শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫ ।। ১৩ চৈত্র ১৪৩১ ।। ২৮ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
রওজাতুল জান্নাত মহিলা মাদরাসার ৫০ জন মেধাতালিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত নূরুল করীম আকরাম লোহিত সাগরে পর্যটকবাহী সাবমেরিন ডুবে নিহত ৬ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে বেফাকে সর্ব শীর্ষে জামিআ রাব্বানিয়া  বেফাকে মাদরাসা আয়েশা সিদ্দীকা রা. ঢালকানগর’র সাফল্য মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পে জনবল নিয়োগে আউটসোর্সিং বাতিল   ফযীলতে ১ম স্থানসহ ঢালকানগর মাদরাসা বাইতুল উলুমের ঈর্ষণীয় সাফল্য ফযীলতে মেধাস্থান ২য়-৩য়সহ জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া ঢাকার ঈর্ষণীয় সাফল্য ইবতিদাইয়ায় (প্রাইমারি) মেধাতালিকায় শীর্ষে যেসব মাদরাসা মুতাওয়াসসিতায় (নিম্ন মাধ্যমিক) মেধাতালিকায় শীর্ষে যেসব মাদরাসা

গাজায় গণহত্যা ও ভারত মুসলমানদের ওপর নিপীড়নের প্রতিবাদে ইমাম পরিষদের মানববন্ধন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা, নির্বিচারে শিশু-নারী হত্যাকাণ্ড এবং ভারতে মুসলমানদের ওপর ক্রমাগত নিপীড়ন ও সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে জাতীয় ইমাম পরিষদ বাংলাদেশের উদ্যোগে ইমাম পরিষদের সভাপতি মুফতি আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়ার সভাপতিত্বে আজ ২০ মার্চ বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবীদ, আলেম-উলামা, ইমাম, খতিব ও ধর্মপ্রাণ জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন।

সভাপতির ভাষণে মুফতি আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়া বলেন,গাজায় মুসলিম গণহত্যা ও ভারতে মুসলমানদের ওপর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নির্যাতন মানবতার চরম লঙ্ঘন। দুঃখজনকভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হচ্ছে, বরং পরোক্ষভাবে জালিমদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে।

 তিনি আরও বলেন, গাজায় রক্তগঙ্গা বইছে, একদিকে মসজিদ ধ্বংস করা হচ্ছে, অন্যদিকে ভারতের মুসলমানরা জুলুম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে এত বড় ষড়যন্ত্র চললেও বিশ্ব শক্তিগুলো নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, যা তাদের চরমভাবে ব্যথিত ও বিক্ষুব্ধ করেছে। তারা বলেন, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরায়েলি বাহিনী বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, যা মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ।

ইমাম পরিষদের মহাসচিব মুফতি আ ফ ম আকরাম হুসাইন বলেন, ‘গাজায় যা হচ্ছে, তা শুধু ফিলিস্তিনের মুসলমানদের বিরুদ্ধে নয়, বরং এটি ইসলাম ও মানবতার বিরুদ্ধে সুগভীর ষড়যন্ত্র। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং বিশ্ব মুসলিম নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে, ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতা বন্ধে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

 তিনি আরো বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির মাঝেও হামলা চালিয়ে ইসরায়েল প্রমাণ করছে, তারা মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’

মাওলানা এনামুল হক মুসা বলেন, ‘গাজায় রক্ত ঝরছে, ভারতে মুসলমানদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অথচ মুসলিম বিশ্ব নীরব! আমাদের এই নীরবতা আত্মঘাতী হতে পারে।’

মাওলানা আতাউর রহমান আতিকি বলেন, ‘মুসলিম উম্মাহর ঐক্যই এখন সবচেয়ে জরুরি। আমরা শুধু নিন্দা ও প্রতিবাদ করেই থামতে চাই না, বরং মুসলিম বিশ্বের নেতাদের কার্যকর ভূমিকা পালনের দাবি জানাই।’

মুফতি আব্দুল্লাহ ইদ্রিস বলেন, ‘ইসরায়েল শুধু যুদ্ধ করছে না, বরং তারা পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনের অস্তিত্ব ধ্বংস করতে চাইছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং আন্তর্জাতিক আদালতে যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি করছি।’[

মুফতি মুহাম্মদুল্লাহ নোমানী বলেন, ‘গাজায় হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, অথচ মানবাধিকারের দাবিদার বিশ্বশক্তিগুলো চোখ বন্ধ করে রেখেছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা প্রমাণ করে, তারা শান্তির নামে ধোঁকা দিচ্ছে। এ হত্যাযজ্ঞের বিচার হতে হবে।’

মুফতি আমানুল্লাহ বসন্তপুরী বলেন, ‘গাজায় শিশু, নারী ও নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে ইসরায়েল মানবতার সব সীমা অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে, ভারতে মুসলমানদের ওপর চলমান নির্যাতন প্রমাণ করে, ইসলামবিরোধী শক্তিগুলো পরিকল্পিতভাবে মুসলিম উম্মাহকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিতে চায়। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ব মুসলিম নেতাদের উচিত অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।’

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মসজিদ থেকে ইসরায়েলের গণহত্যা ও ভারতের মুসলমানদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। ইসরায়েলি ও ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, জুলুম ও নিপীড়নের অর্থনৈতিক ভিত্তি দুর্বল করাই মুসলিম উম্মাহর অন্যতম করণীয়। তাই আমরা মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন ইসরায়েল ও ভারতের সব পণ্য বয়কট করে এবং তাদের অর্থনৈতিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

মানববন্ধনে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, মুফতি ফারহান নাজিম, মাওলানা কামাল উদ্দীন নোমানী, মাওলানা ইকবাল হুসাইন, মাওলানা মুহসিনুল করীম প্রমুখ।

মানববন্ধন থেকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের বিচার, ভারতের মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিশ্বের মুসলিম নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জোরালো দাবি জানানো হয়।

মুফতি সানাউল্লাহ খান

(যুগ্ম মহাসচিব, জাতীয় ইমাম পরিষদ বাংলাদেশ)

নারনা/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ