শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ কওমি সনদ বাস্তবায়ন সেমিনার থেকে ১৩ দফা প্রস্তাবনা ও ২ দফা কর্মসূচি ঘোষণা স্বকীয়তা বজায় রেখে কওমি সনদের স্বীকৃতি বাস্তবায়ন চান মুফতী ফয়জুল করীম কওমি শিক্ষার্থীদের প্রতি সকল বৈষম্যের অবসান হোক: সেমিনারে বক্তারা ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন’ হবিগঞ্জে মহানবী সা.কে কটূক্তিকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা, আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে ড. ইউনূসের চিঠি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
সংগৃহীত

।। ড. ইউনূসের কূটনৈতিক সাফল্য।।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অভিযুক্ত হওয়া ৫৭ বাংলাদেশির সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছেন আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল কোর্ট তাদেরকে অভিযুক্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যম সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করছেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ক্ষমা পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশিকে আরব আমিরাত থেকে ফেরত আসতে হবে না। তাদেরকে সেখানেই কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে। গতকাল গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছিলেন, ক্ষমা পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, আরব অমিরাতে বিভিন্ন সময় দণ্ডিত হয়ে যারা জেলে আছেন তাদেরকেও মুক্ত করার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমতি ছাড়া যেকোনো ধরনের বিক্ষোভ নিষিদ্ধ। বাংলাদেশে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে গত ১৯ জুলাই শুক্রবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ওই বিক্ষোভ করেন বলে খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ওই বিক্ষোভের পরদিন শনিবার ( ২০ জুলাই ) আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল বিবৃতি দিয়ে প্রবাসীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসকারী সব প্রবাসী বাংলাদেশিকে স্থানীয় আইন ও বিধিবিধান মেনে চলতে অনুরোধ করা হচ্ছে। সবার জেনে রাখা ভালো, এই দেশের আইন অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষগুলোর পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ করা বা স্লোগান দেওয়া নিষিদ্ধ। জনগণের মধ্যে অস্থিরতা, আতঙ্ক বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো কাজ করা, গুজব বা অপপ্রচার চালানো কিংবা এই ধরনের কোনো বক্তব্য, ছবি বা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা এই দেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

এতে আরও বলা হয়, কেউ উল্লিখিত কাজগুলো করলে তাকে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। তার ভিসা বাতিল হয়ে যেতে পারে, জেল-জরিমানা হতে পারে, তাকে আমিরাত থেকে ফেরত পাঠানো হতে পারে বা ভবিষ্যতে তার আমিরাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হতে পারে।

এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় আটক ৫৭ বাংলাদেশিকে মুক্তির ঘটনাকে বড় কূটনৈতিক জয় বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সমন্বয়ক হাসনাত তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত বন্দি ৫৭ বাংলাদেশি স্বৈরাচারবিরোধী প্রতিবাদকারীকে মুক্তি দিয়েছে, যা বাংলাদেশের বড় কূটনৈতিক জয়।’

আরব আমিরাতকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. ইউনূসের চিঠি

 

এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করে দেওয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাকে একটি চিঠি দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

চিঠিতে ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, সম্প্রতি ছাত্র-গণবিপ্লবের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশকারী ৫৭ জন বাংলাদেশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ করেছেন। তাদেরকে ক্ষমা করার আপনার উদার সিদ্ধান্তের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগ আমি উপভোগ করছি। আমাদের টেলিফোন কথোপকথনের পর এই ক্ষমাশীলতার কাজটি শুধু সহানুভূতিশীল নেতৃত্বের উদাহরণই দেয় না বরং আমাদের দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের স্থায়ী বন্ধনকে শক্তিশালী করার জন্য একটি বাহক হিসেবে কাজ করে।

তিনি বলেন, সাজা বাতিল করার জন্য আপনার উদার সিদ্ধান্ত বিশেষ করে জড়িতদের পরিবার এবং বাংলাদেশের বৃহত্তর দেশবাসী সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমাদের দেশের নাগরিকরা স্বস্তি পেয়েছে। আমরা সত্যিই, আপনার সহানুভূতি গভীরভাবে স্পর্শ করেছি। আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইনের প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান প্রকাশ করছি। আমাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে প্রস্থান করার আগে তাদের স্বাগতিক দেশগুলির স্থানীয় আইন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ও শিক্ষিত করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করছি।

তিনি আরও বলেন, আপনার সদয় সিদ্ধান্তের জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। যা আমাদের জাতির মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে। আমরা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে এবং আমাদের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য একসঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ। আমি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের জন্য আপনার সুস্বাস্থ্য, সুখ, দীর্ঘ জীবন এবং অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি কামনা করছি।

বিনু/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ