ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই) বলেছেন, বার বার নেতা পরিবর্তন না করে নীতি ও আদর্শের পরিবর্তন করুন তবেই দেশে ইনসাফ কায়েম হবে। মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে। বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে। আমাদের বার বার জীবন ও রক্ত দিতে হচ্ছে। নেতা পরিবর্তনের মাধ্যমে কখনো শান্তি ও বৈষম্য দূর করা যাবে না।
তিনি বলেন, দেশ বর্তমানে যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চলছে তাছে গরীব কোনদিন ধনী হবে না বরং ধনী আরো বড়লোক হবে। বাতিল মতাদর্শ বাংলাদেশে চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। কোন মনগড়া ইসলাম চলবে না। মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, আমরা ফেয়ার ও সংখ্যাপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। এ ভাবে নির্বাচন হলে দেশে সকল রাজনৈতিক দলের অংশীদারিত্ব থাকবে। ভোটারের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে। তিনি আরো বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ক্ষমতায় আসলে দেশ হবে মুসলমানদের এবং অধিকার হবে সবার। ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজবাড়ীর রেলগেট সংলগ্ন শহীদ স্মৃতি চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী জেলা শাখা আয়োজিত বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে বক্তব্য রাখেন জেলা ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ নেতা আমিনুল ইসলাম। সংগঠনের রাজবাড়ী জেলা সভাপতি মুফতী শামসুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে জেলা নেতৃবৃন্দ, ওলামায়ে কেরাম ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। ছাত্র-জনতার উপর গণহত্যায় জড়িতদের বিচার, হতাহতদের ক্ষতি পুরণ, দুর্নীতিবাজদের বিচার ও নির্বাচন কমিশন পুণর্গঠনসহ ৭ দফা দাবী বাস্তবায়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী জেলা এই গণসমাবেশের আয়োজন করে।
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর বলেন, দেশ স্বধীনের ৫৩ বছর এ দেশের মানুষ বহুবার রক্ত দিয়েছে, আন্দোলন করেছে কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। দেশে ন্যায় বিচার ও ইনসাফ কায়েম হয়নি। নিজে পরিবর্তন হয়ে, দেশ পরিবর্তন করতে হবে। মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, এই ভুখন্ড মুসলমানরা শাসন করেছে। কিন্তু কিছু মুনাফেকদের কারণে আমরা পরাজিত হয়েছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সে সময় দিল্লীর ষড়যন্ত্রে ৮০ হাজার মাদ্রাসা ধ্বংস করা হয়েছে। আলেমদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে। হাজার হাজার আলেম হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন বৃটিশরা যখন দিল্লী দখল করেছিল, তখন ওলী আওলিয়ারা আন্দোলন করে তাদের এই ভুখন্ড থেকে তাদের বিতাড়িত করেছিল। কিন্তু মুসলমানরা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান পায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হিন্দু জমিদাররা বার বার বাধা দিয়েছিল। তারপরও নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল। যখন রক্ত দিয়ে মুসলমানরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল আর সেই মুসলমানদেরকে বলা হয় সাম্প্রদায়িক। তিনি বলেন, এই উপমহাদেশে ইসলাম প্রচার ও প্রসারে মুসলমানরা রক্ত দিয়ে অবদান রেখেছে।
হাআমা/