বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

ওসমানী খেলাফতের সৈন্যের আমানত পাহারা দিচ্ছে ফিলিস্তিনি পরিবার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনে যুদ্ধরত ওসমানী খেলাফাতের এক সৈন্য তার সঞ্চয়ের বিপুল টাকার নোট গচ্ছিত রাখেন ফিলিস্তিনি ব্যবসায়ী রুশদি এফেন্দির কাছে।

পশ্চিম তীরের নাবলুসে একটি দোকানের মালিক ওই ব্যবসায়ী আমৃত্যু ওই তুর্কি সৈন্যকে দেয়া তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন এবং তাকে ফেরত দেয়ার জন্য ওই টাকা সযত্নে জমা রাখেন।

‘নাবলুসে কর্মরত ওই সৈন্য আমার চাচার কাছে ওই টাকা জমা রাখেন এবং প্রতিশ্রুতি দেন একদিন তিনি ফিরে আসবেন ওই টাকা নিতে’ তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন রুশদির ভাতিজা রাগিব হিল্মি আল-আলুল (৭১)।

ওই সৈন্যের ব্যাগে অটোমান বা ওসমানী শাসনামলের মুদ্রার বিভিন্ন নোট ছিল যার বর্তমান বাজার দাম ২৯ হাজার মার্কিন ডলার।

এসব নোটের উপরে বাম কোণায় সুলতান মেহমেত রেসাদের স্বাক্ষর ও নিচের বাম কোণায় নোটগুলোর ছাপাখানার সিল লক্ষণীয়।

আল-আলুল বলেন, ওই তুর্কি সৈন্যের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য তার পরিবার ১৯১৫ সাল থেকে তার টাকা রক্ষা করছেন।

আল-আলুল বলেন, ওই সৈন্যের নাম তিনি জানেন না। তিনি বলেন, ‘উনি হয়তো যুদ্ধে মারা গেছেন, অথবা স্বাভাবিকভাবে মারা গেছেন- কেউ জানে না।’

‘আমার চাচা উনার নাম ভুলে যাওয়ায় তার নামটাও আমরা জানি না। তবে, এই সৈন্য ওই বিশাল অঙ্কের টাকা জমা রেখে যাওয়ায় মনে হয় তারা সত্যিকারের বন্ধু ছিলেন’ যোগ করেন তিনি।

তার পরিবার প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য বিখ্যাত জানিয়ে আল-আলুল বলেন, ‘জেরুসালেমের টার্কিশ কনস্যুলেটের প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসার আগ পর্যন্ত ব্যাগটা আমাদের কাছে একটা বাক্সে রাখা ছিল। আমরা তাকে থলিটা দেখানোর সিদ্ধান্ত নেই।’
ওসমানী খেলাফত ১৫১৬ সাল থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিন শাসন করে।

আল-আলুল বলেন, তুর্কি সৈন্যের ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো ওই ব্যাগটি তার পরিবারের জন্য একটি গর্বের বস্তু হয়ে ছিল।

তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সালে দোকানে কাজ করতে প্রথম ওই ব্যাগটা দেখেন। ওটা কী জানতে চাইলে আমার পরিবারের সদস্যরা আমাকে এর পেছনের কাহিনীটি বলেন। আমরা এটা কখনো ব্যবহার করার চিন্তাও করিনি।’

‘এর আর্থিক মূল্যমানের চেয়ে ব্যাগটি এখন ঐতিহাসিক বস্তু হিসেবে আলাদাভাবে মূল্যবান’ বলেন আল-আলুল।

ওই তুর্কি সৈন্যের সন্তান-সন্ততি বা নাতিপুতি যদি উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে এসে ওই ব্যাগটি দাবি করেন তাহলে তিনি তা ফিরিয়ে দিবেন বলেও জানান।

এসব নোট তিনি তুরস্কের জাদুঘরে পাঠাবেন কিনা জানতে চাইলে আল-আলুল বলেন, তার পরিবারের সাথে আলোচনা করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন তিনি।

এই ফিলিস্তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবার নাবলুসে প্রতিষ্ঠিত এবং এটা এই শহরের সামাজিক ও আর্থিক উন্নতিতে ভূমিকা রেখেছে। এই পরিবারের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে (তুর্কি সৈন্যের ব্যাগটির মতো) বিভিন্ন আমানত গচ্ছিত রাখা এবং তার পরের প্রজন্মকে ফিরিয়ে দেয়া।’ এরাবিয়ান জার্নাল।

আরও পড়ুন: তুরস্ক : উসমানী খেলাফতের সমাধি থেকে আজ [৩]
তুরস্ক : উসমানি খেলাফতের সমাধি থেকে আজ (১)

আরএম-

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ