আবদুল্লাহ তামিম: পাকিস্তানকে এ ইমরান খানই একদিন ক্রিকেটে বিশ্বসেরা করেছিলেন। সেই ইমরান খানই এবার হতে যাচ্ছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী।
উপমহাদেশের প্রথম কোনো ক্রীড়াবিদ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নজির সৃষ্টি করতে চলেছেন তিনি।
দুর্দান্ত ক্রিকেটার হিসেবেই বিশ্বের সামনে প্রথম পরিচিত হয়েছিলেন ইমরান খান। কিন্তু তারপর থেকে কখনো তিনি প্লেবয়, কখনো সমাজসেবী, কখনো রাজনীতিবিদ, আবার কখনো বা চরমপন্থী নাগরিক। বিভিন্ন আঙ্গিকে দেখা গিয়েছে তাকে।
১৯৫২ সালের ৫ অক্টোবর লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন ইমরান খান। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
সাতের দশকের শেষ দিকের বেশিরভাগটাই তার কেটেছে লন্ডন শহরে। পড়াশুনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রিকেট খেলেছেন।
ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি অত্যন্ত আকৃষ্ট ছিলেন তিনি। ১৯৬৮ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে লাহোরের হয়ে সারগোরার বিরুদ্ধে প্রথম ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলেন ইমরান। ক্রিকেটের প্রতি ইমরান খানের আগ্রহ এবং লড়াকু মনোভাবই তাকে দ্রুত স্থান করে দেয় পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলে।
১৯৭০ সালে যখন তিনি পাকিস্তান দলে ডাক পান, তখনো তার পড়াশোনাই শেষ হয়নি। অসামান্য প্রতিভার দৌলতে সাফল্যের শিখর স্পর্শ করতে খুব বেশি সময় লাগেনি ইমরানের।
ক্রিকেট থেকে অবসরের পর অন্য ক্রিকেটাররা যেখানে কমেন্ট্রি বক্স বা কোচিংয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ খুঁজে নেন, সেখানে ১৯৯৬ সালে ইমরান পা বাড়ান ঘোর অনিশ্চয়তায় ঢাকা পাকিস্তান রাজনীতির কানা গলিতে।
১৯৯৬ সালের ২৫ এপ্রিল নিজের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গঠন করেন ইমরান। কিন্তু ক্রিকেটের মতো রাজনীতিতে চটজলদি সাফল্য পাননি ইমরান।
প্রায় দেড় দশক ধরে পার্লামেন্টে তার দল পিটিআইকে হাতে গোনা আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। তবু হাল ছাড়েননি লড়াকু ‘ক্যাপ্টেন’।
খেলা যে ঘুরছে, তার প্রথম ইঙ্গিতটা পাওয়া গিয়েছিল ২০১১ সালে। ওই বছরের ৩০ অক্টোবর তারিখে ইমরান একটি মিছিল আয়োজন করেছিলেন। সেই মিছিলে প্রায় ২ লাখ মানুষের ভিড় হয়েছিল বলে দাবি।
পাকিস্তান রাজনীতির ইতিহাসে সেই মিছিল ছিল অন্যতম বড় মিছিল। আর এবারের নির্বাচনে তার দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও সবচেয়ে বেশি আসন দখলের সুবাদে ইমরানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া কার্যত নিশ্চিত।
১৯৯২ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা পাকিস্তানের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বলেই মনে করা হয়।
সন্ত্রাসবাদ আর সহিংসতার আগুনে জ্বলতে থাকা পাকিস্তানকে ইমরান ও তার ছেলেরা বিশ্বের সামনে নতুন এক ভাবমূর্তিতে তুলে ধরেছিলেন। ফের একবার তার হাত ধরেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে পাকিস্তানি জনতা।
মূলত বিশ্লেষকরা মনে করছেন দ্যা রোড টু নয়া পকিস্তানের কারণেই মানুষ ইমরানকে পছন্দ করেছে।
ভিন্ন কিছু দেখতে চায় পাকিস্তানের জনগণ। তাই নতুন প্রধানমন্ত্রী এসেছে আজকের পাকিস্তানের মসনদে।
সূত্র: ডেইলি পাকিস্তান, এরাবিয়ান জার্নাল
দুর্নীতিমুক্ত নতুন পাকিস্তান গড়ে তোলা হবে: ইমরান খান