পাকিস্তান শনিবার বলেছে, বিদ্রোহীরা আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী একটি অস্থিতিশীল জেলায় রাতের বেলা একটি সামরিক বহরে অতর্কিত হামলা চালায়। এর ফলে একজন কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ছয়জন সেনা নিহত হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপির পূর্বের শক্তিশালী ঘাঁটি উত্তর ওয়াজিরিস্তানে অতর্কিত হামলার ঘটনাটি ঘটে।
সামরিক বাহিনীর একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় গুলি বিনিময়ে ছয়জন হামলাকারী নিহত হয়েছে। তারা নিহত উগ্রবাদীদের ‘খারিজ’ হিসেবে চিহ্নিত করে। ‘খারিজ’ হলো টিটিপি-এর একটি সরকারি পরিচিতি।
একাধিক এলাকার নিরাপত্তা সূত্র নিশ্চিত করেছে, বন্দুকযুদ্ধে আরো কমপক্ষে ২২ জন পাকিস্তানি সেনা আহত হয়েছে।
ওয়াজিরিস্তান জেলাটি খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। তিন বছর আগে তালিবান কাবুলে ক্ষমতায় আসার পর থেকে জেলাটিতে টিটিপি বোমা হামলা এবং বন্দুক হামলা অতিরিক্ত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সামরিক বাহিনী জানায়, শনিবার গভীর রাতে প্রদেশটির সোয়াত জেলায় গোয়েন্দা পরিচালিত একটি আলাদা নিরাপত্তা অভিযানে দুইজন টিটিপি উগ্রবাদী কমান্ডারকে হত্যা করা হয় এবং একজনকে বন্দী করা হয়।
পাকিস্তান বলে, টিটিপি বা পাকিস্তানি তালেবানকে আফগানিস্তান থেকে পরিচালনা করা হয় এবং ওই দেশের তালেবান সরকারের সহায়তায় তারা সীমান্তের ও-পার থেকে হামলা চালায়।
ইসলামাবাদ অভিযোগ করে, তাদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান সীমান্ত প্রদেশে সক্রিয় বিদ্রোহীরা তাদের আফগানিস্তানের আশ্রয়স্থল ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যবহার করে দেশটির বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলা চালাচ্ছে।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের এই সপ্তাহের একটি প্রতিবেদনে এই বছরের প্রথম নয় মাসে পাকিস্তানি বেসামরিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ১০০০ জনের মৃত্যু নথিভুক্ত করা হয়েছে। ইসলামাবাদ-ভিত্তিক চিন্তক গোষ্ঠী এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে টিটিপি এবং বেলুচিস্তানের বিদ্রোহীদের আক্রমণে খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং বেলুচিস্তানে বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দেশ স্বীকৃতি দেয়নি। তালেবান পাকিস্তানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং দাবি করে টিটিপি বা অন্য কোনো বিদেশী উগ্রবাদী গোষ্ঠী আফগান মাটিতে নেই।
কিন্তু, জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ তাদের সাম্প্রতিক মূল্যায়নে তালেবানের দাবিগুলোকে নাকচ করেছে এবং টিটিপি-কে আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বর্ণনা করে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা
এনএ/