সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ট্রান্সজেন্ডার; এক অভিশপ্ত সম্প্রদায়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুহাম্মদ আব্দুুল্লাহ খান ||

আদিকাল থেকে পৃথিবীজুড়ে তিন ধরনের মানুষের বসবাস।নারী,পুরুষ ও হিজড়া।সবাই ই আল্লহর সৃষ্টি।আল্লাহ যাকে যেভাবে উত্তম মনে করেছেন তাকে সেভাবে সৃষ্টি করেছেন।মহান আল্লাহ তা'য়ালা কোরআনে কারীমে ইরশাদ করেন:'আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সুন্দরতম গঠনে।'(সুরা:ত্বীন আয়াত:৪)

তবে পৃথিবী ব্যাপী 'ট্রান্সজেন্ডার' নামে নতুন এক লিঙ্গের মানুষের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে।যদিও তারা নিজেদেরকে চতুর্থ লিঙ্গ তথা 'ট্রান্সজেন্ডার' নামে পরিচয় দিচ্ছে কিন্তু কোরআনের ভাষায় মূলত তারা শয়তানের কাজ করে নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।কোরআনে কারীমে আল্লাহ বলেন 'আর অবশ্যই আমি তাদেরকে নির্দেশ দেব ফলে তারা পশুর কান ছিদ্র করবে। আর অবশ্যই তাদেরকে নির্দেশ দেব ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবে আর আল্লাহর পরিবর্তে কেউ শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করলে সে স্পষ্টত ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়'।(সুরা:নিসা আয়াত:১১৯)

ট্রান্সজেন্ডার বলতে কি বুঝায়:
রূপান্তরিত লিঙ্গ-এর ব্যক্তিবর্গ (ইংরেজি: Transgender ট্রান্সজেন্ডার) হল সেসব ব্যক্তি যাদের মানসিক লিঙ্গবোধ জন্মগত লিঙ্গ চিহ্ন হতে ভিন্ন। রূপান্তরকামী লিঙ্গের ব্যাক্তিবর্গ যদি তাদের লিঙ্গ পরিবর্তন করতে ডাক্তারি সাহায্য কামনা করে তাদেরকে রূপান্তরকামী(ট্রান্সজেন্ডার)নামে ডাকা হয়।সূত্রঃকিউরা।

ট্রান্সজেন্ডারদের প্রতি রাসুলের অভিশাপ:
পুরুষ কখনো নারীর বেশ ধারণ করলে বা নারী কখনো পুরুষের বেশ ধারণ করলে রাসুল (সা.) উভয়ের প্রতি অভিশাপ দিয়েছেন।হাদিসের মধ্যে ইরশাদ হচ্ছে ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন 'রাসুল (সা.)বলেছেন 'আল্লাহ্ তা’আলা সেই সব মহিলাদের উপর অভিশাপ করেন,যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং সে সকল পুরুষদের উপর অভিশাপ করেন, যারা মহিলাদের বেশ ধারণ করে' (মিশকাত:হাদিস:৪৪২৯)

তবে হ্যাঁ!কোন ব্যাক্তি যদি রোগ থেকে মুক্তির উদ্যেশ্যে দাগ (বিকৃতি)দেয় তাহলে অভিসম্পাতের অন্তর্ভুক্ত হবে না।হাদিসের মধ্যে ইরশাদ হচ্ছে হারিস (রা.) বলেন 'রাসুল (সা.) অভিসম্পাত করেছেন সুদখোর, সুদদাতা, সুদের স্বাক্ষী, সুদের লেখক এবং যে শরীরে দাগ (বিকৃতি)দেয়, যাকে দাগ(বিকৃতি)দেওয়া হয়। এক ব্যক্তি বলল, রোগের জন্য ছাড়া? তিনি বলেন, হ্যাঁ'।(নাসায়ী শরীফ: হাদিসঃ৫১০৪)

ট্রান্সজেন্ডার জাহান্নামী:
'ট্রান্সজেন্ডার' ব্যাক্তি সম্পর্কে হাদিসের ভাষায়  কঠোরভাবে বলা হচ্ছে যে,সে জান্নাতে যেতে পারবে না।আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াসার (রা.)থেকে বর্ণিত ইবনে ওমর (রা.)বলেন 'রাসুল (সা.)বলেন 'তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যেতে পারবে না-
(১) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান।
(২) বাড়ীতে বেহায়াপনার সুযোগ প্রদানকারী।
(৩) পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী'(নারীর বেশ ধারণকারী পুরুষ)(নাসাঈ শরীফ)।

ট্রান্সজেন্ডারের জন্য শরয়ী পদক্ষেপ:
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত 'কোন একদিন এক হিজড়াকে নবি(সা.)এর নিকট আনা হলো। তার হাত-পা মেহেদী দ্বারা রাঙ্গানো ছিল। রাসুল (সা.)বললেন:'এর এ অবস্থা কেনো?' বলা হল "হে আল্লাহ্‌র রাসুল! সে নারীর বেশ ধরেছে'। রাসুল (সা.)তাকে আন-নকী নামক স্থানে নির্বাসিত করার নির্দেশ দিলেন'।(সুনানে আবু দাউদ:হাদিস:৪৯২৮)

উক্ত হাদিসে রাসুল (সা.)হিজড়ার ব্যাপারে এত কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন তাহলে ভাবা উচিৎ যারা পুরুষ হয়েও নারীর বা নারী হয়েও পুরুষের বেশ ধরে  তাদের ব্যাপারে শরয়ী অবস্থান কেমন!

'ট্রান্সজেন্ডার'বলতে গেলে এক ধরনের সমকামিতা।আর এ সমকামিতার জন্য আল্লাহ তা'য়ালা হযরত লূত (আ.)এর কওমকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।

সমকামিতার শস্তি:
সমকামী ব্যাক্তির প্রতি আল্লাহ তা'য়ালা রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না।হাদিসের মধ্যে ইরশাদ হচ্ছে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রা.)থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সা.)বলেন 'আল্লাহ তা‘আলা এমন ব্যক্তির প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে কখনো তাকাবেন না যে সমকামে লিপ্ত হয় অথবা কোনো মহিলার মলদ্বারে গমন করে'(সুনানে তিরমিযি:হাদিস:১১৬৫)

আবু বকর,আলী,আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর(রা.)এবং হিশাম ইবন আব্দুল মালিক (রহ.)সমকামীদেরকে শাস্তি স্বরূপ আগুনে পুড়িয়ে হত্যাও করেছেন।

'ট্রান্সজেন্ডার'এটি এক ধরনের রোগ।এ রোগ যদি মানসিকগত কারনে হয় তাহলে তাদেরকে মানসিক ডাক্তার দেখানো উচিৎ আর যদি তাদের এ চাহিদা হরমোনগত সমস্যা থেকে হয় তাহলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে চিকিৎসা করানো উচিৎ।

আল্লাহ সবাইকে এই ঘৃণ্য কাজ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন।

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক 

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ