বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ।। ১৪ মাঘ ১৪৩১ ।। ২৯ রজব ১৪৪৬


মাদরাসার কিতাবের দাম কয়েকগুণ : দেখার কেউ নেই

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাহফুজ বিন হামিদ

বিরল কিতাবের প্রতি গবেষক আলেমদের আকর্ষণ একেবারেই স্বাভাবিক। এক সময় কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের আগ্রহের জায়গা ছিল দুর্লভ কিতাব। যার কাছে যত প্রাচীনতম কপি পাওয়া যেত এবং যে তা পাঠোদ্ধার করে বোঝাতে পারতো সমপর্যায়ের সকলের উপরে থাকত তার অবস্থান।

কিন্তু দিন বদলে গেছে। এখন প্রতিযোগিতা চলছে নস বা মূল গ্রন্থ নিয়ে। যার মূল পাঠ যত মুখস্থ থাকবে অল্প সময়ে নিজ শাস্ত্রে যে ব্যুৎপত্তি লাভ করতে পারবে তার মর্যাদা থাকবে সবার উপরে।

মুদ্রণ শিল্পের বিপ্লব এ পার্থক্য  এনে দিয়েছে।  এখন হাত বাড়ালেই দেখা মেলে ইসলামী জ্ঞান ভান্ডারের বিপুল সমাহার। তাতে আবার লেগে আছে বিখ্যাত গবেষকদের হাতের ছাপ।

তবে এসব ঝকঝকে দৃষ্টিনন্দন কিতাবের দাম হাতে লেখা কিতাবের প্রায় তিন গুণ বেশি। ফলে লাইব্রেরির স্টলে এসব কিতাব শোভা বর্ধন করলেও আয়ত্তের বাইরে মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানদের। আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও উচ্চমূল্যের কারণে উপকৃত হতে পারেন না এসব কিতাব থেকে।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কম্পোজকৃত কিতাবের প্রতি আগ্রহ ছাত্রদের বাড়ছে। হাতে লেখা কিতাবের প্রতি আগ্রহ দিন দিন কমে যাচ্ছে। কারণ হিসেবে তারা বলেন, কম্পোজকৃত কিতাবের পাঠ ও পাঠোদ্ধার সহজ এবং টিকা টিপ্পনীতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো সহজেই দৃষ্টিগোচর হয়। অপরদিকে হাতে লেখা কিতাবের অস্পষ্ট টিকা খুঁজতে অনেক সময় লেগে যায়।

 

তারা অভিযোগ করে বলেন, এক্ষেত্রে প্রকাশকরাই মূল হর্তাকর্তা। একই মানের কাগজ একই কোয়ালিটির বাঁধাই সত্ত্বেও শুধু আরবি হওয়ার কারণে এর দাম নেওয়া হয় দুই থেকে তিন গুণ বেশি।

উদাহারণ টেনে বলেন, যেখানে দাওরা হাদিসের হাতে লেখা কিতাব সবগুলো কেনা যায় ১০ থেকে ১১ হাজার টাকায় সেখানে কম্পোজকৃত কিতাব কেনার জন্য গুনতে হয় ৩৪ হাজার টাকা!

তবে, প্রকাশক শ্রেণী এ অভিযোগ মানতে নারাজ। মোল্লার ঘর ডট কম এর স্বত্বাধিকারী মাহমুদ জাফর বলেন, শিক্ষার্থীদের এ অভিযোগে বাস্তবতার সাথে অল্পই মিল আছে। তিনি বলেন, যেসব প্রকাশক বিদেশী কিতাব প্রকাশ করেন তাদের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের কথা সঠিক। আর যারা নিজেরা কম্পোজ করেন সাথে নতুন কাজও যুক্ত করেন তাদের ব্যাপারে এই অভিযোগ সত্য নয়।

সচেতন বোদ্ধা মহল মনে করেন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডগুলো যদি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে দরসী কিতাবগুলো আধুনিকায়নে  ভূমিকা রাখেন, সহনীয় পর্যায়ে একটা মূল্য নির্ধারণ করেন তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ হবে। কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে, দরসি কিতাবের দাম কয়েকগুণ বেশি কিন্তু দেখার কেউ নেই।

হুআ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ