যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত ৫ সপ্তাহ ধরে পবিত্র আল আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের জুম্মার নামাজ পড়তে দিচ্ছে না ইসরায়েল। আল আকসার ওয়াক্ফ বিভাগের এক সদস্য তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিরাপত্তাজনিত কারণে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সদস্য আনাদোলুকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে আল আকসা মসজিদে প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়তে উপস্থিত হন হাজার হাজার মুসল্লি। তবে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে।
ওয়াক্ফ বিভাগের ওই সদস্য বলেন, ‘তারপরও গতকাল শুক্রবার প্রায় ৪ হাজার মুসল্লি এসেছিলেন মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে, তবে ইসরায়েলি সেনা ও পুলিশ সদস্যরা তাদের ঢুকতে দেয়নি।’
তিনি আরও জানান, কেবল শুক্রবার জুম্মার সময় নয়— অন্যান্য দিনেও ফিলিস্তিনিদের আল আকসায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। মূলত যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই খালি আছে আল আকসা মসজিদ।
পশ্চিম তীর এলাকার পূর্ব জেরুজালেম শহরে অবস্থান আল আকসা মসজিদের। ওয়াক্ফ বিভাগের ওই সদস্য জানান, গত ৭ নভেম্বর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আল আকসা অঞ্চলে টহলের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার এই প্রহরা আরও কঠোর করা হয়। এই দিন ভোর থেকেই আল আকসার আশে পাশে ও পূর্ব জেরুজালেমের বিভিন্ন এলাকায় টহল শুরু করে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
ফলে শুক্রবার পূর্ব জেরুজালেমের অন্যান্য মসজিদ ও সড়কের ওপর জুম্মার নামাজ পড়েন মুসল্লিরা।
এ ব্যাপারে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনাদোলু এজেন্সি, কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত ৭ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। বুলডোজার দিয়ে সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালানোর পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে নিয়ে যায় তারা।
আকস্মিক এই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজা উপত্যকায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। সেই অভিযান এখনও চলছে। উপরন্তু গত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে উপত্যকায় অভিযানে নেমেছে ইসরায়েলের স্থলবাহিনীও।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরা শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর গত ১ মাসের অভিযানে উপত্যকায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১১ হাজার ৭৮ জন। এই নিহতদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা ৪ হাজার ৫০৬ জন, নারীদের সংখ্যা ৩ হাজার ২৭ জন এবং বয়স্ক লোকজনের সংখ্যা ৬৭৮ জন।
প্রসঙ্গত, যুদ্ধের শুরু থেকে গাজায় বোমা বর্ষণের পাশাপাশি পশ্চিম তীরের বিভিন্ন গ্রাম ও শহরেও অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনা ও পুলিশ সদস্যরা। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ২০০ জন ফিলিস্তিনি।
এনএ/