দেশে ই-কমার্স বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যখন যা কিছু দরকার তখন তা খুব সহজেই অনলাইনে পাওয়া যায়। কেনাকাটা করতে এখন অনেকেই রোদ কিংবা ভিড়ের মধ্যে যেতে চান না। তবে অনলাইনে শপিংয়ের সুযোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে প্রতারণার ঘটনাও।
সরাসরি পণ্য যাচাই-বাছাই করার সুযোগ না থাকায়, কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি কাঙ্ক্ষিত পণ্য সরবরাহ না করে, নিম্নমানের পণ্য সরবরাহসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। ফলে অনেকেই অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছেন। দেখা যায় ছবির সঙ্গে বাস্তবের পণ্য মিলে না, আবার কখনো অগ্রিম টাকা দেওয়ার পরও পণ্য হাতে পান না অনেকেই। এতে অনলাইন কেনাকাটায় ঝুঁকিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। তাহলে এড়াতে পারবেন প্রতারণা।
পেজের রিভিউ অপশন না থাকা পেজ থেকে কখনোই অর্ডার করবেন না। অনলাইনে যে পণ্যটি পছন্দ করেছেন, বিজ্ঞাপনের ছবি ছাড়াও পণ্যটির রিয়েল ছবি চাইতে পারেন। প্রতিষ্ঠানটির রিটার্ন এবং রিফান্ড পলিসি আছে কি-না, থাকলে সেটা কেমন এবং গ্রাহকবান্ধব কি-না, সেটা যাচাই করুন।
ফেসবুকে কেনাকাটায় প্রতারণার ঘটনাগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সেই পেইজগুলো নতুন করে তৈরি করা। আনকোরা কোন পেইজ থেকে অর্ডার করার আগে সেটি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিন। দেখুন, পেইজটিতে প্রোডাক্ট নিয়ে ফেসবুক লাইভ হচ্ছে কি-না। পেইজটিতে যেসব পোস্ট বুস্ট করা হয়েছে, সেগুলোর তুলনায় অন্য পোস্টগুলোতে লাইক-কমেন্ট অস্বাভাবিক কম থাকলে সতর্ক হোন।
প্রতিষ্ঠিত অনলাইন পেইজ না হলে অগ্রিম পেমেন্ট না করাই ভালো। পোশাকের ডিজাইন একই হলেও মেটেরিয়ালে হেরফের থাকতে পারে। ঠিক তেমনই কসমেটিক্স, ঘড়ি ইত্যাদি ভালো ব্র্র্যান্ডের জিনিসের রেপ্লিকাও এখন বাজারে আছে। তাই যেসব ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেইজ ক্রেতার কাছ থেকে অগ্রিম টাকা আবদার করেন, সেখান থেকে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। ক্যাশ-অন ডেলিভারিতে পণ্য ক্রয় করলে অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। এতে করে আপনি পণ্য দেখে শুনে সব ঠিক থাকলে তবেই টাকা ডেলিভারি ম্যানের হাতে দিয়ে দিতে পারবেন।
কেনাকাটার সময় বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার, অর্থ পরিশোধ ও অর্ডার কনফার্ম সংক্রান্ত স্ক্রিনশট, চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতারণা বুঝতে পারার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট প্রমাণাদিসহ দ্রুত নিকটস্থ থানায় জিডি/অভিযোগ করতে হবে। অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারিত হওয়ার পর অনেকেই কোনো অভিযোগ দায়ের করেন না। অভিযোগ না করার ফলে প্রতারকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে বারংবার প্রতারণা করে যাচ্ছে। তাই ক্রেতাকে নিজের অধিকারের ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন হতে হবে।
এনএ/