বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

‘মার্চ ফর গাজায়’ তারুণ্যদীপ্ত নেতৃত্বের প্রকাশ 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাসউদুল কাদির

আমরা ফিলিস্তিনকে ভালোবাসি। গাজাকে ভালোবাসি। গাজার মুসলমানকে ভালবাসি। আল-আকসা আমাদের প্রেমের স্পন্দন। আদতে গাজা নিয়ে আমরা কিছুই করতে পারছি না। কিছু স্লোগান, ছড়া আবৃত্তি, কবিতা লেখা, ছোট ছোট প্রবন্ধ লেখা আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুংকার দেয়া- আমাদের কাজ। বলতে পারেন আমরা একদল কী-বোর্ড মুজাহিদ। 

আসলেই কি আমাদের কিছু করার নেই! কোরআন তো বেঈমান কুফরি শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানায়। আমরা দাঁড়াতে চাই, কোথায় দাঁড়াই। যারা আফগানিস্তানে, আফ্রিকায় কাশ্মীরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অত্যাচারী কুফরি শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে আমরা বারবার তাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছি। আঙুল তুলেছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করেছি। অন্যান্য পুঁজিবাদী নেতৃত্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জুমহুরিয়াত প্রতিষ্ঠা করেছি। 

সত্যিকার অর্থে কোরআন যা বলছে, হাদিস যা বলছে, আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন, সে অনুযায়ী আমরা আমল করতে পারছি না। এটা স্পষ্টই, আমাদের কুতাহি- ত্রুটি, দুর্বলতা। জয় হুবল বললে, একবার শুনতে পেলে এমন স্লোগান -আমাকে আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে সত্য উচ্চারণ করা উচিত। 

এদিক থেকে মার্চ ফর গাজা তারুণ্যদীপ্ত নেতৃত্বের বলিষ্ঠ একটি কণ্ঠস্বর। পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বাঙালি বাংলাদেশি মুসলমানদের মধ্যে বড় একটি প্রশ্ন রেখে গিয়েছে ‘মার্চ ফর গাজা’। কারণ আহ্বান ছিল একান্তই তারুণ্যদীপ্ত আলেম শ্রেণির। 
এখানে শীর্ষ নেতৃত্ব বলতে কিছু ছিল না। রাজধানীর বাইরে থেকেও কোন আহ্বান ছিল না। স্বতঃস্ফূর্তভাবে সবাই সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ‘মার্চ ফর গাজাকে’ অভিবাদন জানিয়েছে, স্বাগত জানিয়েছে। এটা খুবই ভালো একটি কাজ ছিল। কুফরি শক্তি যেমন একত্র হয়ে গিয়েছে মুসলমানদের একত্র হওয়ার এই বিশাল সমাবেশ উপহার দেওয়া সময়ের বড় দাবি ছিল।

ভারতে যেমন প্রতিনিয়ত মুসলমানরা নির্যাতিত, জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ওয়াকফ বিলের নামে মুসলমানদের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে, এমন অবস্থায় ‘মার্চ ফর গাজা’ বাংলাদেশের এই গণজমায়ে ভারতের মুসলমানদেরকেও প্রাণিত করেছে। ভারতের কুচক্রি মহলের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। 

কূটনৈতিকভাবে যদি মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানদের, সম্রাটদের, রাজা বাদশাদের নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান করা যায় - তাহলে হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনা সম্ভব। পৃথিবীজুড়ে বিচ্ছিন্ন মানসিকতাই মুসলমানদেরকে নিগৃহীত করছে। কোনোভাবেই মুসলমানদের পাশে মুসলমানগণ দাঁড়াচ্ছে না। মুসলমান তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবার মন্ত্র সম্পর্কেও অজ্ঞাত।
 
সাধারণ মুসলমানদেরকে তাদের সম্মুখে কী কী কাজ রয়েছে তা বাতলে দেওয়া প্রয়োজন বোধ করছি। 

‘মার্চ ফর গাজার’ নামে তারুণ্যদীপ্ত যে নেতৃত্বের সূচনা হয়েছে তা খুবই আশাব্যঞ্জক। তরুণ নেতৃত্বের সঙ্গে শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম যেভাবে সহযোগিতা করেছেন- তা অবশ্যই একটি ইতিহাস। আমরা যদি এই ভালোবাসামাখা পথচলা ধরে রাখতে পারি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ কোনো বিষয়ই নয়। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের তাওফিক দিন। আমিন।

লেখক: আলেম সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ