আগামী বছর হজযাত্রার খরচ সহনীয় রাখতে বর্ধিত বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে হজ্জ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) হাবের মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার স্বাক্ষরিত চিঠিটি বিমান প্রতিমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে ২০২৪ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণার জন্য হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণের লক্ষে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের সমন্বয়ে একটি সভা আয়োজনের জন্য বিমান মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়। একইসঙ্গে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিমান ভাড়া নির্ধারণে প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে হাব।
এ বিষয়ে হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম গণমাধ্যমকে জানান, আমরা আশা করছি- আগামী বছর সুষ্ঠু , সুশৃঙ্খল ও সুন্দর হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নেবেন। একইসঙ্গে বর্ধিত বিমান ভাড়া কমানোর জন্য কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা শুধু চিঠি দিয়ে বসে থাকবো না বরং সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে দেখা সাক্ষাৎ করে আলাপ-আলোচনা করবো। তাদের বুঝাবো কমানোর যৌক্তিকতা কী? এর সুফল কি হবে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালে বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবতার নিরিখে অনেক বেশি ও অযৌক্তিক ছিল। যে কারণে হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর সর্বমহলে তা গ্রহণযোগ্য হয়নি বরং সমালোচিত হয়েছে। যেহেতু বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে বিমান ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি। এছাড়া এই অতিরিক্ত বিমান ভাড়া এবং হজ প্যাকেজের উচ্চমূল্য নিয়ে হজযাত্রীসহ ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা ২৩ সালে এই অযৌক্তিক বিমান ভাড়া কমানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু হজের একেবারে শেষ সময় চলে আসায় সম্ভব হয়নি। আগামী বছর হজযাত্রীরা যেন স্বস্তির সঙ্গে হজ করতে পারেন এজন্য আগেভাগেই এটি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আশা করছি- সরকার এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, হজ্জ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। পবিত্র হজের সঙ্গে বাংলাদেশের মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি নিবিড়ভাবে জড়িত। বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভীষণ রকমের স্পর্শকাতরও বটে। কেবল হজযাত্রীদের পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীই নয় বাংলাদেশের সকল মুসলিম নাগরিক হজ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে। ২০২৩ সালের হজযাত্রীদের অতিরিক্ত বিমান ভাড়া এবং হজ প্যাকেজের উচ্চ মূল্য নিয়ে হজযাত্রীসহ ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।
২০২৩ সালে বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবতার নিরিখে অনেক বেশি ও অযৌক্তিক ছিল। যে কারণে হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর সর্বমহলে তা গ্রহণযোগ্য হয়নি বরং সমালোচিত হয়েছে। যেহেতু বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে বিমান ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি। আপনার অবলোকনের জন্য বিগত বছরের বিমান ভাড়ার একটি তুলনামূলক চিত্র নিম্নে প্রদান করা হল-
চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ১২ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, মূলত: করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধে জেট ফুয়েলের মূল্য বৃদ্ধি এবং তখন করোনায় বিমানের কিছু আসন খালি রেখে ফ্লাইট পরিচালনার যুক্তি দেখিয়ে। সে প্রেক্ষিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের প্রত্যাশা ছিল- করোনা পরবর্তী বিমান ভাড়া কমবে। কেননা, জেট ফুয়েলের মূল্য বৃদ্ধি পায়নি। সৌদি আরব কোনো নতুন চার্জ আরোপ করেনি। ২০২৩ সালের বিমানের আসন খালি রেখে হজযাত্রী পরিবহন করতে হয়নি। অথচ ২০২৩ সালের হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ২০২২ সালের থেকে ৫৭ হাজার ৭৯৭ টাকা বৃদ্ধি করা হয়।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এই বেশি মূল্যের বিমান ভাড়া এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ অযৌক্তিক ও অসহনীয় মনে করেছেন এবং তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তাই, ২০২৪ সালের বিমান ভাড়া নির্ধারণে উল্লিখিত বিষয়গুলো আমলে নিয়ে ২০২৩ সালের বর্ধিত ভাড়া থেকে কমিয়ে যৌক্তিক ও সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি।