শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

‘যার লেখা পাঠক সমাজে ব্যাপকভাবে সমাদৃত’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

|| মুফতি ইবরাহীম আল খলীল ||

মুফতি মুতীউর রাহমান রহ.। তিনি দরস-তাদরিসের পাশাপাশি লিখতেন। লিখতেন প্রচুর পরিমাণে। লিখতেন সমসায়িক বিভিন্ন বিষয়ে। জাতীয় দৈনিকে তার লেখালেখির বয়স দুই যুগের বেশি। এই দুই যুগের বেশি সময়ে বাংলাদেশের প্রায় সবকটি দৈনিকেই লিখেছেন। তখনকার সময় তার লেখাগুলো পাঠক সমাজে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। তখন জাতীয় কোন দৈনিকে এসব বিষয়ে লেখা, বাংলা ভাষার ইতিহাসে ছিল প্রায় বিরল।

পাঠকদের ধরে রাখার মতো অসাধারণ ক্ষমতা ছিলো তার। তাই-তো পাঠক মহলে যথেষ্ট সাড়া ফেলে। অনেকের ভুয়সী প্রশংসাও কুড়িছেন। কারণ তখনকার সময় সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়েই তিনি বেশি কলম ধরতেন। অনেক বিষয়ের খুটিনাটি তাহকিক বের করে নিয়ে আসতেন ইসলামি ফিকহ থেকে।

তার লেখার আলাদা একটা পাঠক শ্রেণী তৈরি হয়ে যায়। কারণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি লিখতেন। এমন অনেক বিষয়ে তিনি লিখেছেন , যেসব বিষয়ে আমাদের জাতীয় দৈনিকে আলেম সমাজ পূর্বে কখনো কলম ধরেননি। লিখেননি। সাধারন মানুষ ধারনাও করতে পারেননি যে, এসব বিষয়েও ইসলামের বিধান ও দিক-নির্দেশনা রয়েছে। তখনকার সময়ে পাঠক সমাজে তার বহুল সমাদৃত কয়েকটি লেখা হল –
১. ডি, এন, এ টেষ্টের ইসলামিক ভিত্তি, 
২. ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ইসলামের বিধান,
৩. ইসলামের দৃষ্টিতে রিমান্ড নির্যাতন, 
৪. টেলিফোনে বিয়ে, 
৫. ইসলামের দৃষ্টিতে অঙ্গ সংযোজন,
৬. ইসেলামের দৃষ্টিতে পোষ্ট মর্টেম, ইত্যাদি

এরকম আরো অনেক বিষয় পাঠক মহলে অভাবিত সাড়া জাগায়। যা উল্লেখ করলে লেখা নাতিদীর্ঘ হয়ে যাবে। জাতীয় দৈনিকে তার প্রবন্ধ-নিবন্ধের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে।

তার লেখাগুলো এ দেশের আলেম, সাধারণ ও জেনারেল শ্রেণিকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে। তার বিশ্লেষণধর্মী লেখাগুলো পেয়েছে অসামান্য পাঠক প্রিয়তা। সংখ্যায় বেশি না হলেও তার রচিত গ্রন্থগুলোও সমান জনপ্রিয়।

দুর্লভ প্রতিভার অধিকারী সৃষ্টিশীল সাহিত্য জগতের জাদুকর কর্মকাণ্ডের মধ্যমে তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠেছিলেন। তার লেখার মূল উপকরণের সাথে সহজ ও সাবলীল ভাষায় প্রচলিত ধ্যান-ধারণা, আবেগ, ভালোবাসা, আনন্দ-বেদনাকে ইসলামি দৃষ্টিভংঙ্গিতে রূপায়ণ করেছেন।

জীবনের বাস্তবতা, সামাজিক জীবনের ভেতরের জটিলতাকে নিজস্ব ভাষা ও ভঙ্গিতে উপস্থাপন করতেন তিনি। লেখায় কল্পনার বাস্তবতাকে ছাড়িয়ে নিঁখুত জীবন শৈলীর রূপায়ণ ঘটাতেন। নিজের রচনাকে জনপ্রিয় করে তোলার কলা-কৌশল বেশ ভালোভাবেই রপ্ত করেছিলেন।

শুধু প্রবন্ধ আর রচনাতে নয়, গল্প ও কবিতাতেও বহুমাত্রিকতার সম্ভাবনা দেখেছেন মুফতি মুতীউর রাহমান রহ.। তার শিক্ষনীয় বেশ কটি গল্প পড়ার সুযোগ হয়েছে আমার। সাথে নবীপ্রেমের অমর কবিতাও। তার অপ্রকাশিত গল্প কবিতাগুলোও বাংলা সাহিত্যে নতুন মাত্রা যোগ করে।

২০১৭ সালের আগষ্টের মাঝামাঝি সময়ে দীর্ঘ দিন যাবন অসুস্থতায় ভোগে এই জগতের সব মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যান এ গুণী সাহিত্যিক আলেমেদ্বীন। যে ভূবনে তিনি প্রবেশ করেছেন তা থেকে ফেরার কোন সম্ভাবনা নেই । তবুও তার প্রতিভার স্পর্শে ও সৃষ্টিশীল মনন ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মাঝে সমাদৃত থাকবেন শতাব্দীর পর শতাব্দী। তিনি স্বতন্ত্র মহিমায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম বেঁচে থাকবেন এ বাংলায়। প্রতিটি ইসলাম প্রিয় পাঠকের হৃদয়ে।

লেখক: শিক্ষক , মাদরাসা আশরাফুল মাদারিস তেজগাঁও ঢাকা

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ