বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


‘আম্মাজান রহ. লাগাতার কয়েকদিন শুধু ডালই রান্না করতেন’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

[জামিয়া দারুল উলুম করাচির মুখপাত্র ‘ماہنامہ البلاغ মাহনামা আল-বালাগ’ এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত বিশ্বনন্দিত আলেম, স্কলার আল্লামা তাকি উসমানির আত্মজীবনী আওয়ার ইসলামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।

আল্লামা তাকি উসমানির নতুন ধারাবাহিক আত্মজীবনী “یادیں ইয়াদেঁ ” মাহনামা আল-বালাগে সফর ১৪৩৯ হিজরি, নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি মাস থেকে। আওয়ার ইসলামে লেখাটি সপ্তাহে দুদিন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে। আজ প্রকাশ হলো ২৪ তম কিস্তি। অনুবাদ করেছেন মাওলানা  উমর ফারুক ইবরাহীমী।]

পূর্ব প্রকাশের পর: পাকিস্তান হিজরতের পর হযরত আব্বাজান মুফতি মুহম্মদ শফি সাহেব রহ.এর সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী থেকে নিয়ে নিম্নশ্রেণীর অফিসার পর্যন্ত অনেকের সাথে ছিলো। তারা কখনো আব্বাজানের সাথে সাক্ষাতের জন্য আমাদের ঘরেও আসতেন।

কিন্তু কেউ জানতো না আমাদের ঘরে কত ধানে কত চাল! স্বয়ং আমাদের ঘরের সন্তানদেরও জানা ছিল না আব্বাজান কী প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।

আম্মাজান রহ. লাগাতার কয়েকদিন শুধু ডাল রান্না করতেন। আমার তো এসবের কথা স্মরণ নেই, তবে আমার বড়ভাই মাওলানা মুফতি মুহম্মদ রফি উসমানি মাদ্দাযিল্লুহুম যিনি তখন দশ বছর বয়সী ছিলেন তিনি বলেন, একদিন তিনি আম্মাজানকে অভিযোগের সুরে বললেন- ‘আপনি প্রতিদিন শুধু ডাল রান্না করেন!’

সেদিন আম্মাজান প্রথমবারের মতো ভাইজানকে বললেন- ‘তোমরা কিছুটা হলেও জানো বর্তমানে তোমাদের বাবার আয়-উপার্জনের কোনো ব্যবস্থা নেই!’

হযরত আব্বাজান রহ.এর এক বন্ধু হযরত খলিফা মুহম্মদ আকেল রহ.আমাদের দাদা হযরত মাওলানা মুহম্মদ ইয়াসিন রহ.এর শাগরেদ ছিলেন। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের ফার্সি ও গণিতের উস্তাজ ছিলেন।

মনীষীদের স্মৃতিকথা

পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণের ফলে তিনিও দেওবন্দ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছিলেন। হযরত শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাব্বির আহমাদ উসমানি রহ.এর পাকিস্তান আসার পর তিনি আমাদের পূর্বেই পাকিস্তান চলে এসেছিলেন।

পাকিস্তান এসে তিনি এখানে একটি মুদি দোকান খুলেছিলেন। দোকানের অবস্থান ছিলো সদর এবং জ্যাকব লাইনের মাঝামাঝি। সেই প্রাথমিক অবস্থায় যখন আব্বাজানের আয়-উপার্জনের কোনো ব্যবস্থা ছিলো না তখন খলিফা মুহম্মদ আকেল সাহেব জবরদস্তি করে তার দোকান থেকে কিছু খাদ্যসামগ্রী আমাদের ঘরে পাঠিয়ে দিতেন। পরবর্তীতে জানতে পেরেছিলাম কিছুদিন তা দিয়েই আমাদের খাবার রান্না হতো।

খলিফা মুহম্মদ আকেল সাহেবের আচরণ ছিল নিঃস্বার্থ হিতৈষী। তিনি কোন হিসেব নিকেশ রাখা ছাড়াই আমাদের ঘরে খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়ে দিতেন। তবে আব্বাজান রহ. পরিচ্ছন্ন লেনদেনের প্রতি এতটাই লক্ষ রাখতেন যে, যতবার তার দোকান থেকে বিভিন্ন সামগ্রী আমাদের ঘরে আসতো তিনি তার পাই-পাই হিসেব রাখতেন।

সুতরাং যখন আল্লাহ তা’আলা আব্বাজানকে অর্থের প্রাচুর্য দান করেছেন, তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব করে সে পরিমাণ অর্থ হযরত খলিফা সাহেব রহ.এর খেদমতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

(পরবর্তীতে ঘটনাক্রমে একবার স্বয়ং তিনি প্রতিকূল পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছিলেন তখন আব্বাজান রহ.আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ছিলেন। তাই আব্বাজানও হযরত খলিফা আকেল রহ.এর সেই বিরুপ পরিস্থিতির সময় তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।) চলবে ইনশাআল্লাহ...

আগের পর্ব: ‘আব্বাজান সোনার হারটি বেচতে গেলে দোকানি জানালেন সেটাতে একটুও স্বর্ণ নেই’

Ecommers-cover-bsofty

ব্যবসা এখন আপনার হাতের মুঠোয়। – বিস্তারিত জানুন


সম্পর্কিত খবর