বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


মাওলানা আবদুল্লাহকে বের করে দেয়া হলো কাকরাইল মারকাজ থেকে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবরার আবদুল্লাহ : তাবলিগ জামাতের কাকরাইল মারকাজের মুকিম মাওলানা আবদুল্লাহ মনসুরকে জোরপূর্বক মারকাজ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। আলেমদের অভিযোগের পরও তিনি কাকরাইল না ছাড়ায় তাকে বের করে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টম্বর (রোববার) রাত ১০.৩০ মিনিটের দিকে কাকরাইলের মাশওয়ারার রুমে গেলে সেখানে থাকা কয়েকজন ব্যক্তির হাতে হেনস্থার শিকার হন। এর কিছুক্ষণ পর মাওলানা আবদুল্লাহকে তারা বের করে দেন।

এ সময় তাকে মারধরও করা হয় বলে জানান মাওলানা আবদু্ল্লাহ।

এ বিষয়ে মাওলানা আবদুল্লাহর আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমি দুই দিন খিদমাহ হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। গতকাল (বুধবার) রাতে আমাকে রিলিজ দেয়া হয়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে আমি এখন (বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা) খিদমাহ হাসপাতালে আছি।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, গত ১৭ সেপ্টম্বর (রোববার) রাত ১০.৩০ মিনিটের দিকে কাকরাইলের মাশওয়ারার রুমে আট-দশ জন লোক দেখি এবং আমি তাদের সাথে কুশল বিনিময় করতে যাই। সালাম মুসাফাহার পর প্রথমে একজন আমার হাত চেপে ধরে এবং একজন পাগড়ি দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে। পেছন থেকে কয়েকজন আমাকে আঘাত করেন। তাদের মধ্যে একজন মাওলানা যোবায়ের আহমদের খেদমতে থাকেন। আমাকে মারধর করার পর টেনে-হেঁচড়ে কাকরাইল থেকে বের করে দেয়া হয়।

মাওলানা আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘যারা আঘাত করেন তাদের অধিকাংশকেই আমি চিনি। তারা সবাই কাকরাইলের পুরাতন সাথী। আঘাত করার সময় তারা বারবার বলছিলো, তোকে ওলামায়ে কেরাম কাকরাইল থেকে বের হয়ে যেতে বলছে। যাস না ক্যান? আমাকে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়ার সময়ও তারা আমাকে হুমকি দেয় কাকরাইলে আসলে আমাকে মেরে ফেলবে এবং আমার পুরো পরিবারকে শেষ করে দিবে।’

এ বিষয়ে কাকরাইলের মুরব্বি মুফতি শাহরিয়ার মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘বিষয়টি কে বা কারা করেছে আমি জানি না। তবে মাওলানা আবদুল্লাহকে দেশের ওলামায়ে কেরাম ও মুরব্বিরা বারবার কাকরাইল ছেড়ে যেতে বলার পরও তিনি কাকরাইল ছেড়ে যান নি। বরং দলদারি ও ফেৎনাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের বাজে তৎপরতা চালাচ্ছিলেন। এতে কাকরাইলের মুরব্বি, মুকিম ও সাথীগণ তার উপর বিরক্ত ছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি শুনেছি, মাওলানা আবদুল্লাহ ঘটনার দিন রাতে মাশওয়ারার রুমে মাশওয়ারার খাতা দেখছিলেন বা কিছু লিখছিলেন। তখন তাকে বলা হয়, তোমাকে এমনি কাকরাইলে থাকতে নিষেধ করা হয়েছে। তারপর তুমি এতো রাতে এখানে কী কর? একদল সাথী তাকে জোর করে কাকরাইল থেকে বের করে দেন। মাওলানা আবদুল্লাহ বের হতে চাচ্ছিলেন না। তাই তাকে জোর করতে যেয়ে কিছুটা ধস্তাধস্তি হতে পারে। তবে তিনি যাকে মাওলানা যোবায়ের আহমদের খাদেম দাবি করেছেন, তিনি তার রুমের খাদেম না। তিনি একজন ব্যবসায়ী। মাওলানা যোবায়েরকে মহব্বত করেন। তার কাছে যাতায়াত করেন।’

মাওলানা আবদুল্লাহর ব্যাপারে কাকরাইলের সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে মুফতি শাহরিয়ার মাহমুদ বলেন, ‘এতো দিন তাকে মৌখিকভাবে নিষেধ করা হয়েছিলো। কিন্তু এখন শুরা চিঠি ইস্যু করে তাকে কাকরাইলে আসতে নিষেধ করেছেন। বর্তমানে তিনি কাকরাইলের বাইরে আছেন।’

তবে মাওলানা আবদুল্লাহ চিঠি পাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো চিঠি পাই নি। আমাকে নাসিম সাহেব বলেছেন, ‘আপনি আপাতত বাসায় থাকেন। আমরা পরামর্শ করে আপনাকে ডেকে আনবো।’

এখন কি করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কারো কাছে অভিযোগ করবো না। আমি আল্লাহর কাছেই শুধু অভিযোগ করবো। আর যেহেতু শুরা আমাকে নিষেধ করে নি। আমি কাকরাইলে যাবো।’

তবে এর আগে মাওলানা আবদুল্লাহর ব্যাপারে আলেমদের  অভিযোগের পর তিনি আলেমদের কাছে আনুষ্ঠানিক তওবা করেন এবং তার ভুলত্রুটি থেকে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। সেই তওবার চিঠিতে দেশের বেশ কয়েকজন আলেমের স্বাক্ষরও ছিল।

কাকরাইলের মাওলানা আবদুল্লাহর তওবানামা

যা আছে কাকরাইলের মাওলানা আবদুল্লাহ’র তওবানামায়


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ