যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় আপার ডার্বি মসজিদের বাইরে গাড়ি পার্কিংয়ের সময় বন্দুকধারীর হামলায় এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম মাহবুব রহমান (৬৫)। রোববার গাড়ি ছিনতাইকারীর হাতে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।
মসজিদের মুসল্লিরা সিবিএস ফিলাডেলফিয়াকে জানিয়েছেন, ২০১ দক্ষিণ, ৬৯তম স্ট্রিটে অবস্থিত আপার ডার্বি ইসলামিক সেন্টার ওরফে মসজিদ আল মদিনার পিছনের পার্কিং লটে গুলি চালানো হয়। ইসলামিক সেন্টারের সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক।
নিহত মাহবুব রহমান দীর্ঘদিন ধরে ফিলাডেলফিয়ার বাসিন্দা। তিনি হোমসবার্গের রিভারসাইড সংশোধনী সুবিধার একজন সংশোধন কর্মকর্তাও ছিলেন বলে জানিয়েছে সিবিএস নিউজ।
স্থানীয় জেলা পরিষদ ৩৩-এর সভাপতি ডেভিড রবিনসন বলেন, ‘শান্তশিষ্ট, মহান একজন ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। তিনিও কোন বিষয়ে কখনো অভিযোগ করেননি। অথচ কি ভাগ্য, এমন একজনের সঙ্গেই দুর্ঘটনাটি ঘটলো।’
আপার ডার্বি পুলিশ মামলায় আগ্রহী একজন ব্যক্তির সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে। গোয়েন্দারা এই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে পরনের পোশাক দেখে দ্রুত সনাক্ত করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, কেউ একজন গুলি চালানোর শব্দ শুনে রোববার সন্ধ্যায় ৯১১ নম্বরে ফোন করেছিল। প্রাথমিক তদন্তের পর, পুলিশ মসজিদ থেকে রাস্তার ওপারে ওয়েন্ডির প্রতিক্রিয়া জানায় এবং অপরাধের প্রকৃত দৃশ্যটি সনাক্ত করতে দেরি হয়। অবশেষে যখন তারা গুলি চালানোর জায়গাটি খুঁজে বের করে, তখন পুলিশ দেখতে পায় মাহবুব রহমানের বুকে গুলির ক্ষত রয়েছে। ঘটনাস্থলেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
গোয়েন্দাদের ধারণা, তিনি গাড়ি ছিনতাইয়ের শিকার। ঘটনার দিন তিনি এশার নামাজ পড়তে এসেছিলেন।’
আপার ডার্বি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সুপারিনটেনডেন্ট টিমোথি বার্নহার্ড বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এর জন্য দায়ী সে একজন কাপুরুষ, প্রতিটি সম্ভাব্য শব্দে একজন কাপুরুষ যাকে আপনি কাপুরুষ বলে বর্ণনা করতে পারেন। রহমানকে গুলি না করেই সে গাড়ি ছিনতাই করে পালিয়ে যেতে পারত, কিন্তু সে তা করেনি। তাকে হত্যা করে পালিয়েছে সে।’
মুসল্লিদের মতে, রহমান তার গাড়ির চাবি দিতে অস্বীকার করেছিলেন। এ কারণেই হয়তো তাকে গুলি করা হতে পারে। কিন্তু বার্নহার্ড তা নিশ্চিত করতে পারেননি। কেননা গুলি চালানোর সময় অন্য কোনো প্রত্যক্ষদর্শীও ছিল না।
রহমানের চুরি করা টয়োটা আরএভি৪ মডেলের গাড়িটি সন্দেহভাজন ব্যক্তি ফেলে রেখে পালিয়ে যায় এবং পশ্চিম ফিলাডেলফিয়ার সেসিল স্ট্রিট থেকে পুলিশ সেটি পরে উদ্ধার করে।
জানা গেছে নিহত মাহবুব রহমানের বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইলে। তিনি ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। ফিলাডেলফিয়া মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার (মুনা) সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। পারিবারিক জীবনে তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ২০১৫ সালে তার আরেক মেয়ে মারা গেছে।
এনএ/