ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান বর্বর হামলার মধ্যেই ইসরায়েলকে অস্ত্র দিয়েছে ভারত। গত মে মাসে বোরকাম নামে একটি কার্গো জাহাজে করে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও রকেট পাঠানো হয়েছে বলে কিছু নথিপত্রের তথ্য বলছে। এরপর আরও একটি জাহাজে করে অস্ত্র নেওয়া হয়েছে একই ভুখণ্ডে। আর এসব নৌযান গেছে স্পেনের উপকূল হয়ে। যদিও তারা কোনও কার্গো সেখানে নোঙ্গর করতে দেয়নি।
গত ১৫ মে স্পেন উপকূলে একটি কার্গো জাহাজ নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে। সেটিতে অস্ত্র আছে দাবি করে দেশটির সরকারের কাছে তল্লাশির আবেদন জানায় ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা।একই সঙ্গে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের বামপন্থি সদস্যরা স্পেন সরকারের কাছে জাহাজটি ঠেকানোর আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠায়। সন্দেহভাজন সেই নৌযান দেশটির কার্তাজেনা বন্দরে ভিড়তে চেয়েছিল। কিন্তু নানামূখী সমালোচনা ও তল্লাশির ঝুঁকি এড়াতে সেখানে না গিয়ে সোজা চলে যায় স্লোভেনিয়ার কোপার বন্দরে।
স্পেনের কট্টর-বামপন্থি দল সুমার পার্টির মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, ‘জাহাজটির বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। আমাদের বন্দর এড়িয়ে যাওয়ায় সন্দেহও সত্য প্রমাণিত হয়েছে।’
জাহাজটি সম্পর্কিত কিছু নথি আলজাজিরা দেখেছে। তাতে জানা গেছে যে নৌযানটি অস্ত্রে পূর্ণ ছিল। বোরকাম কার্গোতে পণ্য উঠানো হয়েছিল ভারতের একটি বন্দর থেকে। সেটি নোঙ্গর করার কথা ছিল ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে, যা গাজা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে। মেরিন ট্রেকিং সাইটের তথ্য বলছে, গত ২ এপ্রিল ভারতের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের চেন্নাই থেকে জাহাজটি রওনা হয়।
ইসরায়েলে যাওয়ার জন্য লোহিত সাগর সহজ ও স্বল্প দূরত্বের হলেও হুথিদের হামলার ভয়ে সেই পথ এড়িয়ে যায় কার্গোটি। বিকল্প পথ হিসেবে আফ্রিকা হয়ে অনেক দূর ঘুরে ভুমধ্যসাগরে প্রবেশ করে। জাহাজটিতে পরিবহন করা হয়েছিল অন্তত ২০ টন রকেট ইঞ্জিন, সাড়ে ১২ টন রকেট, যেগুলো বিস্ফোরকে পূর্ণ ছিল। এ ছাড়া দেড় হাজার কেজি বিস্ফোরক উপাদান এবং প্রায় আটশ কেজি কামানের গোলার বিস্ফোরক উপাদান। আর পণ্যগুলো নেওয়া হয় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা কোম্পানিতে।
এর কিছুদিন পর ২১ মে আরেকটি কার্গো জাহাজ স্পেন উপকূলে যায়। সেটিও ভারতের চেন্নাই থেকে রওনা হয়ে ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে ২৭ টন বিস্ফোরক বহনকারী এই নৌযানকেও নিজেদের বন্দরে ভিড়তে দেয়নি স্পেন।
হাআমা/