আগামী বছর যারা হজে যেতে চান তাদের চূড়ান্ত নিবন্ধনের সময় ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বেঁধে দিয়েছে সরকার। যে প্যাকেজের আওতায় হজে যাবেন তার বাকি অর্থ এ সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে তাদের।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, সরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের সোনালী ব্যাংকে এবং বেসরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের সংশ্লিষ্ট এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে এ টাকা জমা দিতে হবে।
হজে যেতে হলে প্রথম ধাপে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ‘প্রাক নিবন্ধন’ করতে হয়। সেটি সম্পন্ন করলে একটি নম্বর দেওয়া হয়। সেই নম্বর হজের জন্য নির্বাচিত হলে তা এসএমএস ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করতে হয়। তারপর প্যাকেজের বাকি টাকা জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন করা যায়। তবে, প্রাথমিক নিবন্ধন চলাকালে কেউ চাইলে প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে পারেন।
বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখার প্রজ্ঞাপনে প্রাথমিক নিবন্ধনকারীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, সৌদি সরকারের রোডম্যাপ অনুসারে ২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রীদের জন্য মিনায় তাঁবু, বাড়ি বা হোটেল ভাড়া নিতে হবে।
এ ছাড়া মোয়াল্লেম ও পরিবহনসহ সেবা নিতে চুক্তি করতে হবে। তাই নির্ধারিত তারিখের মধ্যে অবশ্যই প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে হজযাত্রীদের অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
আগামী বছরের হজযাত্রীদের জন্য ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক নিবন্ধনের সময় বেঁধে দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারি এবং বেসরকারি মাধ্যমে হজের প্রাথমিক ও চূড়ান্ত নিবন্ধনের সময় ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
গত ২৫ অগাস্ট ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ১ সেপ্টেম্বর থেকে হজের নিবন্ধনের সময় শুরু হবে; আর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক নিবন্ধন শেষ করতে হবে।
পরে ওই সময়সীমা কমিয়ে ২৩ অক্টোবর করা হয়। তবে ২৪ অক্টোবর মন্ত্রণালয় জানায়, সময়সীমা ৩০ নভেম্বরই বহাল রাখা হয়েছে। এরপর গেল ২৮ নভেম্বর হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেঁধে দিয়েছিল সরকার, যা পরে বাড়ানো হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ পোর্টালের তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত সরকারি মাধ্যমে হজে যেতে প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন ৪ হাজার ৭৭৮ জন। আর বেসরকারি মাধ্যমে প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন ৭০ হাজার ১৫ জন।
সরকারিভাবে হজে যাওয়ার জন্য গত ৩০ অক্টোবর দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সাধারণ’ প্যাকেজ-১ এর সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয় ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। যারা সাধারণ প্যাকেজ-২ নেবেন, তাদের সর্বনিম্ন খরচ দিতে হবে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা।
এবার খাবারের খরচ হজ প্যাকেজে ধরা হয়নি। সেই হিসেবে আরও ৪০ হাজার টাকা খাবারের জন্য সঙ্গে নিতে হবে। কোরবানি বাবদ ৭৫০ সৌদি রিয়ালও আবশ্যিকভাবে সঙ্গে নিতে হবে। প্যাকেজ-১ এ খরচ কমানো হলেও মক্কা ও মদিনা থেকে অনেকটাই দূরে আবাসনের ব্যবস্থা হয়েছে।
অন্যদিকে, গত ৬ নভেম্বর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ইচ্ছুকদের জন্য ‘সাধারণ’ ও ‘বিশেষ’- দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে হজ এজেন্সির মালিকরা। খাবার খরচ যুক্ত করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ঘোষিত সাধারণ হজ প্যাকেজে ব্যয় ধরা হয় ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয় ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। বেসরকারি হজ প্যাকেজে শুধু কোরবানি বাবদ ৭৫০ রিয়ালের সমপরিমাণ অর্থ সঙ্গে নিতে হবে।
হাআমা/