শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

গাজার রাফাহ ক্রসিং কী, কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েলের একের পর এক বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা এখন বিপর্যস্ত। সীমান্তেও প্রস্তুত ইসরায়েলি সৈন্যরা, যেকোনও সময় শুরু হতে পারে স্থল অভিযান।

এমন পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে গাজা ছেড়ে যাচ্ছেন লাখ লাখ বাসিন্দা। তাদের গন্তব্য গাজার দক্ষিণে রাফাহ সীমান্ত।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলোর খবরে জানানো হয়েছে, বিদেশি পাসপোর্টধারীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া এবং মানবিক সহায়তা সামগ্রী প্রবেশের উদ্দেশ্যে অল্প সময়ের জন্য রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়া হতে পারে। তবে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রাফাহ ক্রসিং ছিল বন্ধ।

রাফাহ ক্রসিং কী এবং কোথায় অবস্থিত?
রাফাহ হচ্ছে মিশরের সিনাই মরুভূমি সংলগ্ন একটি সীমান্ত পথ যেটি গাজার সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত। গাজা থেকে বের হওয়ার আরও দুটি সীমান্তপথ রয়েছে, যেগুলো পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে এবং দুটিই এখন বন্ধ।

ফলে মিশরের এই সীমান্ত পথটিই এখন গাজার উদ্বাস্তুদের একমাত্র ভরসা। তবে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সীমান্তটি বন্ধ করে দিয়েছে মিশর।

রাফাহ সীমান্ত এতো গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গত ৭ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলের ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে আক্রমণ করে হামাস। এ ঘটনার পর পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সীমান্তটি বন্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। ফলে রাফাহ সীমান্তটিই এখন বেসামরিক নাগরিকদের জন্য গাজা ত্যাগ করার একমাত্র স্থলপথ। গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রেও রাফাহ এখন গুরুত্বপূর্ণ।

মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজার জন্য মানবিক সহায়তা সামগ্রীপূর্ণ একটি উড়োজাহাজ উত্তর সিনাইয়ের আল-আরিশ বিমানবন্দরে ইতোমধ্যেই পৌঁছেছে। রাফাহ সীমান্তের কাছে জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা সামগ্রী বহনকারী কয়েক ডজন লরিও এখন গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।

রাফাহ সীমান্তে এখন কি হচ্ছে?
ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রাফাহ সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে পরস্পরবিরোধী নানান খবর ছড়ানো হয়েছে। সীমান্তটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হামাস ও মিশরের মধ্যে যেমন রেষারেষি চলছে, তেমনি ইসরায়েলও বোমাবর্ষণ করে সীমান্তে চলাচল বন্ধ করতে সক্ষম।

মিশরের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলেছে, ইসরায়েল গত ৯ এবং ১০ অক্টোবর রাফাহ সীমান্তে অন্তত তিনবার হামলা চালায়, যাতে মিশরের বেশ কিছু নাগরিক আহতও হয়েছেন।

এরপর গত ১২ অক্টোবর মিশরের সরকার ইসরায়েলকে রাফাহ সীমান্তের কাছে বিমান হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানায়, যেন সীমান্তটি গাজার জনগণের জন্য ‘লাইফলাইন’ হিসাবে কাজ করতে পারে। তখন এ বিষয়টিও স্পষ্ট করা হয় যে, সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দরজা খোলা হবে না।

এ অবস্থায় পশ্চিমা দেশগুলো গাজায় আটকে পড়া বিদেশি নাগরিক এবং মানবিক সহায়তার কথা বিবেচনা করে রাফাহ সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টায় যুক্ত হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন- উভয়েই সম্প্রতি জানিয়েছেন, তারা রাফাহ সীমান্ত পুনরায় খুলে দিতে ইসরায়েল, মিশর এবং ‘অন্যান্য নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের’ সাথে কাজ করছেন।

গত সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্রের পক্ষ থেকে গাজায় আটকে পড়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের রাফাহ অভিমুখে যেতে বলা হয়েছে। কারণ সীমান্তটি ‘খুব কম সময়ের নোটিশে’ খোলা হতে পারে, যেটি আবার অল্প সময়ের মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

অল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি দিয়ে সীমান্তটি খুলে দেওয়া হতে পারে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে গত সোমবার রাফাহ সীমান্তে বিপুল সংখ্যক গাজাবাসী এসে জড়ো হন।

রাফাহ সীমান্ত বন্ধ কেন?
রাফাহ সীমান্ত বন্ধ রাখার একটি কারণ হলো- সীমান্তটি দিয়ে যেন হামাসের কোনও সদস্য গাজা ছেড়ে যেতে না পারে এবং বাইরে থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ আনতে না পারে, ইসরায়েল সেটি নিশ্চিত করতে চায়।

অন্যদিকে, রাফাহ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে লাখ লাখ উদ্বাস্তু সীমান্ত পার হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। ফলে দরজা খুলে দিলেই উদ্বাস্তুদের স্রোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে- এমন আশঙ্কায় সীমানা খুলছে না মিশর।

তবে বিদেশি পাসপোর্টধারী এবং মানবিক সহায়তার জন্য পুনরায় সীমান্তটি খোলার বিষয়ে মিশরের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ। গাজায় আটকে পড়া বিদেশি নাগরিকদেরকেও বলা হয়েছে, রাফাহ সীমান্তে অবস্থান নিতে, যাতে সীমানা খোলামাত্রই তাদেরকে উদ্ধার করা যায়।

গাজায় ব্যাপক ঝুঁকিতে ৮৪ হাজার অন্তস্বত্ত্বা : ডব্লিউএইচও
যেকোনও মুহূর্তে ‘আগাম পদক্ষেপ’ নিতে পারে প্রতিরোধ ফ্রন্ট: ইরান
হামাসের হামলার পর বাস্তুচ্যুত ৫ লাখ ইসরায়েলি
ইসরায়েলি স্থল হামলার হুমকিতে ভীত নই, আমরা প্রস্তুত: হামাস
মার্কিন গণমাধ্যমের খরবে জানানো হয়েছে, বিদেশি পাসপোর্টধারী এবং মানবিক সহায়তা সামগ্রী প্রবেশের উদ্দেশ্যে সীমান্তটি অল্প সময়ের জন্য খোলা হতে পারে।

রাফাহ সীমান্ত পার হওয়ার প্রক্রিয়া কী?
ফিলিস্তিনিরা ইচ্ছা করলেই রাফাহ সীমান্ত পার হতে পারেন না। এজন্য তাদেরকে দুই থেকে চার সপ্তাহ আগে স্থানীয় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়, যেটি ফিলিস্তিন বা মিশর সরকার যে কোনও অজুহাতে প্রত্যাখ্যান করে দিতে পারে।

জাতিসংঘের হিসেবে, ২০২৩ সালের আগস্টে ১৯ হাজার ৬০৮ জন ফিলিস্তিনি নাগরিককে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে মিশরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর প্রবেশের অনুমতি চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন ৩১৪ জন।

সুত্র: বিবিসি বাংলা

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ