গত কয়েকদিন আগে ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে প্রথম দফার সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে চরম ডানপন্থিরা জয় লাভ করে। এতে করে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা চরম শঙ্কার মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে মুসলিমরা। কারণ ফ্রান্সে বসবাসরত বেশির ভাগ মুসলিম আফ্রিকার দেশগুলো থেকে আসা। আবার এই দেশগুলো এক সময় ফ্রানের অধিনে ছিলো। স্বাধীনতার লাভের পর থেকে ফ্রান্সের সঙ্গে তাদের বিরোধ লেগেই আছে।
জানা যায়, ফ্রান্সে সংসদীয় নির্বাচনের প্রথম দফায় ৩৩ শতাংশ ভোট নিয়ে এগিয়ে আছে ন্যাশনাল র্যালি (এনআর)। কট্টর ডানপন্থি এই দলের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পর মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত রোববার প্রথম ধাপের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার গঠনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে কট্টর ডানপন্থিরা। আগামী ৭ জুলাই দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ হবে। অবশ্য দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে আরএন সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার পরও শঙ্কায় রয়েছেন ফ্রান্সের প্রায় ৬০ লাখ মুসলমান।
প্যারিসের ২২ বছর বয়সী মুসলিম তরুণী ফাতিমাতা মনে করছেন, অনেক ফরাসি তার অস্তিত্বের বিরোধিতা করছেন। তিনি বলেন, আমি ফ্রান্সের দ্বারা প্রতারিত বোধ করছি। ১ কোটির বেশি মানুষ এমন একটি দলের জন্য ভোট দিয়েছে, যারা জনসমক্ষে পর্দা নিষিদ্ধ করার প্রচারণা চালাচ্ছে। ন্যাশনাল র্যালির নেত্রী মেরিন লা পেন জনসমক্ষে হিজাব নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর উত্তরসূরি জর্ডান বারদেলা এগিয়ে রয়েছেন। তিনি বলেছেন, পর্দা একটি বৈষম্যের হাতিয়ার। প্যারিসের উত্তরাঞ্চলের জনবহুল ব্যানলিউকের ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এবং তাঁর দল ক্ষমতা পেলে দ্বৈত নাগরিকদের কিছু কৌশলগত রাষ্ট্রীয় কাজে নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বিপণনকর্মী ইলিয়াস বলেন, অনেক মুসলিম ভাবছেন, আরএন ক্ষমতা পেলে তারা ফ্রান্স ছেড়ে চলে যাবেন। এ বছরের শুরুর দিকে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ইসলামবিদ্বেষের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে ফরাসি মুসলমানরা বিদেশে চাকরির সন্ধানে দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন। ১ হাজার জনেরও ওপর করা ওই গবেষণায় ১৪০ জনের দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী তিজিরি মেসাউদেন বলেন, ন্যাশনাল র্যালি বলছে, দ্বৈত নাগরিকত্বধারীদের কিছু কৌশলগত অবস্থানে কাজ করতে দেওয়া হবে না। এটি আমার ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলছে। খবর আলজাজিরার।
হাআমা/