শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


বেশি শীত লাগে যেসব কারণে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
সংগৃহীত ছবি

হাত-পা যদি সব সময়ই ঠান্ডা হয়ে থাকে, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নারীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বেশি হয়। তাদের শরীরের প্রতি তাদের উদাসীনতার কারণে এটি হতে পারে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ ডট কম জানিয়েছে সব সময় শীত শীত বা ঠান্ডা লাগার কিছু কারণের কথা।

বেশি রুগ্ন শরীর

শরীর বেশি পাতলা হলে এই সমস্যা হতে পারে। ওজন কম থাকা সব সময় শীত শীত ভাব হওয়ার একটি প্রধান কারণ। রুগ্ন বা পাতলা শরীরে ঠান্ডাকে দূরে রাখার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ চর্বি থাকে না। ফলে শরীরে পর্যাপ্ত তাপ উৎপন্ন হয় না। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ তাই সঠিক ওজন বজায় রাখতে হলে প্রোটিন, চর্বি, কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার খেতে হবে।

থাইরয়েডের সমস্যা

সব সময় ঠান্ডা লাগার আরেকটি কারণ হলো থাইরয়েডের সমস্যা। হাইপোথাইরয়েডিজম বলে একটি বিষয় আছে, থাইরয়েড গ্রন্থি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ থাইরয়েড হরমোনের নিঃসরণ না করে, তখন এই সমস্যা হয়। এর ফলে দেহে তাপ উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। হাইপোথাইরয়েডিজমের অন্যান্য লক্ষণ হলো, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, শুষ্ক ত্বক এবং অবসাদ।  

আয়রনের ঘাটতি

আয়রনের ঘাটতি শীত লাগার এই প্রবণতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে। কারণ আয়রন হলো প্রধান মিনারেল যা লোহিত রক্তকণিকাকে দেহে অক্সিজেন বহন করতে সাহায্য করে। শরীরের প্রতিটি জিনিসের পুষ্টি প্রয়োজন। আয়রনের ঘাটতি হলে লোহিত রক্তকণিকা এই কাজ ভালোভাবে করতে পারে না। আয়রনের ঘাটতিতে হাইপোথাইরয়েডিজমও হয়, যা শীত লাগার জন্য দায়ী। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আয়রনের ঘাটতি পূরণে মাংস, ডিম, পুঁইশাক, কচু ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

রক্ত চলাচলে বিঘ্ন  

যদি সব সময় হাত-পা ঠান্ডা থাকে এবং শরীরের অন্যান্য অংশ স্বাভাবিক থাকে, তাহলে এটা রক্ত চলাচলে সমস্যা নির্দেশ করে। কার্ডিওভাসকুলার রোগও এর কারণ হতে পারে। এর মানে হলো হার্ট ভালো করে রক্ত পাম্প করছে না। এ ছাড়া অনেক সময় হাত এবং পায়ের রক্তনালি সরু হয়ে যায়, তখন এই সমস্যা হতে পারে। 

পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া

পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া মস্তিষ্কের স্নায়ু পদ্ধতিতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই পদ্ধতি শরীরের তাপের ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে ঠান্ডা লাগে। 

পানিশূন্যতা

শরীরে তাপের ভারসাম্য ধরে রাখতে সাহায্য করে পানি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, পানি শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে এবং শীত শীত ভাব কমায়। তাই একজন সুস্থ মানুষের দিনে অন্তত আট গ্লাস পানি পান করা উচিত।   

ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতি

শরীরে ভিটামিন বি ১২-এর প্রয়োজন হয় লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন করার জন্য, যা শরীরে অক্সিজেন বহন করে। এর অভাবে এনিমিয়া হতে পরে। লোহিত কণিকা কমে যেতে পারে এবং ঠান্ডা ভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিটামিন বি ১২-এর চাহিদা পূরণে চর্বিহীন মাংস, মাছ, দুগ্ধজাতীয় খাবার খেতে হবে। যদি এর পরও সমস্যা বোধ করেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শারীরিক গঠন

পুরুষদের তুলনায় নারীরা শরীরে তাপ বেশি সংরক্ষণ করতে পারে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, নারীদের শরীর অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। যেমন মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচলের প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। হয়তো হাত বা পায়ে রক্ত চলাচল এতে কমে যায় কিন্তু শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকে। গড়ে নারীদের তুলনায় পুরুষদের হাতের তাপমাত্রা ২.৮ ডিগ্রি শীতল থাকে।  

ডায়াবেটিস হলে

যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকে তাহলে এক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে, যাকে বলা হয় পেরিফিরাল নিউরোপ্যাথি। এটি স্নায়ু পদ্ধতিকে আক্রান্ত করে। হাত ও পায়ে সংবেদনশীলতা তৈরি করে। এর কারণে কখনো কখনো ব্যথা এবং হাত-পায়ে অসাড় অবস্থা তৈরি হতে পারে এবং হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ