মুফতি আবুল ফাতাহ কাসেমী
মুহাদ্দিস, জামিয়া কাসেম নানুতবী ঢাকা
দেশের কয়েকটি স্থানে বন্যা চলছে। এ বন্যার মধ্যেও আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল হওয়া অনুচিৎ। তাই আসুন নামাজ, পানি ও বন্যা কেন্দ্রিক কিছু মাসয়ালা জেনে নেই।
১. একান্ত শরঈ ওজর ছাড়া নামাজ কাযা করা যাবে না। কষ্ট হলেও সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে, আশ্রয় কেন্দ্রের এক কোণে সম্ভব হলে নামাজ পড়ে নিবেন। বিপদে একমাত্র আল্লাহ আমাদেরকে উদ্ধার করবেন।
২. বন্যার্তদের জন্য সুন্নত পড়া কষ্টকর হলে সুন্নত পড়ার প্রয়োজন নেই।
৩. বন্যার কারণে যদি কিবলার দিক নির্ধারণ করা সম্ভব না হয় তাহলে অনুমান করে দিক ঠিক করে নামাজ পড়ে নিবে। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে যদি জানা যায় ভুল দিকে নামাজ আদায় করা হয়েছে তাহলে পুনরাবৃত্তি করার প্রয়োজন নেই।
৪. পানির কারণে যদি রুকু বা সিজদা করা সম্ভব না হয় তাহলে দাঁড়িয়ে মাথার ইশারায় নামাজ আদায় করে নিবে। এক্ষেত্রে রুকুর তুলনায় সিজদার জন্য একটু বেশি মাথা ঝোঁকাবে।
৫. অজুর জন্য ভালো বা পরিস্কার পানির প্রয়োজন নেই। বন্যার পানি পাক। পানির তিনটি গুন অবশিষ্ট হলেই হল। পানি ঘোলা দেখা গেলেও সমস্যা নেই। ঘোলা ও ময়লা পানি দিয়েও অজু গোসল বৈধ। যেখানে ওজু করবেন সেখানে দৃশ্যমান নামাকি দেখা না গেলে হবে।
৬. বৃষ্টিতে ভেজা হলে বা ডুবে গিয়ে পুনরায় ফ্রেশ হলে এমতাবস্থায় নামাজ পড়তে পারবেন। নতুন করে অজুর প্রয়োজন নেই।
৭. বন্যার্ত কেউ মারা গেলে উচু ভূমি থাকলে সেখানে দাফন করবে নতুবা নদীতে লাশ ভাসিয়ে দিবে।
৮. যে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন সেখানকার দেয়ালে তায়াম্মুম করলে নামাজ পড়তে পারবেন। ওজুর ভঙ্গের কোন কারণ না পাওয়া গেলে এক ওজু দিয়ে কয়েক ওয়াক্ত নামাজ পড়া যাবে।
৯. বেশি বেশি করে اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا ولَا عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ علَى الآكَامِ والظِّرَابِ، وبُطُونِ الأوْدِيَةِ، ومَنَابِتِ الشَّجَرِ এ দুয়াটি পড়বেন। অথবা মুখে মুখে বাংলা দুআ করুন। দুয়াটির উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা, ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার। (বুখারি, হাদিস : ১০১৪)
১০. অথবা পড়তে পারেন, اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِن شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি। (বুখারি, হাদিস : ৩২০৬; মুসলিম, হাদিস : ৮৯৯; তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৪৯, আরো তথ্যসূত্র: দররে মুখতার ১/১৮৫, শরহু মুখতাসারুল তহাবি ১/২৩৮, হালবি কাবির পৃ. ৯০, আশবাহ, পৃ. ১০০।)
হাআমা/