সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ভারতের ওয়াকফ বিল: অভিযান শুরু, বন্ধ করে দেওয়া হলো ১৭০ মাদরাসা ‘জাতি এবার হিন্দুত্ববাদ প্রভাবমুক্ত বাংলা নববর্ষ উদযাপন করল’ বানিয়াচংয়ে ৫০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ এবারও ঢাকা-চট্টগ্রামে হজ প্রশিক্ষণ দেবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ইরানের প্রতিরক্ষা নীতি ও পশ্চিমা হুমকি: যুদ্ধ কি অনিবার্য? মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মানেই অনিশ্চিত গন্তব্যের যাত্রী নয়, চাই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ওয়াকফ বিল বাতিলে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে খেলাফতের গণমিছিল আরজাবাদ মাদরাসারও শায়খুল হাদিস হলেন মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক সারা দেশে জুমার জামাতের সময় নির্ধারণ, সুবিধা-অসুবিধা ময়নাতদন্ত শেষে মাদরাসা ছাত্র জুলাই-শহীদ রাব্বির পুনঃদাফন

গাজার বেশিরভাগ এলাকায় অভিযান আরও জোরদার করা হবে: ইসরায়েল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

গত ১৮ মার্চ, দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল আবার হামাসবিরোধী অভিযান শুরু করে। এরপর থেকেই তারা গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে নিচ্ছে এবং নতুন করে কয়েক লাখ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ঘোষণা করেছেন, গাজা উপত্যকার অধিকাংশ এলাকায় শিগগিরই 'জোরালোভাবে' সামরিক অভিযান চালানো হবে। খবর বিবিসির। 

তিনি জানান, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) দক্ষিণ গাজার রাফা ও খান ইউনিস শহরের মাঝামাঝি একটি 'নিরাপত্তা অঞ্চল' পুরোপুরি দখলে নিয়েছে।

আইডিএফ জানিয়েছে, গাজা থেকে হামাসের ছোড়া রকেটের প্রতিক্রিয়ায় তারা খান ইউনিস শহর ও আশপাশের এলাকায় নতুন করে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ জন্য ওইসব এলাকা থেকে সাধারণ বাসিন্দাদের সরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ১৮ মার্চ, দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল আবার হামাসবিরোধী অভিযান শুরু করে। এরপর থেকেই তারা গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে নিচ্ছে এবং নতুন করে কয়েক লাখ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনারা ইতোমধ্যে গাজার পুরো সীমান্তজুড়ে একটি করিডোর তৈরি করেছে, যাকে তারা হামলার ঝুঁকি ঠেকাতে একটি 'বাফার জোন' হিসেবে বর্ণনা করছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান এই হামলার মূল লক্ষ্য হলো গাজায় আটক থাকা ৫৯ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করতে চাপ সৃষ্টি করা—যাদের মধ্যে ২৪ জনের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হচ্ছে।

শনিবার ইসরায়েল কাটজ বলেন, 'ফিলাডেলফিয়া করিডোর' থেকে শুরু করে পুরনো ইহুদি বসতি 'মোরাগ' পর্যন্ত এলাকাটি এখন ইসরায়েলি নিরাপত্তা অঞ্চলের অংশ। ফলে রাফা শহর কার্যত খান ইউনিস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গাজার এক-পঞ্চমাংশই রাফায় অবস্থিত।

কাটজ আরও বলেন, 'আইডিএফ শিগগিরই গাজার আরও বিভিন্ন এলাকায় শক্তিশালী অভিযান শুরু করবে। এসব এলাকার লোকজনকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরে যেতে হবে।'

তিনি জানান, উত্তর গাজার বেইত হানুন এবং কেন্দ্রের 'নেটজারিম করিডোর'-এর বাসিন্দাদেরও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, যাতে ওই এলাকাগুলোতেও নিরাপত্তা অঞ্চল সম্প্রসারণ করা যায়।

আইডিএফ এবিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিকেই তাদের অবস্থান হিসেবে তুলে ধরে।

এদিকে হামাস বলেছে, ইসরায়েলের এই অভিযান 'নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষদের হত্যা করছে' এবং এতে জিম্মিদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর গত মাসে জানিয়েছিল, ইসরায়েলের এই সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। কারণ এতে বাস্তুচ্যুতদের জন্য যথাযথ আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, পয়ঃনিষ্কাশন ও খাদ্যের নিশ্চয়তা রাখা হয়নি।

ইসরায়েল বলছে, তারা সাধারণ মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, যেন হামাস তাদের 'মানবঢাল' হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে।

শনিবার গাজা থেকে তিনটি রকেট ছোড়া হলে আইডিএফ জানায়, তারা সেগুলো ভূপাতিত করেছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে হামাসের সামরিক শাখা। এ হামলায় কেউ হতাহত হয়নি।

গাজার হামাস-চালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, শনিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আরও ২১ জন নিহত ও ৬৪ জন আহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপর থেকেই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

হামাস-চালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫০ হাজার ৯৩৩ জন নিহত হয়েছে। শুধু গত ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া অভিযানে নিহত হয়েছে ১ হাজার ৫৬৩ জন।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ