জুমার দিন অত্যন্ত বরকতময় একটি দিন। এ দিনকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাইয়েদুল আইয়াম তথা সপ্তাহের শ্রেষ্ঠদিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। সপ্তাহের সবগুলো দিনকে আল্লাহপাক সৃষ্টি করলেও জুমার দিনকে তিনি নেতৃত্বদানকারী দিন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, "পৃথিবীতে যতদিন সূর্য উদিত হয়েছে আর হবে এ সবদিনের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত দিন হচ্ছে জুমার দিন। কারণ হযরত আদম আ. কে এ দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানোও হয়েছে। যেদিন পৃথিবীর সবকিছু ভেঙ্গে চুরমার করে দেওয়া হবে অর্থাৎ কিয়ামত হবে সে দিনটিও হবে জুমার দিন।" (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ৮৫৪)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলিম জাতির জন্য এ জুমার দিনটিকে আল্লাহপাক সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবে নির্বাচন করেছেন। যে ব্যক্তি এ দিনে মসজিদে আসবে, সে যেন গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করে আসে। সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে এবং অবশ্যই তোমরা মিসওয়াক করবে।" (ইবনু মাজাহ, হাদিস নং ১০৯৮)।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "নিশ্চয় জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, সে সময়ে মানুষ যদি রব্বে কারীমের কাছে কোনো কল্যাণ চাইতে পারে, তাহলে তিনি তাকে সেটা অবশ্যই প্রদান করবেন। খালি হাতে ফেরাবেন না।" (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ৮৫২)
জুমার দিনে বিশেষভাবে দোয়া কবুল হওয়া সম্পর্কে দুটি মত পাওয়া যায়। প্রথমত মুসলিম শরিফের বর্ণনায় এসেছে আবু মুসা আশআরি রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ঐ সময়টি হলো, জুমার দিন খতিব সাহেব যখন খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বারে বসেন তখন থেকে নামাজ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ৮৫৩)
দ্বিতীয়ত হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন যে, জুমার দিন আসরের নামাজের পর থেকে সূর্য ডোবা পর্যন্ত তোমরা দোয়ার সময় বেছে নাও। (নাসাঈ শরিফ, হাদিস নং ১৩৮৯) পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে- " হে ঈমানদারগণ! জুমার নামাজ আদায়ের জন্য যখনই তোমাদেরকে (আজানের মাধ্যমে) ডাকা হয়, তখনই আল্লাহর স্মরণপানে দ্রুতবেগে চগুটে যাও এবং ব্যবসা বাণিজ্য বর্জন করো। এটা তোমাদের জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর হবে যদি তোমরা বোঝ।" (সুরাতুল জুমা, ০৯)
আল্লাহ আমাদের সকলকে জুমার দিনের গুরুত্ব অনুধাবন করে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাযসহ জুমার নামায আদায় করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
এনএ/