রবিউল আউয়াল সীরাত চর্চার মাস। রাজধানী ঢাকা সহ সারাদেশে চলছে সীরাত বইমেলা। এরই ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহের টাউন হল মাঠে ১০ দিনব্যাপী (৫-১৪ অক্টোবর) চলছে ইসলামী বইমেলা ২০২৩। স্থানীয় মানুষের বহুল প্রতীক্ষিত এই বইমেলা কতটা সাড়া ফেলতে পেরেছে? পাঠক সমাগম কতটা জমাতে পেরে এই বইয়ের হাট? কেমন চলছে আয়োজন? এসব নিয়ে আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন বইমেলার আয়োজক সংস্থা সীরাতকেন্দ্রের পরিচালক আমীর বিন আহমদ। সাক্ষাৎকারটি সাজিয়েছেন- নুর আলম সিদ্দিকী
ময়মনসিংহের এই সীরাত বইমেলার ভিন্নরকম এক আবেশ সৃষ্টি হয়েছে পাঠকের মাঝে। সেই সূত্র ধরে এবছর পাঠক, দর্শকদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
আলহামদুলিল্লাহ,অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি সাড়া পাচ্ছি। শিক্ষক-শিক্ষার্থী পাঠক দর্শকদের মাঝে অদ্ভুত এক অনুপ্রেরণা দেখতে পাচ্ছি এবং মেলা কেন্দ্রিক একটা উচ্ছ্বাসও লক্ষ্য করছি।
সীরাত মেলায় এবছর স্টল ও উপস্থিত প্রকাশনীর সংখ্যা কেমন?
গত বছরের চেয়ে এ বছর মেলার পরিসর কিছুটা বেড়েছে। মেলায় স্টল সংখ্যা ৫৭ টি আর প্রকাশনীর সংখ্যা ৭০ টির বেশি।
সীরাতের এই বইমেলায় নতুন বই কেমন আসে?
অনেকেই এই বইমেলায় নিজেদের নতুন বই আনার একটা প্ল্যান তৈরি করে রাখে। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের জানামতে এবার মেলাতে ৭-৮টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হবে।
গত বছরের তুলনায় এ বছর কাগজ কালির দাম বেড়েছে। সে হিসেবে বইয়ের দামও বেড়েছে। এটা পাঠকদের প্রতি কোন প্রভাব ফেলবে?
আসলে এই বৃদ্ধিটা শুধু বইয়ের উপরে না বরং বাজার ঘাট কেনাকাটা সবকিছুতেই এর প্রভাব আছে। এরপরও আমরা আশাবাদী, যারা বই কেনেন তারা বইয়ের প্রতি ভালোবাসা রেখেই বই কেনেন। আর এই বৃদ্ধি ভালবাসার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হবে বলে মনে করি না। তবে এটা প্রকাশনা শিল্পের জন্য অশনি সংকেত। এক্ষেত্রে সরকার এবং প্রকাশনী গুলো উদ্দোগ নিয়ে এগিয়ে আসবে বলে মনে করি।
বইমেলা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এবং ইসলামী বইয়ের প্রচার-প্রসার বাড়াতে প্রকাশকরা কী কী উদ্যোগ দিতে পারে বলে আপনার?
তৃণমূল (জেলা-উপজেলা) পর্যায়ে বইমেলা আয়োজন করা এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রচার প্রসার করা চাই তা সোশ্যাল মিডিয়া হোক। তাছাড়া প্রকাশকরা বিভিন্ন আয়োজন করবেন। যেমন, আলোচনা অনুষ্ঠান,প্রতিযোগিতা, বুক রিভিউ, কুইজ ইত্যাদি।
আপনাদের বইমেলায় কোন ধরনের বইয়ের কাটতি (চাহিদা )বেশি?
মোটামুটি সব ধরনের বইয়েরই চাহিদা আছে। তবে ইতিহাস, সিরাত, মাসায়েলের কিতাবের পাশাপাশি পারিবারিক (নারী) বিষয়ক বইয়ের চাহিদা তুলনামূলক বেশি।
আপনাদের মেলায় একটি আয়োজন আছে ‘নারী প্রহর।’ এটার চাহিদা কেমন এবং এর নেগেটিভ-পজিটিভ কোন কিছু আছে কিনা?
আমাদের এটা ইসলামী ভাবধরায় পরিচালিত মেলা। আমরা আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে কোন কিছু করতে চাই না। স্কুল কলেজের অনেক দ্বীনদার মেয়ে এবং মাদ্রাসার মেয়েরাও বইমেলায় অংশগ্রহণ করতে চায়। কিন্তু ভীড়ের কারণে তাদের অস্বস্তি বোধ হয়। এজন্য তাদের দিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের এই আয়োজন।
আপনাদের মেলায় আলাদা শিশু কর্ণার আছে, এর কারণ কি?
অনেক অভিভাবক এবং মায়েরা তাদের সন্তানদের নিয়ে বইমেলায় আসেন। কিন্তু অনেক স্টল থাকার কারণে তাদের বাচ্চাদের জন্য বই খুঁজতে কষ্ট হয়। এজন্য তাদের সুবিধার্থে আলাদা শিশু কন্যার রাখা হয়েছে।
সর্বশেষ সাধারণ পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?
স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশে ইসলামী সাহিত্যে অনেক সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী লেখক আমাদের মাঝে তৈরি হয়েছেন। তারা বাংলা সাহিত্য এবং সমাজ বিনির্মাণে চমৎকার গ্রন্থ উপহার দিয়ে দিচ্ছেন। এজন্য পাঠকদের বলবো, আপনারা বইমেলায় আসুন, এবং কাঙ্খিত বইটি কিনুন । আপনার স্বজনদেরকে উপহার দিন।
-সাক্ষাৎকার গ্রহণ: কাউসার লাবীব।
-শ্রুতি লিখন: নুর আলম সিদ্দিকী।
কেএল/