সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


৯০ + বয়সে এসেও যিনি নিত্যনতুন জাতীয় সমস্যা সম্পর্কে আমাদের সচেতন করে চলেছেন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাকিব মুসতানসির
আলেম ও বস্ত্র প্রকৌশলী

অল্প কিছুদিন আগে নেটে সামাজিক যোগাযোগ সাইট ব্যাবহার নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। এক সম্পাদক এই স্ট্যাটাসকে একটা পরিপূর্ণ লেখায় রূপ দিতে বললেন ফলে স্বাভাবিক ভাবেই গুগলের কাছে হাত পাতলাম।

গুগল কাউকেই হতাশ করেনা ফলে আমিও প্রয়োজনীয় প্রচুর তথ্য উপাত্ত পেয়ে গেলাম। সম্পূরক হিসেবে এক্সট্রা আরো কিছু আর্টিকেলে চোখ বুলানোর সুযোগ হলো।

গুগলের এই এক সুবিধা, আপনি চান বা নাচান কাছাকাছি প্রায় সব রেজালটাই আপনাকে দেখাবে। মোবাইল ব্যবহারের খারাপ দিক নিয়ে প্রচুর লেখা গুগলে রয়েছে। একাধিক সাক্ষাতকার, বিশেষজ্ঞ মতামত, মনোবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি, ডাক্তারদের চিন্তা ভাবনা রয়েছে। মোবাইল ম্যানিয়া এখন একটা স্বীকৃত রোগ।

কত বছর বয়স থেকে মোবাইল ব্যাবহার করবে এটা বেশ পুরাতন বিতর্ক, এটা নিয়ে নতুন করে আলোচনার কিচ্ছু নাই। এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে চাইলে একদুইটা বই লিখে ফেলা সম্ভব। এটা এখন দিব্যলোকের মতো স্ফটিক স্বচ্ছ তাই আসুন সময় ব্যয় না করে সামনে আগাই।

আমাদের পারিবারিক কাঠামো সিরিয়াল যতটা নষ্ট করেছে আমাদের বাচ্চাদের তার চেয়ে শতগুণ বেশি নষ্ট করেছে একটা স্মার্ট ফোন। টিভিতে সিরিয়াল একটা নিদৃষ্ট সময়ে হয় আর সাংসারিক নানাবিধ চাপের কারণে অধিকাংশ সময় নিয়মতান্ত্রিক ফলোআপ সম্ভব হয় না। কিন্তু স্মার্টফোন চব্বিশঘণ্টা চালু আছে আমাদের সন্তানদের নষ্ট করতে। করছেও।

প্রতিটা পরিবারে স্মার্টফোন একটা অতংকের নাম। অভিশাপের নাম। অশান্তির নাম। বাবা-মার হতাশা ও কান্নার নাম। বাড়িয়ে বলছি? বিশ্বাস করুন বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি। আপনার বিশ্বাস না হলে আপনার প্রতিবেশীর সাথে কথা বলে দেখুন।

সন্তানকে শিক্ষিত করার অভিপ্রায়ে যে পিতামাতা নিজেদের নিয়োজিত করেছিল আজ তাড়া শুধু মোবাইল মুক্ত তার সন্তানকে ফেরত চায়।

প্রযুক্তি ব্যাবহারের ভালো খারাপ উভয় দিকই আছে কিন্তু বাংলাদেশে মোবাইলের মত বাজে ব্যবহার অন্য কোন প্রযুক্তির হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। ইতিমধ্যে ডাক্তাররা মোবাইল ও ইন্টারনেট আসক্তিকে একটা স্বতন্ত্র রোগ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পিতামাতাকে নানানরকম পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে যার প্রথম পরামর্শই হচ্ছে মোবাইল হাতে না দেয়া।

প্রিয় পাঠক, আপনি মনে করে দেখুনতো শেষ কবে আপনার পরিবারের সাথে বসে লাঞ্চ বা ডিনার করেছেন? বিকেলে চা-মুড়ি খেয়েছেন? সন্ধ্যায় বসে আড্ডা দিয়েছেন? আপনার সবচেয়ে প্রিয়জনের সাথে মোবাইলহীন আধাঘণ্টা কাটিয়েছেন?

একসাথে একটেবিলে বা আড্ডায় হয়তো বসেছেন অনেই কিন্তু কতজন মোবাইল রেখে বাস্তবিকই টেবিলে বা আড্ডায় ছিলেন? আপনার সাথে আড্ডায় বা গল্পে বা পারিবারিক আলাপচারিতায় আপনার ছোট বোন বা ভাই কেন আসে না তার খুঁজ নেয়ার সময় আপনার আছে?

আপনি যেমন মোবাইলে ব্যস্ত তারাও তেমনি সময় কাটাচ্ছেন ইন্টারনেটে। আপনি মানুন আর নাই মানুন এটা সত্য। গায়ের জোরেই বললাম।

আল্লাহ তায়ালা শায়খুল হাদিস আহমাদ শফীর হায়াত আমাদের জন্য আরো বাড়িয়ে দিন। জাতির প্রতিটা সমস্যাই উনি মন থেকে অনুভব করেন বলেই এই ৯০ + বয়সে এসেও প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন জাতীয় সমস্যা সম্পর্কে আমাদের সচেতন করে চলেছেন। এটা আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত আমাদের জন্য।

তেঁতুল তত্ত্ব থেকে মোবাইলিজম!! মারহাবা!


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ