রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২৫ কার্তিক ১৪৩১ ।। ৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


দ্রুত সময়ের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার করে ফলপ্রসূ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে: শায়খে চরমোনাই

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই নির্বাচন কমিশন, সংবিধান, পুলিশ প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কারের জন্য যে ৬টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীণ সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, কমিশনগুলো যেন দ্রুত কাজ শুরু করতে পারে এবং কোনো দীর্ঘসূত্রিতায় জড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী দুঃশাসনের দেশের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাঁচার করেছে, সেই সকল দুর্নীতিবাজদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার করতে হবে। সংখ্যানুপাতিক (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। ফলে কালো টাকার মালিক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবাজরা নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারবে না।

তিনি শরীয়তের বিধান বোরকা নিয়ে শিল্পকলার নতুন ডিজির আপত্তিকর বক্তব্যে নিন্দা জানিয়ে বলেন, ইসলামের বিধি-বিধান নিয়ে কটুক্তিকারী ড. সৈয়দ জামিল আহমেদকে অপসারণ করতে হবে। তিনি বলেন, সৈয়দ জামিল আহমেদ ইসলামের বোরকা, দাঁড়ি ও টুপির বিরুদ্ধে কথা বলেন, তিনি কখনো হিন্দুদের শাঁখা সিঁধুরের বিরুদ্ধে বলেন না! কখনো বৌদ্ধদের গেরুয়া পোশাকের বিরুদ্ধে বলেন না! কখনো খ্রিস্টানদের ক্রুশের বিরুদ্ধে বলেন না! সুতরাং তিনি ধর্ম নিরপেক্ষ নন, তিনি ইসলামবিদ্বেষী। সৈয়দ জামিন আহমেদকে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে মেনে নেওয়া যায় না।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মোহাম্মদবাগ চৌরাস্তায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কদমতলী থানা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার করা, সংখ্যানুপাতিক (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামি সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারী ডা. শহিদুল ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতী শওকত ওসমান, এম জসিম খাঁ।

সংগঠনের কদমতলী থানা শাখা সভাপতি মাওলানা মাসউদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আলহাজ ওসমান গণী নবী, হাফেজ মাওলানা রশীদ আহমাদ, মিজানুর রহমান, মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, মুফতী গোলাম রব্বানী, হাজী মাসুম আহমেদ, মাহমুদুল হাসান।

মুফতী ফয়জুল করীম বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এধরণের ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। দলের নায়েবে আমীর আরও বলেন, আমরা ইসলামের আলোকে দেশকে পরিচালিত করবো। আদর্শিক পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশকে চোর-ডাকাতমুক্ত দেশ হিসেবে গড়তে চাই।

তিনি বলেন, লুটেরা ও দুর্নীতিবাজদের আমরা দেখতে চাইনা। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল দলমত, ধর্মবর্ণের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এ জন্য প্রয়োজন ইসলামী অনুশাসন। ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে সর্বত্র ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।

মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিজয়ে দেশবাসী আশা করেছিল, দখলদারি-চাঁদাবাজি বন্ধ হবে, কিন্তু এটি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথাযথ উন্নতি এখনো পর্যন্ত হয়নি। বিভিন্ন স্থানে দখলদারি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা বন্ধে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অন্তর্র্বতী সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ