শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

শহরে শব্দ দূষণ : গান বাজনা হর্ণ হাঙ্গামা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

 আওয়ার ইসলাম : শব্দ দূষণ এখন জীবনবিনাশী শব্দ সন্ত্রাস। রাজধানী ঢাকাসহ দেশ জুড়েই শব্দদূষণ এক নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। এক গবেষণায় জানা গেছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ঢাকার মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ কানে কম শুনবে। আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই এর বিরুদ্ধে।

ঢাকাসহ দেশজুড়ে বিয়ে বা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানসহ নানা সামাজিক-রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে মাইকে গান বাজানো যেন একটা স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নেতার জন্মদিন, মৃত্যুবার্ষিকী বা বিশেষ দিবসগুলোতে সারাদিন-রাত ধরে উচ্চ শব্দে মাইক বাজালেও কেউ তার প্রতিবাদ করার সাহস পান না।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ প্রণয়ন করা হয়। বিধিমালার আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই আইনের তেমন প্রয়োগ দেখা যায় না।

বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন বলেন, পরিবেশবাদীদের শত চেষ্টা এবং প্রচারণায় কোনো কাজে আসবে না, যদি না সরকারের স্বদিচ্ছা থাকে। তিনি জানান, দেশে আইন আছে, তবে এর ব্যবহার নেই। তাহলে আইন তৈরি করা কিসের জন্য?

সরকার যদি চায় অবশ্যই জনগণকে মোটিভেট করতে পারে। আমরা আন্দোলন করি, শুধু সরকারের কানে পৌঁছানোর জন্য। বিশ্বের অন্যান্য দেশে সম্ভব হলে এদেশে কেন হবে না? শুধুমাত্র উদ্যোগটা দরকার। আর এটা সরকার ছাড়া কারও পক্ষে সম্ভব না।

বেসরকারি সংস্থা ‘ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট’ সম্প্রতি ঢাকা শহরের ১০টি স্থানের শব্দ পরিমাপ করে দেখেছে। ঢাকায় নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে গড়ে প্রায় দেড় গুণ বেশি শব্দ সৃষ্টি হয়।

জরিপে দেখা গেছে, উত্তরার শাহজালাল এ্যাভিনিউতে শব্দ মাত্রা সর্বোচ্চ ৯৩ দশমিক ৫ ডেসিবেল, মিরপুর-১ এ সর্বোচ্চ ৯৬ ডেসিবেল, পল্লবীতে সর্বোচ্চ ৯১ দশমিক ৫ ডেসিবেল, ধানমণ্ডি বালক বিদ্যালয়ের সামনে সর্বোচ্চ ১০৭ দশমিক ১, ধানমণ্ডি ৫ নম্বর সড়কে সর্বোচ্চ ৯৫ দশমিক ৫, নিউমার্কেটের সামনে সর্বোচ্চ ১০৪ দশমিক ১, শাহবাগে সর্বোচ্চ ৯৭ দশমিক ৩ এবং সচিবালয়ের সামনে সর্বোচ্চ ৮৮ ডেসিবেল। অর্থাৎ ‘ঢাকা শহরের বেশিরভাগ এলাকায় এখন শব্দের সার্বক্ষণিক গড় মাত্রা ১০০ ডেসিবেল’।

এছাড়া রাজধানীর শ্যামলীতে দশ মিনিটে শব্দ দূষণ ৬শটি আর ময়মনসিংহের ব্রিজমোড় এলকায় দশ মিনিটে ১ হাজারটি শব্দ দূষণ হচ্ছে বলে সম্প্রতি এক সমীক্ষায় পাওয়া গেছে বলে জানান মারুফ হাসান।

ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হাসান জানান, এলাকা ভিত্তিতে বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য শব্দের মাত্রার পাঁচটি ভাগ আছে। আর সেই হিসেবে শব্দের গ্রহণযোগ্য মাত্রা হলো ৪০ থেকে ৭০ ডেসিবেল। অথচ আমরা পরীক্ষায় দেখেছি, কোথাও কোথাও শব্দের মাত্রা গ্রহণযোগ্য মাত্রার তিনগুণেরও বেশি।

তিনি বলেন, ঢাকায় সাধারণভাবে যানবাহন ও হর্নের শব্দই শব্দ দূষণের মূল কারণ। তবে এর বাইরে রাজনৈতিক, সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে মাইক বা সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার আর একটি বড় কারণ। যদি আমরা ইনডোর শব্দ দূষণের দিকটি বিবেচনায় নেই তাহলে টাইলস লাগানো, মিউজিক সিস্টেমে জোরে গান বাজানো, ড্রিলিং এগুলোর শব্দ রয়েছে।

জানা গেছে, উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস, বধিরতা, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, আলসার, বিরক্তি সৃষ্টি হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন শিশু এবং বয়স্করা। এমনকি গর্ভে থাকা সন্তানও শব্দদূষণে ক্ষতির শিকার হয়, অর্থাৎ তাদের শ্রবণশক্তি খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।

এসএস

আরো পড়ুন : বিজিবি-বিএসএফের সম্পর্ক উন্নয়নমূলক যৌথ পতাকা অবনমন


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ