লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...’ - এই বাক্যকে তালবিয়া বলা হয়। তালবিয়া পাঠের মধ্য দিয়েই হজ ও ওমরায় প্রবেশের ঘোষণা দেয়া হয়। তাই একে হজ-ওমরার শ্লোগান হিসেবে অভিহিত করা হয়। তালবিয়া পাঠ আল্লাহ তায়ালার তাওহিদ বা একত্ববাদ চর্চার দৃশ্যমান ইবাদত ও আমল।
হজরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তালবিয়াতে স্বর উঁচু করার জন্য জিবরাইল আ. আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ এটি হজের বিশেষ শ্লোগান।’ -(ইবন খুযাইমাহ, ২৬৩০)
ইবনে আবী হাতেম ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন যে—
যখন ইবরাহিম আলাইহিস সালাম-কে হজ ফরজ হওয়ার কথা ঘোষণা করার আদেশ দেয়া হয়, তখন তিনি আল্লাহর কাছে আরজ করলেন, এখানে তো জনমানবহীন প্রান্তর। ঘোষণা শোনার মত কেউ নেই; যেখানে জনবসতি আছে। সেখানে আমার আওয়াজ কিভাবে পৌছবে? জবাবে আল্লাহ তায়ালা বললেন—
আপনার দায়িত্ব শুধু ঘোষণা করা। বিশ্বে পৌছানোর দায়িত্ব আমার। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম মাকামে ইবরাহীমে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলে আল্লাহ তায়ালা তা উচ্চ করে দেন।
কোন কোন বর্ণনায় আছে, তিনি আবু কুবাইস পাহাড়ে আরোহণ করে দুই কানে আঙ্গুলি রেখে ডানে-বামে এবং পূর্বপশ্চিমে মুখ করে বললেন—
লোক সকল! তোমাদের পালনকর্তা গৃহ নির্মাণ করেছেন এবং তোমাদের উপর এই গৃহের হজ ফরজ করেছেন। তোমরা সবাই পালনকর্তার আদেশ পালন কর।
এই বর্ণনায় আরও বলা হয়েছে যে, ইবরাহিম আলাইহিস সালাম-এর এই আওয়াজ আল্লাহ তায়ালা বিশ্বের কোণে কোণে পৌছে দেন এবং শুধু তখনকার জীবিত মানুষ পর্যন্তই নয়; বরং ভবিষ্যতে কেয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ আগমনকারী ছিল, তাদের প্রত্যেকের কান পর্যন্ত এ আওয়াজ পৌছে দেয়া হয়।
যার যার ভাগ্যে আল্লাহ তায়ালা হজ লিখে দিয়েছেন, তাদের প্রত্যেকেই এই আওয়াজের জবাবে (لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ) এ বলেছে। অর্থাৎ হাজির হওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, ইবরাহিমী আওয়াজের জবাবই হচ্ছে হজে ‘লাব্বাইকা’ বলার আসল ভিত্তি। (তাবারী, ১৪/১৪৪, হাকীম মুস্তাদরাক, ২/৩৮৮)
এনএইচ/