গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় নিহতর সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ। এখন পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি শিশু ও ৩ হাজারের বেশি নারী প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩০ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের ৭৫ শতাংশই নারী ও শিশু।
এদিকে গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই হাসপাতালে অবস্থান করছেন কয়েক হাজার রোগী, চিকিত্সক, কর্মী এবং বাস্তুচ্যুত মানুষ। গতকাল শনিবার সেখানকার একজন চিকিত্সক জানান, হাসপাতালটি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতাল খালি করার খবরে সেখানে অবস্থানরত মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। অনেকে প্রাণে বাঁচতে হাসপাতাল ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। যদিও পরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হাসপাতাল খালি করার কোনো আল্টিমেটাম তারা দেননি। আল শিফায় তিন দিনেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি অভিযানের মধ্যে অন্তত ২৪ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস এলাকায় আবাসিক একটি ভবনে ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় ২৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় একটি হাসপাতালের পরিচালক গতকাল এ খবর জানান। অন্যদিকে জেইতুন এলাকার আল ফালাহ বিদ্যালয়ে ইসরায়েলের বোমা হামলায় ২০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। ওই স্কুলে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল শনিবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। পাল্টা হিজবুল্লাহর অবস্থানে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, সীমান্তবর্তী এলাকার ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনা ও সৈন্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে তারা। এতে ইসরায়েলি অনেক সৈন্য হতাহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। আলাপকালে হামাসের হাতে বন্দী হওয়া মানুষদের অবিলম্বে মুক্তির ওপর জোর দিয়েছেন বাইডেন। গাজার শাসন ক্ষমতায় থাকা ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের সঙ্গে কাতারের সম্পর্ক আছে।
হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা দুই জনই মনে করেন, হামাসের হাতে জিম্মি থাকা মানুষদের অবিলম্বে মুক্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে সাড়া দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় প্রতিদিন দুই ট্যাংকারভর্তি ডিজেল সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গাজায় জরুরি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পরিমাণ বাড়াতে চলমান প্রচেষ্টা নিয়ে দুই নেতা আলোচনা করেছেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও তারকারা গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি করেন।
এনএ/