শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান ঢাকাস্থ চাঁদপুর ফোরামের সেতুবন্ধন সভা অনুষ্ঠিত অর্থবহ সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়: প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ বিস্ময়কর হাফেজ শিশুর সঙ্গে শায়খ আহমাদুল্লাহ মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর জানাযা ও দাফন সম্পন্ন ১৬ টি বছর জুলুম-ষড়যন্ত্রের মধ্যে ছিল মাদরাসার ছাত্ররা: ড. শামছুল আলম  ‘সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় সংস্কার কমিশন’ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসানের ইন্তেকালে খেলাফত মজলিসের শোকপ্রকাশ কাল ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

‘তারাবির রাকাত সংখ্যা নিয়ে কোনো বিতর্ক উচিৎ নয়’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আসছে মহিমান্বিত মাহে রমজান। নতুন উদ্যমে ইবাদতে মশগুল হবে মুসলমান। রোজা নামাজ আর তারাবিতে মন দিবে মহান বিশ্ব মুসলিম।

তারাবির নামাজ রমজানের প্রাণ। রমজান জুড়ে মুসলমান বিশ রাকাত তারাবিতে খতম করে পুরো কুরআন। রাসুল সা. ও চার খলিফার আমল থেকে শুরু করে বিশ রাকাত নামাজ চলে এলেও বর্তমানে এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক।

এ বিতর্ক থেকে উত্তরণের পদ্ধতি সম্পর্কে আওয়ার ইসলাম কথা বলেছে জামিয়া ইসলামিয়া রওজাতুল উলুম বাউনিয়াবাদ ঢাকার মুহতামিম ও সাইন্সল্যাব কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফীর সঙ্গে। সাক্ষাতকার নিয়েছেন আবদুল্লাহ তামিম

তারাবির সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক থেকে উত্তরণের উপায় কী?

ইসলামের সূচনালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম উম্মাহ তারাবির নামাজ বিশ রাকাত পড়ে আসছে। সাহাবাগণও বিশ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করে আসছেন। সুতরাং তরাবির নামাজের সংখ্যা নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্ক উচিৎ নয়।

এমন কি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল এর আমল দ্বারা ২০ রাকাত তারাবির নামাজ প্রমাণিত (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, ২/৩৯৪, হাদিস নং-৭৭৭৪।

মুসনাদে আবদ ইবনে হুমাইদ, পৃঃ২১৮। তাবরানি আল মুজামুল কাবির, ১১/৩১১, হাদিস নং-১২১০২ তাবরানি আল মুজামুল আওসাত, ১/৪৪৪, হাদিস নং-৮০২ বায়হাকি সুনানে কুবরা, ২/৪৯৬, হাদিস নং-৪৬১৫)

জনসাধারণ কে কীভাবে বললে বা বুঝালে তাদের মধ্যে সংখ্যা নিয়ে আর সন্দেহ থাকবে না বলে মনে করেন?

দেখেন, রমজান বান্দাদের জন্য বোনাস বা ইবাদতের সুযোগের মাস আল্লাহর পক্ষ থেকে। দুনিয়ার মানুষ সবাই লাভবান হতে চায়। মানুষের কাছে লাভের কথাটা বলতে হবে বুঝাতে হবে।

রমজান অর্জনের মাস। আল্লাহর পক্ষ থেকে গোল্ডেন অফার। আল্লাহ তায়ালা রমজানে ফরজগুলো ৭০গুণ বাড়িয়ে দেন। আর নফলগুলোকে ফরজের সওয়াব দান করেন। তাই ইবাদতের ক্ষেত্রে কোয়ালিটি কন্টিটি উভয়টি দেখতে হবে।

এ জন্য কেউ যদি চিন্তা করে প্রতিদিন বারো রাকাত করে বেশি আদায় করতে পারছি, আবার তেলাওয়াতও বেশি হচ্ছে। তো আল্লাহ আমাকে ইবাদতের জন্য সুযোগ দেয়ার পরও আমি পড়ছি না।

তাই সবদিক লাভবান হওয়ার দিক দিয়ে ২০ রাকাতের তুলনা করে লস করার পক্ষে কেউ যাবে না।

তরাবির নামাজ ২০ রাকাতই আদায় করতে হবে এটার যুক্তি হিসেবে কী বলবেন?

পৃথবীর সবাই লাভ খুঁজে আর আমাদেরও লাভবান হবার জন্য রমজানের ইবাদতের দিকে মনযোগ দিয়ে বিশ রাকাতই আদায় করতে হবে। এর থেকে কম আদায় করার কোনো সুযোগ নেই।

আল্লাহ তায়ালা যেহেতো আমাদেরে জন্য রমজানের নফলকে ফরজের পর্যায় রেখেছেন তাই আমাদেরও খুব বেশি বেশি ইবাদতের দিকে মনোযোগ দেয়া দরকার।

তাছাড়া  দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর ফারুক তার খেলাফত আমলে মসজিদে নববির মধ্যে তারাবির নামাজের অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জামাতকে একত্র করে হযরত উবাই ইবনে কাআব এর ইমামতিতে ২০ রাকাত তারাবির নামাযের হুকুম দিয়েছিলেন। আর সকল সাহাবায়ে কেরাম তার সমর্থন করেছিলেন।

২০ রাকাতের কমে তারাবির নামাজ আদায়ের কোনো সুযোগ আছে কী না?

বিশ রাকাতের কমে তারাবির নামাজের কোনো সুযোগ নেই। তারাবির নামায যদি রাসুল সা. থেকে ২০ রাকাত প্রমাণিত না হতো তাহলে সাহাবায়ে কেরাম অবশ্যই আপত্তি তুলতেন। এ বিষয়ে অনেক বর্ণনা আছে। যার আলোচনা বড় বড় মুহাদ্দিসগণ বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

(বায়হাকি সুনানে কুবরা, ২/৪৯৭, হাদিস নং-৪৬১৭,৪৬২০,৪৬২১। আলআহাদিসুল মুখতারাহ মাকদিসি, হাদিস নং-১১৬১। বায়হাকি মারেফাতুস সুনান, ২/৩০৫ (সহিহ)। মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, ৪/২৬১, হাদিস নং-৭৭৩৩,৭৭৩০। মাজমাউ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া, ২৩/১১২-১১৩। ইলাউস সুনান, ৭/৭৪। নববি, আল মাজমু, ৩/৫২৭। আল ইসতিযকার ইবনে আব্দুল বার, ২/৬৮।}

তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান, চতুর্থ খলিফা হযরত আলী সহ সাহাবাযে কেরামের ঐক্যমতে উম্মাতে মুসলিমার ১৪০০ শত বছর পর্যন্ত ধারাবাহিক আমল তারাবির নামায ২০ রাকাত চলে আসছে। যা আজ পর্যন্ত মক্কা শরিফ ও মদিনা শরীফে চালু আছে।

হাদিস সূত্র- তিরমিজি শরিফ, ৩/১৭০। বায়হাকি কুবরা, ২/৪৯৬, হাদিস নং-৪৬১৭। শরহুল মুহাযযাব, ৩/৩৬৩। মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, ২/৩৯৩,৭৭৬৩। কিয়ামল লাইল মারওযাযি পৃঃ ৯০।

বর্তমানে তারাবির সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কে  কিছু বলুন?

বর্তমান যারা বিভ্রান্ত করছে তারা যে দলিল দিচ্ছে মূলত বুখারি শরিফের হাদিস এটা সবার ঐক্যমতের ভিত্তিতে দেখা যায় যে এ সংখ্যাটা তারাবির না বরং তাহাজ্জুদ নামাজের।

তাই হক্কানি আলেমদের আলোচনা শুনার প্রতি উৎসাহ করলে আশা করা যায় মানুষ বিভ্রান্ত থেকে বিরত থাকতে পারবে। আর সর্বপরি কথা হলো যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তারা মানুষকে আমল থেকে দূরে রাখতে চায়। তাদের থেকে আমাদের সাবধান হতে হবে।

‘নামাজের কোনো প্রধান অতিথি হয় না’

চার উপায়ে নামাজে মনোযোগ বাড়ান

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ