হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা শায়খ সাজিদুর রহমান বলেছেন, দেশ রক্ষায় জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল নাগরিক ঐক্যবদ্ধ। ধর্মীয় বিভাজন ও গুজব ছড়িয়ে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করার যে কোন ষড়যন্ত্র জনগণ রুখে দিবে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ,এর প্রতিষ্ঠিত রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচরাস্থ জামিয়া নুরিয়া মাদরাসার অনুষ্ঠিত বার্ষিক মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি।
আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, প্রত্যেক ঈমানদারকে নামাজের প্রতি যত্নবান হতে হবে। তিনি আসর এবং ফজরের নামাজের গুরুত্ব প্রদান করে কোরআন হাদিসের আলোকে বলেন, হাদীস শরীফে সূর্যোদয়ের আগে এবং সূর্যাস্তের পূর্বের নামাজের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। তাছাড়া সহীহ শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত শিক্ষা করা এবং তেলাওয়াত করার প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য তিনি সকলকে উদ্বুদ্ধ করেন। ঈমানের হেফাজতের জন্য সকল বাতিল ফেরকা থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের ভ্রান্ত ধারণা সম্পর্কে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। হযরত মুহাম্মদ সাঃ সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী, তারপরে আর কোন নবী নেই। বাংলাদেশে তথাকথিত আহমদীয়া মুসলিম জামাত কাদিয়ানীরা কাফের। তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বয়ান পেশ করেন, হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমীর, হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা খলিলুর রহমান কুরাইশী কাসেমী, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, মোনাজেরে জামান আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা আনজার শাহ ইবনে আনোয়ার শাহ কিশোরগঞ্জ, মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী, মাওলানা সাইদুর রহমান ও মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী।
মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী ও সানাউল্লাহ হাফেজ্জীর তত্ত্বাবধানে এবং মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী ও মুফতি সুলতান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে জামেয়ার ফারেগিন হাফেজ, আলেম ও মুফতীদেরকে পাগড়ি প্রদান করা হয়।
আল্লামা খলিল আহমদ কুরাইশী কাসেমী বলেন, হাকিমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহ এর সোহবতে থেকে হাফেজ্জী হুজুর রহ, আত্মশুদ্ধি করেছেন এবং খেলাফত প্রাপ্ত হয়ে বাংলাদেশে এসে অসংখ্য মানুষের আত্মার খোরাক যুগিয়েছেন। প্রকৃত মানুষ গড়ার কারিগর হাফেজ্জী হুজুর রহ, বাংলাদেশে অসংখ্য মসজিদ মাদ্রাসা কায়েম করেছেন এবং জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন গঠন করে কোরআন সুন্নাহর শাসন তথা খেলাফত পদ্ধতির সরকার গঠন করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে গেছেন। আত্মা ও ব্যক্তির পরিশুদ্ধি ছাড়া কোন আইনের মাধ্যমেই অন্যায় অবিচার দূর করা সম্ভব নয়। তাই দেশ সংস্কারের আগে ব্যক্তি সংস্কার জরুরী। সমস্ত গুনাহ পরিহার করে ব্যক্তির সমাজ ও রাষ্ট্রে ইনসাফ কায়েমের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া মানবজাতির ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব। বর্তমান জমানায় কওমি মাদ্রাসা গুলোর সাথে সম্পৃক্ত থাকা ঈমান হেফাজতের জন্য খুবই জরুরী। তাছাড়া হক্কানী ওলামায়ে কেরামদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত তাবলীগের মেহনতের সাথে লেগে থাকা এবং আল্লাহওয়ালাদের সুহবতে আত্মশুদ্ধি করা প্রত্যেকের জন্য আবশ্যক।
আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী বলেন, হযরত ইব্রাহীম আঃ কে আল্লাহ তাআলা অনেক পরীক্ষায় সম্মুখীন করেছেন এবং তিনি সমস্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ছিলেন। পৃথিবীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন আম্বিয়ায়ে কেরাম। এবং সকলেই আল্লাহ প্রদত্ত পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। আমাদের জীবনের ধাপে ধাপেও অনেক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। ধৈর্যের সাথে সমস্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
বক্তাগণ আল্লাহর জমিনে আল্লাহর হুকুম তথা খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ , অনুসৃত পথে জানমাল কুরবান করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
হাআমা/