সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


এক নজরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের রাজনৈতিক জীবন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাহমুদুল হাসান
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি।

কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত এলাকা মিঠামইন উপজেলার এক নিভৃত পল্লী কামালপুর।দুর্গম সেই এলাকার হতদরিদ্র মানুষের সঙ্গে বেড়ে ওঠেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

মোঃ আবদুল হামিদ-এর রাজনৈতিক জীবনের পথচলা শুরু হয় ১৯৫৯ সালে তৎকালীন ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৬১ সালে কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁকে কারারুদ্ধ করেন।

৯৬৩ সালে তিনি কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৬৫ সালে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি এবং ১৯৬৬-৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন।

ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানের কারণে ১৯৬৮ সালে তিনি কারাবরণ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

মোঃ আবদুল হামিদ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৭১-এর মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে কিশোরগঞ্জে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ মার্চ কিশোরগঞ্জ শহরের রথখোলা মাঠে ছাত্র জনসভায় হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন।

১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে তিনি মেঘালয়ে অবস্থানকারী শরণার্থীদের দেশে প্রত্যাবর্তনে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন ক্যাম্পে সভা করেন। শরণার্থীদের দেশে ফেরা নিশ্চিত করার পর তিনি ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সনে দেশে ফিরে আসেন।

এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৬-৭৮ সালে তৎকালীন সরকারের সময় তিনি কারারুদ্ধ হন। তিনি ১৯৭৮ সাল থেকে ২০০৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পাঁচবার কিশোরগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বপালন করেন।

তিনি ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ-১৮ সংসদ নির্বাচনী এলাকা থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে, ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০০১ সালের পয়লা অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।

মোঃ আবদুল হামিদ সপ্তম জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ১৩ জুলাই ১৯৯৬ থেকে ১০ জুলাই ২০০১ পর্যন্ত এ পদে দায়িত্বপালন করেন। পরবর্তীতে তিনি স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ১২ জুলাই ২০০১ থেকে ২৮ অক্টোবর ২০০১ পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেন। অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি ২০০১ সালের পয়লা নভেম্বর থেকে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।

তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদে তিনি স্পিকার নির্বাচিত হন এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সফলভাবে এ দায়িত্বপালন করেন। নবম জাতীয় সংসদে তিনি কার্য উপদেষ্টা কমিটি, কার্যপ্রণালী-বিধি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি এবং পিটিশন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালে ১৪ মার্চ ২০১৩ থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্বপালন করেন। ২০ মার্চ ২০১৩ তারিখে মোঃ জিল্লুর রহমান মৃত্যুবরণ করলে সেদিন থেকে তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বপালন করেন। ২২ এপ্রিল ২০১৩ তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দি¦তায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২৪ এপ্রিল ২০১৩ বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।

এদিকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেয়াদ ফুরিয়ে আসায় গত ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি। ৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন দাখিলের দিন একমাত্র আবদুল হামিদের মনোনয়নপত্রই জমা পড়ে। জানা যায় আজ ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ‘আজ সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে বঙ্গভবনের দরবার হলে মো. আবদুল হামিদকে শপথবাক্য পাঠ করানো হবে।

এসএস

আরো পড়ুন : আজ দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ