বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এক হাজার লেখক এক বিবৃতিতে ইহুদিবাদি ইসরায়েলের সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করবেন না বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। তারা বলেছেন, ইহুদিবাদী সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর যে দমনপীড়ন ও গণহত্যা চালিয়ে আসছে তাতে সহযোগিতা করছে এসব সাংস্কৃতিক সংস্থা।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি এসব সংগঠনকে সহযোগিতা করলে প্রকারান্তরে তেল আবিবের বৈষম্যমূলক নীতি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা হবে, যার ফলে ইসরায়েল তার গণহত্যা, দখলদারিত্ব ও বর্ণবাদী আচরণকে ব্যাখ্যা করার সুযোগ পাবে।
পার্সটুডের রিপোর্ট অনুসারে, ওই এক হাজার লেখকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনজন হলেন স্যালি রুনি, রাচেল কুশনার, ও অরুন্ধতি রায়। তারা তাদের বিবৃতিতে এই মর্মে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন যে, ইসরায়েলি প্রকাশনা সংস্থাগুলোকে কোনো বই প্রকাশ করতে দেবেন না, তাদের কোনো বই প্রকাশনা উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন না এবং ইসরায়েলের কোনো বইমেলায়ও তারা যাবেন না।
আয়ারল্যান্ডের প্রখ্যাত কবি ও চিত্রনাট্য লেখক স্যালি রুনির প্রথম উপন্যাস ‘টক টু ফ্রেন্ডস’ ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়। তবে তিনি পাঠকদের কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন ২০১৮ সালে তার ‘অর্ডিনারি পিপল’ বইটি প্রকাশের পর।
স্যালি রুনি বহু বছর যাবত ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে সমর্থন করে আসছেন। একটি ইসরায়েলি প্রকাশনা সংস্থা ২০২১ সালে তার তৃতীয় উপন্যাস ‘বিউটিফুল ওয়ার্ল্ড’ হিব্রু ভাষায় অনুবাদ করে প্রকাশ করতে চেয়েছিল। কিন্তু রুনি ওই সংস্থাকে সে অনুমতি দেননি।
স্যালি রুনি চলতি বছরের গোড়ার দিকে ‘পেন পিন্টার’ পুরস্কার জেতার পর ওই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি নিজের পুরস্কারের সব অর্থ ফিলিস্তিনি শিশুদের সাহায্যার্থে গঠিত ফান্ডে দান করে দেন।
বিশ্বের প্রখ্যাত লেখকদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনে ফিলিস্তিনিদের জন্য যে সুস্পষ্ট অধিকার লিপিবদ্ধ রয়েছে তাকে যেসব প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি দেয় না সেসব প্রতিষ্ঠান বয়কটের তালিকায় থাকবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অতীতে দক্ষিণ আফ্রিকার বহু বর্ণবাদবিরোধী লেখক একই রকম অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন; কারণ, বর্ণবাদী আচরণ ও লাখ লাখ মানুষকে শরণার্থীতে পরিণত করার বিষয়টি কোনো সুস্থ বিবেকসম্পন্ন মানুষ মেনে নিতে পারেন না।
সূত্র : পার্সটুডে, দ্য গার্ডিয়ান
এনএ/