সম্প্রতি শিশু-কিশোরদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের কুফল নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু চিকিৎসক ও শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ। কিশোরকিশোরীদের মধ্যে মানসিক সমস্যা এবং তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের মধ্যে যে একটা সম্পর্ক আছে তার অনেক প্রমাণ পেয়েছেন ব্রিটেনের চিকিৎসক রঙ্গন চ্যাটার্জী।
তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই এটা একটা বড় সমস্যা এবং এ ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন থাকা দরকার।
একদল মার্কিন শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ সম্প্রতি ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের কাছে একটি চিঠি লিখেন। এতে তারা `মেসেঞ্জার কিডস` নামে বাচ্চাদের মেসেজিং অ্যাপটি বন্ধ করে দেবার আহ্বান জানান। তারা বলেন, ১৩ বছরের কম বয়সীদেরকে এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে উৎসাহিত করাটা দায়িত্বজ্ঞানহীন। তারা বলেন, তারা তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন যে সামাজিক মাধ্যমের কারণে কিশোরকিশোরীদের মানসিকতায় অস্বাভাবিক সব পরিবর্তন হচ্ছে, ১০ বছরের মেয়েও তার দৈহিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছে।
ডাক্তার রঙ্গন চ্যাটার্জী বলছেন, তিনি একবার ১৬ বছরের একটি কিশোরকে রোগী হিসেবে পেয়েছিলেন, যে তার নিজের হাত-পা কাটার পর তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, আমি প্রথমে ভেবেছিলাম তাকে বিষণ্ণতা-রোধী ওষুধ দেবো। কিন্তু আমি তার সঙ্গে কথা বলার পর মনে হলো, সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করায় তার স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
২০১৭ সালে রয়াল সোসাইটি অব পাবলিক হেলথ একটি জরিপ চালায় ১১ থেকে ১৫ বছর বয়স্ক দেড় হাজার কিশোর-কিশোরীর ওপর। এতে দেখা যায় স্ন্যাপচ্যাট এবং ইনস্টাগ্রাম তাদের মনে সবচেয়ে বেশি হীনমন্যতা এবং দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। ১০ জনের মধ্যে ৭ জন বলেছে ইনস্টাগ্রামের কারণে তাদের নিজেদের দেহ নিয়ে মন খারাপ হয়েছে। ১৪ থেকে ১৪ বছর বয়সের তরুণতরুণীদের অর্ধেকই বলেছে ফেসবুকের কারণে তাদের মানসিক দুশ্চিন্তা ও অশান্তি বেড়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা অভিভাবকদের নানা উপায়ে বাচ্চাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর নজর রাখতে ও তা সীমিত করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। ফেসবুক, টুইটার, এ্যাপল এবং স্ন্যাপচ্যাটের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এসব অভিযোগ নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে তারা এ ব্যাপারে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
বিনু/