ছয় দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এসব বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সচিবালয় অভিমুখে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন। পুলিশের ব্যারিকেড ও জলকামান উপেক্ষা করেই সামনে এগিয়ে গেছেন তারা। এসময় তাদের অনেককে শিক্ষা ভবন সংলগ্ন সড়কে বসে পড়তে দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল এবং কারাবন্দিদের মুক্তিসহ মোট ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্যই সচিবালয় অভিমুখে করেছেন তারা। বিডিআর কল্যাণ পরিষদ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
সংগঠনটির সভাপতি ফয়জুল আলম বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় নিরপরাধ জেলবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যায়ভাবে যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের সরকারি সকল প্রকার ক্ষতিপূরণসহ ছয় দফা অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। দাবি আদায়ে ১১, ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমরা লাগাতার শহীদ মিনারে অবস্থান করব। এর মধ্যে ছয় দফা বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের দাবিগুলো হলো—
১. পিলখানার ভেতরে ও বাইরে ১৮টি বিশেষ আদালত ও অধিনায়কের সামারি কোর্ট গঠন করে যেসব বিডিআর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের পুনরায় চাকরিতে বহাল করতে হবে। একইসঙ্গে তাদের ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
২. এরই মধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং সাজা শেষ হওয়া যেসব বিডিআর সদস্য এখনো কারাবন্দি আছেন অনতিবিলম্বে তাদের মুক্তি দিতে হবে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিস্ফোরক মামলা বাতিল করতে হবে।
৩. গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ব্যতীত শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (ঙ) নং ধারা বাদ দিতে হবে। একইসঙ্গে স্বাধীন তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে অন্যায়ভাবে দণ্ডিত নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটনসহ মূল ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৪. পিলখানায় শহীদ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১০ জন বিডিআর সদস্যসহ সর্বমোট ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে কারাগারে মারা যাওয়া সব বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৫. স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে।
৬. পিলখানার হত্যাকাণ্ডে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হবে। একইসঙ্গে শহীদদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এমএইচ/