শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


ইসলামি দলের শীর্ষ নেতারা কে কোথায় নির্বাচন করবেন? (২য় পর্ব)

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আতাউর রহমান খসরু : রাজনীতিতে এখন নির্বাচনী উত্তাপ। নির্বাচনি আলোচনায় সরগরম রাজনৈতিক মঞ্চ। সরকার ও সরকার বিরোধী উভয় জোট প্রস্তুত হচ্ছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য। ইতোমধ্যে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নির্বাচনের এ উত্তাপ লেগেছে ইসলামি দলগুলোতেও। জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে নিবন্ধিত ইসলামি দলগুলো। ইসলামি দলের শীর্ষ  নেতৃত্বে থাকা আলেমরাও অংশগ্রহণ করবেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ইসলামি দলগুলোর নির্বাচন প্রস্তুতি ও শীর্ষ নেতাদের নির্বাচনী এলাকার নিয়ে অনুসন্ধান করেছে আওয়ার ইসলাম।

জমিয়তের দাবি ৫০ আসন, চূড়ান্ত লক্ষ্য ২০

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েই নির্বাচন করবে তারা। জোটের কাছে তাদের দাবি ৫০ আসন। সেমতেই প্রস্তুত হচ্ছেন দলের নেতারা। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ৫০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রার্থীও প্রায় চূড়ান্ত।

৫০ আসন দাবি করলেও জমিয়ের চূড়ান্ত লক্ষ্য ২০ আসন বলে জানা গেছে। এসব আসনে জমিয়তের মনোয়নও চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানান সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট শাহীনূর পাশা। অগ্রাধিকার ভিত্তিক এ ২০ আসনে প্রার্থীগণ গণসংযোগও শুরু করেছেন। এসব আসনে সাংগঠনিক কাঠামোও শক্তিশালী বলে তিনি দাবি করেন।

পূর্বের ৫০ আসনের দাবির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘৫০ আসন আমাদের দাবি। আমরা চেষ্টাও করবো জোটের কাছ থেকে দাবি আদায় করতে। আর ২০ আসন আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য।

৫০ আসন বরাদ্দ না দিলে ভিন্ন চিন্তা করবে জমিয়ত

জোটের অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশ না নিলে আপনারা নিবেন কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘সে প্রশ্নের উত্তর এখনি দেয়া যাচ্ছে না। দেশের পরিস্থিতি বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো।

দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে নির্বাহী সভাপতি মুফতী মোহাম্মদ ওয়াক্কাস যশোর-৬, সহ-সভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী হবিগঞ্জ-২, সহ-সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বি বাড়িয়া-২, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজীজ সুনামগঞ্জ-১, সহকারী মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী ময়মনসিং-৫, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আতাউর রহমান সিলেট-৪, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক সিলেট-৬, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী নীলফামারি-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জমিয়তের জয়েন্ট সেক্রেটারি মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১  আসন থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

নির্বাচনী হাওয়া লাগেনি বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনে

মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর মতো ইসলামি রাজনৈতিক দলে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হলেও সে হাওয়া লাগেনি খেলাফত আন্দোলনের পালে। নির্বাচনের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তুতি বা আলোচনা হয়নি দলে। খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী আওয়ার ইসলামকে এমনটিই জানান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয় নি। তবে দলের নির্বাহী কমিটির আগামী বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।’

তিনি আরও জানান, ‘নির্বাহী বৈঠকের পর শুরা বৈঠক। সে বৈঠকেই নির্বাচন বিষয়ে চূড়ান্ত হবে।’

খেলাফত আন্দোলনের বর্তমান আমীর মাওলানা কারী শাহ আতাউল্লাহ বিন হাফেজ্জী আগে কখনো নির্বাচন করেন নি। এবার করবেন কিনা তাও নিশ্চিত নয়। তবে দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী ঢাকা-২ এবং যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বি-বাড়িয়া-৫ বা ঢাকা-৭ থেকে নির্বাচন করতে পারেন।

এছাড়াও ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় খেলাফত আন্দোলনের একাধিক প্রার্থী নির্বাচন করবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বুঝে শুনে এগুতে চায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

ইসলামী ঐক্যজোটের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও এককভাবে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা নেই দলটির। তাই নির্বাচনের ব্যাপারে ধীরে চল নীতি অনুসরণ করে আগাতে চাচ্ছে দলটি। ইতোমধ্যে তৃণমূলে কাছে প্রার্থী প্রস্তাব চেয়েছে কেন্দ্র এবং প্রার্থীদের নামের খসড়া তালিকাও কেন্দ্রে জমা হয়েছে।

তবে নির্বাচনের ব্যাপারে খেলাফত মজলিসের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী তা এখনো জানা যায় নি। দলের নির্বাহী বৈঠক এবং পরবর্তী শুরা বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।

দলের আমির প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবিবুর রহমান সিলেট-৬, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক ঢাকার মুহাম্মদপুর থেকে এবং যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও অপর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন নিজ নিজ এলাকা থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বর্তমানে কোনো জোটে নেই। তাই এককভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তই নিচ্ছে আপাতত। তবে একটি ইসলামি জোট হওয়ার গুঞ্জন চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। বোঝাপড়া ভালো হলে সেটির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে দলটি।

ইসলামি দলের শীর্ষ নেতারা কে কোথায় নির্বাচন করবেন? ১

ফিলিস্তিনকে নিশ্চিহ্ন করতে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর নতুন ষড়যন্ত্র ফাঁস

আরআর


সম্পর্কিত খবর