বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৫


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর; সিদ্ধান্ত আজ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রোকন রাইয়ান
আওয়ার ইসলাম

আগামী ১২ জানুয়ারি শুরু হতে যাওয়া টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় দিল্লির নেজামুদ্দীন মারকাজের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভী আসতে পারবেন কিনা এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বিকাল চারটায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি’র সভাপতিত্বে ইজতেমা নিয়ে চলমান সঙ্কট সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে ভারত থেকে ফিরে আসা তাবলিগ জামাতের প্রতিনিধি দলের লিখিত প্রতিবেদন পেশ করেন জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক। লিখিত বক্তব্যে তিনি তিনটি বিষয় উপস্থাপন করেন। এগুলো হলো, ১. মাওলানা সাদের আপত্তির অভিযোগ নিয়ে দারুল উলুম দেওবন্দের স্পষ্ট মতামত।

২. মাওলানা সাদ কান্ধলভীর রুজু এবং এ’লানের বিষয় এবং ৩. গুজরাটের মাওলানা আহমদ লাট ও মাওলানা ইবরাহিম দেওলার লিখিত মতামতও উপস্থাপন।

এছাড়াও পাঁচ সদস্যের সম্মিলিত একটি প্রতিবেদন পেশ করা হয় বৈঠকে। তবে তাদের নিজেদের পরিবেশিত প্রতিবেদনে পরষ্পর অনৈক্য ও মতপার্থক্য দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে প্রায় প্রত্যেকেই আলাদা যুক্তি তুলে ধরেন। যে কারণে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছা সম্ভব হয়নি।

বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তিনজন সচিব, এনএসআই প্রধান, ডিজিএফআই-এর প্রধান, এসবি’র প্রধান, পুলিশ কমিশনারসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

ভারত সফরকারী প্রতিনিধি দল ও আলেমদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তাবলিগ জামাতের শুরা সদস্য মাওলানা যুবায়ের আহমদ, সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার মুহাদ্দিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, কারী মাওলানা যুবায়ের আহমদ ও মাওলানা জিয়া বিন কাসেম।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তাবলিগ জামাতের শুরার আলেম উপদেষ্টা বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সহসভাপতি আল্লামা আশরাফ আলী, জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ীর প্রিন্সিপাল মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান, বেফাকের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস ও মারকাজুদ দাওয়ার আমিনুত তালিম মুফতি আবদুল ‍মালেক।

অসুস্থতার জন্য অপর উপদেষ্টা সদস্য আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি বলে জানা যায়।

এছাড়াও বৈঠকে হাটহাজারী মাদরাসার সহকারী শিক্ষা সচিব মাওলানা আনাস মাদানী, আম্বরশাহ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী প্রমুখ।

বৈঠকে উপস্থাপন করা প্রতিবেদনে যা আছে 

শনিবারের নির্ধারিত বৈঠকে ভারত সফরকারী প্রতিনিধি দল তাদের প্রতিবেদন পেশ করেন। সেখানে দারুল উলুম দেওবন্দ, মাওলানা সাদসহ মাওলানা আহমদ লাট ও মাওলানা ইবরাহিম দেওলার মতামত রয়েছে। যা আওয়ার ইসলামের হাতে এসেছে এবং পর্যায়ক্রমে প্রকাশ হবে ইনশাল্লাহ।

তবে সংক্ষেপে বলা যায়, দারুল উলুম দেওবন্দ মাওলানা সাদের ব্যাপারে তার পূর্বের অবস্থানেই রয়েছে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য দারুল উলুম যে শর্ত দিয়েছিল তা পূরণ না হওয়ায় মাওলানা সাদের ব্যাপারে এখনো সন্তুষ্টি প্রকাশ করেনি।

এদিকে প্রতিনিধি দল গুজরাটের মাওলানা আহমদ লাট ও মাওলানা ইবরাহিম দেওলাসহ অন্যান্যের সঙ্গে বৈঠক করলে তারা জানান, আমাদের মধ্যে পারস্পরিক েঐক্য প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের ইজতেমায় অংশ নেয়া সেখানকার কাজের জন্য কল্যাণকর হবে না বরং ফেতনা আরও বাড়বে।

মাওলানা সাদের কাছে গেলে দেওবন্দের শর্ত মেনে তিনি তালিমের মজলিসে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

প্রতিনিধি দল মাওলানা সাদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, শুরু থেকেই নেজামুদ্দিন থেকে টঙ্গী ইজতেমায় অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতা চলে আসছে। সে ধারাবাহিকতায় এ বছরও বান্দা টঙ্গী ইজতেমায় হাজির হবে ইনশাল্লাহ।

 চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী কাল

এদিকে বৈঠকে উভয়পক্ষের যুক্তি তর্কের পর বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তাবলিগের শুরা সদস্য ও পাঁচ আলেম উপদেষ্টার যৌথ বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত করার পরামর্শ দেন। সে ভিত্তিতে রোববার সকালে জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ীতে বৈঠকে বসবেন তারা।

জানা গেছে, আজকের বৈঠকে আলোচনাধীন বিষয়গুলো চূড়ান্ত করতে কালকের বৈঠকটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে এবারের ইজতেমায় মাওলানা সাদ আসতে পারবেন কিনা।

‘নিজেকে দেওবন্দের অনুসারী বলে প্রচার করতে সংকোচবোধ করি’

ইন্টল করুন গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ