|| কবি মুহিব খান ||
পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের বাংলা নববর্ষ। এর জাতীয় গুরুত্ব ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য অনেক। তবে এটিকে আল্লাহর ইবাদত নামাজ রোজার সঙ্গে তুলনা করা বা সমরেখায় উল্লেখ করা সম্পূর্ণ অনুচিত এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অপরাধ। আমরা সংস্কৃতি উপদেষ্টার এহেন অজ্ঞতাপ্রসূত মন্তব্যের গঠনমূলক প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এবারের পহেলা বৈশাখ বা নববর্ষ উদযাপন খাঁটি বাঙালি ও দেশীয় সংস্কৃতির আদলের বাইরে যেন না হয় এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ধর্ম-বর্ণ ও রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে বাঙালির এই সর্বজনীন উৎসবটিকে তিলক ঢোলক রাখিবন্ধন ও মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মত ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতি এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো অন্ধকার যুগের কুসংস্কার থেকে মুক্ত রাখার কঠোর দাবি জানাচ্ছি। বাঙালির একান্ত নিজস্ব সংস্কৃতির এ দিনটিতে ঢাকাসহ সারাদেশে হিন্দি ইংরেজি তথা বিদেশী ভাষার সংগীতায়োজন ও পশ্চিমা আদলের কনসার্ট নিষিদ্ধ করারও জোর দাবী জানাচ্ছি।
বিশেষ করে এই বাংলাদেশের মানুষ ভাষায় প্রায় শতভাগ বাঙালি, দেশ-পরিচয়ে বাংলাদেশী এবং বিশ্বাস ও চেতনার পরিচয়ে প্রায় শতভাগ মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও বিগত বছরগুলোতে কিছু বিশেষ কুচক্রী মহল এই সর্বজনীন উৎসবটিকে একটি বিশেষ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আচার ও বিজাতীয় সংস্কৃতির কালোছায়ায় ঢেকে দেয়ার ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছিল। বাঙালির প্রাণের নববর্ষকে এই বিশেষায়িত গভীর চক্রান্ত থেকে বের করে আনার জন্য সরকারকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
অন্যথায় ধর্মপ্রাণ দেশপ্রেমিক বাংলাদেশী বাঙালি মুসলমানরা একে শক্ত হাতে প্রতিরোধ করবে। বিজাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধ হোক। বাঙালির প্রাণের নববর্ষ আবার সুন্দর ও সর্বজনীন হয়ে উঠুক, এই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখক : সভাপতি, জাতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
এমএম/