হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বর ও ২০২১ সালে মোদী বিরোধী আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী শহীদ পরিবারের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৫ মার্চ'২৫, মঙ্গলবার, রাজধানীর জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া সাত মসজিদ মাদরাসা মিলনায়তনে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক এর পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন মহানগর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব।
শহীদের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন, শহীদ হাফেজ মাওলানা আনোয়ার শাহ এর পিতা আবুল হাসনাত,শহীদ ঈশা হক আলীর ছেলে আবু সাইদ, শহীদ খালিদ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ’র ভাই নাজমুল আলম, শহীদ মোহাম্মদ আকবরের ভাই মোহাম্মদ মনির হোসাইন, শহীদ মাওলানা ইউনুস আলীর পিতা মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন।
বক্তব্য রাখেন, নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা জালালুদ্দিন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা ফয়সাল আহমাদ, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা মুফতি শরিফুল্লাহ, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ, মুফতি মোহাম্মাদুল্লাহ প্রমূখ।
স্বাগত বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মাদ মা’মুনুল হক বলেন, হেফাজতের ধারাবাহিক কর্মসূচীর অংশ এটা। আজকে সুচনা করলাম। হেফাজতের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ৯ জন শীর্ষ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শহীদ ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারের পাশে আমরা আছি। সামনে সকলকে নিয়ে বড় আয়োজন করবো। যাদের মামলা আছে তাদেরকেও সহযোগিতা করবো। ইসলামের পক্ষে যারাই হয়ানির শিকার হবে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করছি।
শহীদদেরকে স্মরনীয় করে রাখতে স্মারক প্রকাশের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, জাতির সামনে শহীদদের ত্যাগ উপস্থাপনার জন্য হেফাজত উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা তাদের ইতিহাস সংরক্ষণ করবো। জাতিকে সত্যটা জানাবো।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হেফাজতে ইসলামের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফাতেহ মোহাম্মদ ইফতেখার আলম বলেন, ৫ তারিখে শাপলা চত্বর ও ৬ তারিখে সিদ্ধিরগঞ্জের ঘটনা ন্যাক্কারজনক। এই হত্যাকাণ্ডের পর আমরা আইনের সহায়তা পায়নি বরং আরো বিপদে পড়েছে। আজকে সুযোগ এসেছে তাদের কাঠগড়ায় দাড়ানোর। আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন, এ তদন্ত আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আপনারা সব ভয় কাটিয়ে আমাদের সহযোগিতা করবেন। কোন সমস্যা হলে আমাদেরকে জানাবেন।
আইনজীবী উদয় তাসমীর বলেন, বাংলাদেশ ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বর ঘটনা শাপলা ট্রাজেডি। আমি নিজেও গাজি। অথচ হাসিনা পরের দিন বলেছে রং মেখে নাকি শুয়ে ছিল। আমরা মামলা করেছি। এ তদন্তের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে এবং ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। আমরা ইনশাআল্লাহ তাদের বিচার দেখবোই।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব বলেন, জীবনের অনেক বড় আশা ছিল শাপলার শহিদ পরিবারকে নিয়ে বসবো। কেননা আপনারা জানেন, হাসিনা বলেছিল শাপলাতে কিছুই হয়নি। আপনারা জানেন, আহমদ শফি সাহেবসহ সবাইকে চাপ দিয়ে শোকরানা মাহফিল করিয়ে শেখ হাসিনার সামরিক সচিব হত্যাকাণ্ডকে অস্বীকার করেছে। এতোদিন কথা বলতে পারিনি। আমরা নাকি কোরআন পুড়িয়েছি! আমরা নির্বাচনের আগে হাসিনা ও তার দোসরদের আগে বিচার চাই।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, আপনারা অনেক প্রতিকুল অবস্থা এতো বছর পার করেছেন। এখন একটা সুন্দর পরিবেশ আল্লাহ তায়ালা দান করেছন। আগামিতে হেফাজত তার যথাযত দায়িত্ব পালন করবে ইনশাআল্লাহ। আমরাও দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবো।
ইফতার শেষে প্রত্যেক পরিবারের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।
এমএম/