গাজা ও পশ্চিম তীর ফিলিস্তিনি জনগণের মাতৃভূমি। এটি কোনো রাজনৈতিক লেনদেনের দর-কষাকষির উপকরণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ওয়াং ই বলেন, ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ দুই রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে নির্ধারিত হওয়া জরুরি।
তিনি বলেন, গাজা ও পশ্চিম তীর ফিলিস্তিনি জনগণের মাতৃভূমি, কোনো রাজনৈতিক লেনদেনের দর-কষাকষির উপকরণ নয়। গাজার যুদ্ধ পরবর্তী শাসন ব্যবস্থায় ফিলিস্তিনিদের শাসনের অধিকার নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি।
চীন ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে থাকায় বৈঠকটিতে ওয়াং ই সভাপতিত্ব করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি বিতর্কিত মোড়লীয় প্রস্তাব দেন, প্রস্তাবে গাজা ভূখণ্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কথা বলা হয় এবং ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশগুলোতে স্থানান্তর করার আহ্বান জানানো হয়।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। ফিলিস্তিনিরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা নিজেদের মাতৃভূমি ছাড়বেন না। অন্যদিকে মিসর ও জর্ডান, যাদের সৌদি আরব সমর্থন দিয়েছে, তারা গাজার জনগণকে আশ্রয় দেওয়ার ট্রাম্পের বিতর্বিত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
অন্যদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন, ইসরাইল এটিকে বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ সোমবার ঘোষণা দিয়েছেন যে, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ‘স্বেচ্ছায় প্রস্থান’-এর জন্য একটি বিশেষ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করবেন।
এদিকে, মিশর একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত না করেই গাজার পুনর্গঠনের ব্যবস্থা করা হবে। এটিকে ট্রাম্পের প্রস্তাবের পাল্টা উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ট্রাম্পের পরিকল্পনা মূলত জোরপূর্বক উচ্ছেদ, যা একটি সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের শামিল। ইউরোপের অধিকাংশ দেশও এই ট্রামে্পর এই বিতর্কিত পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে।
ওয়াং ই আরও বলেন, কোনো দেশ যদি কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করতে চায়, তবে তা মেনে নেওয়া যায় না। নিরাপত্তা পরিষদকে সংকীর্ণ ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্য ও সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বলপ্রয়োগ, প্রতারণা বা ব্ল্যাকমেইল কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী। নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ছাড়াই আরোপিত যে কোনো একতরফা নিষেধাজ্ঞা আইনগত ভিত্তিহীন, অযৌক্তিক এবং সাধারণ জ্ঞানের পরিপন্থি।
এমএইচ/