মুহাম্মাদ রাজ :
মুহাম্মদ আল ইয়াজিজি। ছোট্ট বালক। বয়স আর কত হবে — এই ৭/৮ হবে হয়তো। সুসংগঠিত দেহ অবয়ব আর দীপ্তিমান চেহারা। পূণ্যভূমি ফি-লি-স্তি-নে তার জন্ম।
এতদিনে ফি-লি-স্তি-নের গাজা মৃ-ত্যুপুরী বা ধ্বং-সস্তূপে পরিণত হয়েছে। মুজা-হিদরা লড়ে যাচ্ছেন। মুহূর্তে মুহূর্তে মৃ-ত্যুর খবর আসে। চোখের সামনে প্রিয়জন, পরিজনদের মৃ-ত্যুর দৃশ্য দেখা যায়। কেউ কাঁদে না। কাঁদার শক্তি নেই। কেঁদে কোনো লাভও নেই। বেঁচে থাকার কোনো আশা নেই। এখানে সবাই শুধু মৃত্যুর অপেক্ষা করে।
ক্রমবর্ধমান যুদ্ধ মুহাম্মদ আল ইয়াজিজির জীবনকে ঠেলে দিয়েছে অজানা দ্বীপে।
তার বাবা মা উভয়েই শ-হী-দ হয়ে গেছে। শুধু সে আর তার ছোট্ট বোনটি বেঁচে আছে। ছোট্ট বোন মানে শিশু। বয়স ছয় মাস। শিশু বোনটির নাম তালিন।
ছোট্ট বোনের মা বাবার দায়িত্ব পালন করে বড় ভাই— বালক আল ইয়াজিজি।
পানাহার থেকে শুরু করে ডায়াপার পরিবর্তন সবকিছু সেই করে। আর কে করবে?
ছোট্ট বালক কীভাবে মা বাবার ভূমিকা পালন করে— এই কৌতূহল সবারই।
আল ইয়াজিজি জানায়—
"আমার মায়ের দৃশ্যগুলো আমার মনে গেঁথে আছে। মা কীভাবে শিশু বোনটিকে আদর করতেন, কীভাবে তার কান্না থামাতেন— মায়ের সেই আচরণগুলো অনুসরণ করি। বোন কান্নাকাটি করলে তার মুখে হাত রেখে আলতো নাড়াচাড়া করি। ধীরে ধীরে কান্নার কারণ এবং তার অন্যান্য প্রয়োজন বুঝতে শিখে গেছি। আমার শিশু বোনটিকে লালন পালন করতে কোনো বেগ পোহাতে হয় না।”
শিশু তালিনের চোখ তার ভাই মুহাম্মদের দিকে নিবদ্ধ থাকে সবসময়ই।
আল ইয়াজিজির মা তার নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে শত্রুরা বো-মা হা-মলা চালিয়ে সবাইকে শ-হী-দ করে দিয়েছে। বালক আল ইয়াজিজি তার পিতার কাছে জেনেছেন যে, তার মা শ-হী-দ হয়ে গেছে।
পরে বাবা তার মাকে কবরস্থ করতে গা-জা-য় যান। সেখান থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি। তিনিও শ-হী-দ হয়ে যান।
শিশু তালিন তার ভাইকে জড়িয়ে ধরে রাখে। ভাইয়ের মুখে নির্মল চু-মু এঁকে দেয়। ভাইয়ের আদর স্নেহ পেয়ে তালিন খুব হাসিখুশি থাকে।
বালক আল ইয়াজিজি শিশু বোনকে পেয়ে বাবা মায়ের মতোই। এভাবেই ধ্বং-সস্তূপের মধ্যে থেকে বেড়ে ওঠছে দুটি নিষ্পাপ ফুলকলি।
হাআমা/