বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে দেশ: ফখরুল চক্রান্তের ফাঁদে না পড়ে সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণের আহ্বান শায়খ আহমাদুল্লাহর ভোলায় জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও স্মরণসভা চরমোনাইর বার্ষিক অগ্রহায়ণ মাহফিল বুধবার, চলছে সর্বশেষ প্রস্তুতি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান আসিফ মাহমুদের অসহায় শীতার্তের পাশে মাওলানা গাজী ইয়াকুবের তাকওয়া ফাউন্ডেশন দেশের তিন জেলায় শিক্ষক নিচ্ছে ‘আলোকিত মক্তব’ বৃদ্ধার দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবন্ধীদের ধর্মীয় ও কারিগরি শিক্ষা দিতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে: ধর্ম উপদেষ্টা ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র সফল হবে না: মাওলানা আরশাদ মাদানী

স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটির কাছে প্রশ্ন, মান পাচ্ছে কী প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আতাউর রহমান খসরু : চায়ের কাপে ঝড় তুলেছে কওমি সনদের স্বীকৃতি। ঘরে-বাইরে, আলোচনার টেবিলে ও টেলিভিশন টকশোতে সময়ের প্রধান আলোচ্য বিষয় কওমি সনদের স্বীকৃতি। স্বীকৃতি আলোচিত হচ্ছে নানা আঙ্গিকে। স্বীকৃতির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ, লাভ ও ক্ষতি, বাস্তবায়নের রূপরেখা সব কিছুই আলোচনায় আসছে ঘুরে ফিরে। কিন্তু আড়ালেই থেকে যাচ্ছে স্বীকৃতির অতীত ইতিহাস। অনুল্লেখ থেকে যাচ্ছে কওমি অঙ্গণের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও। আর এতেই হতাশা বাড়ছে  প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

কওমি শিক্ষাধারা এদেশের প্রাচীনতম শিক্ষা ব্যবস্থাগুলোর অন্যতম। প্রায় অর্ধ কোটি কওমি শিক্ষা সমাপনকারী কাজ করছে দেশের বিভিন্ন অঙ্গণে। কিন্তু কওমি সনদের সরকারি স্বীকৃতির না থাকায় বা সরকার অনুমোদিত কোনো সার্টির্ফিটেক না থাকায় উপযুক্ত মূল্যায়ন যাচ্ছেন তারা। বঞ্চিত হচ্ছেন প্রাপ্য অধিকার থেকেও। যেমন, বাংলাদেশের প্রথম সারি মিডিয়াতে কাজ করেন একজন কওমি তরুণ আর্টিস্ট। একটি বহুজাতিক কোম্পানি তার কাজ দেখে চাকরি অফার করে। কিন্তু সরকারি কোনো সনদ না থাকায় তার চাকরিটা শেষ পর্যন্ত হয়নি।

ভোটের রাজনীতিতে কওমি স্বীকৃতির ধাক্কা!

স্বীকৃতির বিনিময়ে সমর্থন?’ টকশোতে দুই আলেমের বিশ্লেষণ

একইভাবে কওমি তরুণরা তাদের যোগ্য ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য পেশাভিত্তিক উচ্চতর প্রশিক্ষণগুলোতেও অংশগ্রহণ করতে পারছে না।

সম্প্রতি সরকারি সনদ না থাকায় কল্যাণপুরের একটি সরকারি মসজিদের ইমামতি থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে একজন মধ্য বয়সী কওমি আলেমকে। অথচ তিনি এ মসজিদে দীর্ঘদিন ইমামতি করেছেন বেসরকারি বেতনে।

কর্মক্ষেত্রে ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বাঁধাপ্রাপ্ত এসব প্রাক্তন কওমি শিক্ষার্থীরা আশায় বুক বেঁধে ছিলো স্বীকৃতির ঘোষণায়। তাদের প্রত্যাশা ছিলো কওমি সনদের মান প্রদান ফলে হালে পানি পাবেন তারাও। লাঞ্ছনার হাত থেকে বাঁচবেন এবং কর্মক্ষেত্রে ফিরে পাবেন প্রাপ্য অধিকার ও মর্যাদা।

কিন্তু সদ্য ঘোষিত কওমি সনদের স্বীকৃতির ঘোষণায় তাদের ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য না থাকায় তারা ভুগছেন চরম হতাশা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে। তাদের কেউ কেউ পুনরায় পরীক্ষা দেয়ার কথা চিন্তা করছে।

সম্প্রতি আওয়ার ইসলাম ফেসবুক পেইজ, ফেসবুকগ্রুপ ও আওয়ার ইসলাম সম্পাদকের ফেসবুক লাইভ প্রোগ্রামে বিষয়টি বার বার সামনে এসেছে। প্রাক্তন অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেছে আমাদের সাথে।তাদের দাবী হলো, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করুন এবং তাদের অন্তভূক্তির ব্যাপারে একটি মূলনীতি প্রণীত হোক।

সদ্য ঘোষিত কওমি সনদের স্বীকৃতির ব্যাপারে কথা বলেছিলাম কয়েকজন প্রাক্তন ছাত্রের সঙ্গে। নিম্নে তাদের চিন্তাগুলো তুলে ধরা হলো।

মাওলানা সাঈদ আহমদ। জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রাক্তন ছাত্র ও বর্তমান শিক্ষক। শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রহ. এর নেতৃত্বে পরিচালিত স্বীকৃতি আদায় আন্দোলনে ভূমিকা রেখে আলোচিত হয়েছিলেন তৎকালে। তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ‘স্বীকৃতি তো হলো আপনার সনদের মানের ব্যাপারে কী ভাবছেন এখন? তিনি বলেন, ‘আমি নিজের ব্যাপারে খুব বেশি কিছু ভাবছি না। আমাদের মতো যারা পাঁচ-সাত বছর আগে তাকমিল সম্পন্ন করেছেন তাদের জন্য খুব বেশি কিছু করার সুযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে কিছু করা গেলে তো ভালো। বিশেষত নিকটতম সময়ে যারা ফারেগ হয়েছে। তাদেরকে অন্তর্ভূক্ত করা উচিৎ।’

মাওলানা মিজানুর রহমান। বাড়ি লহ্মীপুর জেলায়। ২০০৬ সালে জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া থেকে তাকমিল সম্পন্ন করেন। স্বীকৃতির বিষয়ে তার ভাবনা তুলে ধরে বলেন, ‘স্বীকৃতির ঘোষণা হওয়ার পর বন্ধু মহলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। আমাদের সনদের মান নিয়ে আমরা চিন্তিত। এখনও বুঝতে পারছি না কী করবো। যদি মান পাওয়া না যায় তবে আমিসহ কয়েকজন পুনরায় পরীক্ষা দেয়ার চিন্তা করছি।

বিষয়টি বিয়ে চিন্তিত ফতেহপুর ইসলামিয়া মাদরাসার নাজেমে তালিমাত মাওলানা ইলিয়াছ জাবের তিনি বলেন, আমি বিষয়টি ভাবছি। আমার মনে হয়, মুরব্বিদের এ বিষয়টি দ্রুত পরিস্কার করা প্রয়োজন। দেশের লাখ লাখ কওমি আলেম তাদের সনদের মান নিয়ে চিন্তিত।

বিষয়টি নিয়ে স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল্লামা আশরাফ আলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘প্রাক্তন ছা্ত্রদের সনদের মান প্রদানের প্রশ্নটি বার বার আমাদের সামনে আসছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবছি। তবে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয় নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সনদের মান দেয়া প্রয়োজন এবং দিলে ভালো হবে। যেহেতু বিষয়টি সম্মিলিত সিদ্ধান্তের ব্যাপার তাই এখনি কিছু বলা যাচ্ছে না।’

সনদের মান প্রদান করলে তা কোন প্রক্রিয়ায় হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আলোচনার মাধ্যমেই বের করতে হবে। মান উন্নয়ন পরীক্ষা বা অন্য কোনো প্রক্রিয়া তাদের অন্তর্ভূক্ত করা  যেতে পারে।’

এআরকে

ইংরেজি শিক্ষকদের চেয়ে মাদরাসা শিক্ষকরা মেধাবী


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ