ছয় দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে মরক্কোর সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৯৭ জনে। এ ছাড়া আহত হয়েছে দুই হাজার ৪৭৬ জন। সোমবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।
ভূমিকম্পের ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় পর উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকা মানুষকের খুঁজে বের করতে সময়ের বিপরীতে দৌড়াচ্ছেন।
স্পেন, ব্রিটেন ও কাতারের অনুসন্ধান দলগুলো বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার প্রচেষ্টায় যোগ দিচ্ছে। মারাকেশের ৭২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে শুক্রবার গভীর রাতে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
এদিকে বেঁচে থাকা অনেক মানুষ তৃতীয় রাত বাইরে কাটিয়েছে। কারণ তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে বা অনিরাপদ অবস্থায় রয়েছে।
ভূমিকম্প অঞ্চলের অধিকাংশই দুর্গম। তাই ভূমিকম্পের সম্পূর্ণ প্রভাব এখনো প্রকাশ পায়নি। কর্তৃপক্ষ নিখোঁজদের সংখ্যা সম্পর্কে কোনো অনুমান প্রকাশ করেনি। ভাঙা পাথরে অবরুদ্ধ বা বাধাগ্রস্ত রাস্তাগুলো সবচেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে প্রবেশ করা কঠিন করে তুলেছে।
আদাসিল শহরের কাছে একটি রাস্তায় উদ্ধারকর্মী আয়মান কোয়েত পাথর পরিষ্কারের চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘আরো আরো খারাপ রাস্তা রয়েছে, যেগুলো এখনো অবরুদ্ধ এবং আমরা সেগুলোও খোলার চেষ্টা করছি।’
অন্যদিকে সেনাবাহিনীর নিয়মের কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সামরিককর্মী বলেন, ‘মানুষকে জীবিত বের করে আনা কঠিন। কারণ অধিকাংশ দেয়াল ও ছাদ মাটির ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।’
এ ছাড়াও মরক্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ক্ষতি ধীরে ধীরে উঠে আসছে।
ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়া স্থান মারাকেশ ওল্ড সিটির ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পটি কেন্দ্রের কাছাকাছি একটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ১২ শতকের টিনমেল মসজিদেরও বড় ক্ষতি করেছে বলে জানা গেছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, ১৯৬০ সাল থেকে এটি উত্তর আফ্রিকার দেশটির সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প ছিল। সে সময় একটি কম্পনে কমপক্ষে ১২ হাজার লোক মারা গিয়েছিল বলে অনুমান করা হয়েছিল। পাশাপাশি অন্তত ১৯০০ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প এটি। সূত্র : রয়টার্স
কেএল/