গাজা যুদ্ধ শেষ করা এবং সেইসঙ্গে বিপর্যস্ত মানুষের জন্য মানবিক ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
সপ্তাহব্যাপী মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে ব্লিনকেন বুধবার সৌদি যুবরাজের সঙ্গে দেখা করেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে ভারতের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল দূরদর্শন এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সপ্তাহব্যাপী মধ্যপ্রাচ্য সফরে বুধবার (২৩ অক্টোবর) সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে রিয়াদে দেখা করেন।
এসময় দ্বিপাক্ষিক বিষয় ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য বিরাজমান পরিস্থিতি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ, খাদ্য সংকট ও ওষুধ সামগ্রীর সংকটে থাকা মানুষজনের জন্য মানবিক ত্রাণ সহায়তা, যুদ্ধ শেষের গাজার পুনর্গঠন এবং লেবাননে ত্রাণ সহায়তা বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, সপ্তাহব্যাপী মধ্যপ্রাচ্য সফরের শুরুতে ১৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিব যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। সেখানে তিনি ইসরায়েলের তেল আবিব ও জেরুজালেমে প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেন।
সে সব আলোচনায় ব্লিনকেন ইসরায়েকে এই বার্তা দেন যে, গাজায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে ইসরায়েলের যতটুকু ভূমিকা রাখার কথা, সে কথা রাখছে না ইসরায়েল। সে বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অসন্তোষ তুলে ধরেন এবং গাজায় ত্রাণ পাঠানোর বিষয়ে ৩০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে, সে বিষয় তুলে ইসরায়েলের ইতিবাচক সহযোগিতা চাওয়া হয়।
মার্কিন উচ্চ পর্যায়ের এই প্রতিনিধি প্রতিপক্ষ ইসরায়েলকে জানান, তারা ইসরায়েলের কাছ থেকে আরো সহযোগিতার আশা করেন। সেটি করা না হলে মার্কিন প্রশাসনের প্রতিশ্রুত অস্ত্র সরবরাহ বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে সতর্ক করা হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর এটাই তার ১০ম বারের মতো ইসরায়েল ও ১১তম মধ্যপ্রাচ্য সফর।
গাজা যুদ্ধ শেষ, পুনর্গঠন এবং ইরানসমর্থিত লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধের সমাপ্তি এবং ইসরায়েলে ইরানের হামলার পর ইসরায়েল কীভাবে এর জবাব দেবে এসব নিয়ে আলোচনা করতে সপ্তাহব্যাপী মধ্যপ্রাচ্য সফরে মঙ্গলবার ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে পৌঁছান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
এছাড়া ব্লিনকেন লেবাননের রাজধানী জর্ডান ও কাতারের রাজধানী দোহায় যাবেন বলেও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। শুক্রবার পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করবেন তিনি।
হামাস নেতা সিনওয়ারকে হত্যার পর মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যে যুদ্ধের ভয়াবহতা বেড়েছে, তা প্রশমিত করতে মধ্যপ্রাচ্য সফরের মূল উদ্দেশ্য অ্যান্টনি ব্লিনকেনের।
এছাড়া গাজায় যুদ্ধ শেষ, বাসিন্দাদের নিরাপত্তা, ত্রাণ সহায়তা, হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধের সমাপ্তি বিষয়ে আলোচনা করবেন ইসরায়েল, লেবানন ও কাতারের নেতাদের সঙ্গে।
এনএ/