পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ আজ রবিবার ( ২ মার্চ) এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, জীবনের সর্বত্র রমজানের শিক্ষা প্রতিফলিত হোক, তবেই আমাদের জীবনে রমজানের আগমন স্বার্থক হবে।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাজীলের মাস রমজান। আর এই কুরআন হলো মানুষের মুক্তির একমাত্র গ্যারান্টি। এই মাসে আমাদেরকে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, এর মর্ম অনুধাবন এবং জীবনের সর্বত্র কুরআনের আদেশ-নিষেধ বাস্তবায়নের জন্য দ্যর্থহীন শপথে আবদ্ধ হতে হবে।
তাঁরা বলেন, মহান আল্লাহ নিজেই বলেছেন,
"রোজার মাস, এমন একটি মাস, যাতে কোরআন নাজিল করা হয়েছে, আর এ কোরআন হচ্ছে মানবজাতির জন্য পথের দিশা, সৎ পথের সুস্পষ্ট নিদর্শন এবং হক ও বাতিলের পার্থক্যকারী। অতএব তোমাদের মধ্যে যে এ মাসটি পাবে, সে যেন রোজা রাখে। " (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৫)
নেতৃদ্বয় বলেন, রমজান হলো তাক্বওয়া ও সংযম অর্জনের মাস। একজন মুমিন এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত, উত্তম আমল ও সার্বিক কল্যাণ লাভের সুযোগ পায়। এ মাসের প্রতিটি নেক আমল সওয়াবকে অনেক গুণ বৃদ্ধি করে দেয় । এই মাস রহমত, বরকত ও জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তির মাস।
তাঁরা বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য , আমাদের দেশে একশ্রেণির লোক অধিক মুনাফা লাভের আশায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। মানুষের ভোগান্তি বাড়ায়। যা কোনো অবস্থায়ই কাম্য নয়। যারা এই কাজগুলো করেন তারা যে কত বড় অন্যায় ও গুনাহের কাজ করছেন তা তারা কখনো ভেবে দেখেন না।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, যাঁরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় কৃত্রিম সংকট তৈরি করে জনজীবনে ভোগান্তি ও অস্থিরতা তৈরি করছেন, মেহেরবানি করে আপনারা সংযত হোন। এসব অনৈতিক ও গর্হিত কাজ পরিহার করুন।
পাশাপাশি দিনের বেলায় হোটেল-রেস্তোরা বন্ধ রেখে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিন।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, চাল,তেলসহ নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। অসাধু ব্যাবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে সকল নিত্যপণ্যের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার ভিতরে আনুন।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, রমজানে বেশি বেশি দান-সদকা করা উচিত। গরিব আত্মীয়স্বজন, এতিম-অসহায়, বিধবাদের প্রতি সহমর্মীতা দেখানো দরকার । দ্বীনি প্রতিষ্ঠান, সেবা মূলক সংগঠন- সংস্থাগুলোকে সহযোগীতা করা উচিত।
তাঁরা বলেন, এ মাসে মিথ্যা -শটতা, সুদ-ঘুষ , গিবত-অপবাদ, ধোঁকাবাজি-ছলচাতুরী, অশ্লীল-বেহায়াপনা, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই-রাহাজানিসহ যাবতীয় নেতিবাচক গুণাবলী পরিহারের প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
নেতৃদ্বয় দ্বীনদার মুসলমানদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, এই গত রমজানেও এদেশের অসংখ্য আলেম-উলামা, দ্বীনদার মুসলিম, দেশপ্রেমিক নাগরিক জেলবন্দী ছিলেন। পতিত হাসিনা ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগের পতনের মাধ্যমে আজ তারঁা মুক্ত। শাপলা গণহত্যাসহ জুলাই -আগষ্ট বিপ্লবে যাদেঁর শাহাদাৎ ও ত্যাগের বিনিময়ে জাতি আজ মুক্ত হয়েছে আমরা যেন রমজানের প্রতিটি দুআয় তাদেরকে স্মরণ করি।
তাঁরা আরও বলেন, এই মাস মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য এক অপার নিয়ামত। আমরা যেন নিয়ামতের শোকরগুজার হই। হেলায়-অবহেলায় রমজানের এই নিয়ামত যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি।
হাআমা/