে এই তিন হযরতের পদ্ধতিতে এবং উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে তাবলিগের কাজ পরিচালিত হবে। নতুন কোন পদ্ধতি চালু করা যাবে না।  কাকরাইল ও টঙ্গী ময়দান এবং জেলা মারকাযসহ সকল মারকায এই নীতিতেই পরিচালিত হবে। 

৫। কাকরাইল মসজিদের যে সকল শুরা সদস্য আমরণ মাওলানা সা'দ সাহেবের ভ্রান্ত আকীদা অনুসরণের শরীয়ত পরিপন্থী হলফ নামা করেছেন, তারা শুরাসদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন। অতএব তাদেরকে তাবলীগের কাজে শুরা ও ফায়সাল না রাখার আহ্বান জানানাে যাচ্ছে।

৬। ২০১৮ ইং সনের বিশ্ব ইজতেমার পূর্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় তথা ১. কাকরাইলের আহলে শুরা ২. শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম ৩. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলাের বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখার জোর আহ্বান জানানাে যাচ্ছে।

সিদ্ধান্তগুলাে নিম্নরূপ - 

ক, মাওলানা সা'দ সাহেব দারুল উলুম দেওবন্দের সাথে মতপার্থক্য দূর করত: দারুল উলুম দেওবন্দের আস্থা অর্জন না করা পর্যন্ত বাংলাদেশে আসতে পারবেন না।

খ. নিযামুদ্দীনের যে সকল আকাবির উলামায়ে কেরাম মাওলানা সা'দ সাহেবের সাথে দ্বিমত পােষণ করে মারকায় ত্যাগ করে চলে গেছেন, তাদের সাথে সমস্যা নিরসন করে একসাথে বাংলাদেশে আসবেন, একা আসবেন না।

এসে গেল যাদুকরী মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার

৭। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশ ও জাতির শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উল্লেখিত বিষয় দু'টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত মাওলানা সা'দ সাহেবের কোনাে পরামর্শ ও নির্দেশনা তাবলীগের সাথী ভাইগণ এদেশে চালানাের চেষ্টা করবেন না; বরং এদেশের দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত কাকরাইল মারকাযের মুরুব্বীদের পরামর্শক্রমেই চলবে।

৮। এবারের পাঁচ দিনের জোড় ৭,৮,৯,১০,১১ ডিসেম্বর ২০১৮ইং অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৮ এর টঙ্গী ইজতেমায় সরকারের সাথে পরামর্শক্রমে আগামী ২০১৯ইং এর টঙ্গী ইজতেমার জন্য নির্ধারিত তারিখ প্রথম পর্ব ১৮,১৯,২০ জানুয়ারী ও দ্বিতীয় পর্ব ২৫,২৬,২৭ জানুয়ারীর সাথে আজকের মজমা ঐকমত্য পোেষণ করছে।

৯। ২০১৯ সালের ইজতেমার আগে ও পরে কোনাে জেলাওয়ারী ইজতেমা হবে না। উপরােক্ত ঘােষণাসমূহ যথাযথ বাস্তবায়নে এবং বর্তমানে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলারােধে সরকারের সার্বিক সহযােগিতা কামনা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

আমি ওদের বলেছি আপনারা অা‌লেম‌দের সা‌থে বসুন: এমপি আসলাম
সাদ সাহেবের অনুসারীরা ব্যক্তিপূজা করছেন: আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী
এখন থেকে মিরপুর মারকাজ আলেমরা চালাবেন: ইলিয়াস মোল্লাহ
মিরপুরে চলছে ওয়াজাহাতি জোড়; বয়ান করছেন আলেমগণ

আপনার ব্যবসার হিসাব এখন হাতের মুঠোয়- ক্লিক


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ