ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইরানের রাজধানী তেহরানের রাস্তায় উল্লাসে ফেটে পড়েন হাজারো মানুষ। ইরান এবং হিজবুল্লাহর পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে এসে উল্লাস করেন তারা। এ সময় নিহত হিজবুল্লাহ নেতার ছবিও ছিল অনেকের হাতে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেওয়ায় অনেকে নেচে-গেয়ে মিষ্টি বিতরণ করেন।
ব্রিটিশ দূতাবাসের সামনে মূলত এই জমায়েত হয়। এর আগে এপ্রিলে ইসরায়েলে ইরানের হামলার পরও এই একই স্থানে জমায়েত লক্ষ্য করা যায়।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালানোর পর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন ইরানের বাসিন্দারা। তারা লেবানন, ফিলিস্তিনের পতাকা, বাঁশি, ফুল, আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ছবি হাতে তেহরানের রাস্তায় নেমে আসেন সাধারণ মানুষ। দখলদারদের বিরুদ্ধে ইরানের এই পদক্ষেপের খুশিতে মিষ্টিও বিতরণ করেন অনেকে।
এক ইরানি বলেন, ‘আমি অনেক খুশি। অনেক নির্ঘুম রাত পার করেছি এই সময়ের জন্য। ইসরায়েল পাল্টা জবাব দিলেও আমরা পিছপা হব না। শক্ত হাতে প্রতিহত করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমাদের মেহমান ইসমাইল হানিয়াকে ইরানের মাটিতে হত্যা করা হয়, তখন আমরা অনেক ভেঙে পড়েছিলাম। এখন তাদের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে অনেক স্বস্তি অনুভব করছি।’
বাঁধ ভাঙা উল্লাস করতে দেখা গেছে ইরাকের বাসিন্দাদেরও। একইদিন ফিলিস্তিন ও হিজবুল্লাহর পতাকা হাতে উচ্ছ্বস প্রকাশ করেন বাগদাদ ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বারসার বাসিন্দারা। বেসামরিকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন সামরিক সদস্যরাও। বন্দুক হাতে নেচে গেয়ে আনন্দ করেন তারা।
মঙ্গলবারের (১ অক্টোবর) ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ইরান ১৮০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে কিছু ‘হাইপারসনিক ফাত্তাহ’ ক্ষেপণাস্ত্রও ছিল, যেগুলোর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১০ হাজার মাইল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ডের মতে, তাদের ছোড়া ৯০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। ইসরায়েল অবশ্য বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্রই তারা আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ঠেকিয়ে দিয়েছে।
ইরানের হামলায় ইসরাইলে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে এতে অধিকৃত পশ্চিমতীরের এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন ‘ইরান বড় ভুল করেছে এবং এজন্য তাকে মূল্য দিতে হবে’।
ইসরায়েলের সহযোগীরা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইসরায়েলের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত থাকবে। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুদ্ধবিরতির আহবান জানিয়েছে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বুধবার বৈঠকে মিলিত হবে।
ইরান বলেছে, ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে ইসরায়েলের সব অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হবে।
সূত্র: আল জাজিরা
এনএ/