নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় থাকা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর ) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।
এতে সই করেছেন সলিসিটর রুনা নাহিদ আকতার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নিয়োগ আদেশ জনস্বার্থে বাতিলক্রমে তাকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন এমরান আহম্মদ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি (এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে হয় তার পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত, অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে। তিনি ডিএজি থেকে সেটি করেননি। তিনি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি এটি দেখব।
একইদিন নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, কোনো পাল্টা বিবৃতি তৈরি করা হয়নি এবং আইন কর্মকর্তাদের সই করতেও বলা হয়নি। তার মতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যায় এমন বিবৃতিতে সই করতে অস্বীকৃতি জানানো ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।
এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, অধ্যাপক ড. ইউনূসের পক্ষে ১৬০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন যে— তাকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। সেটির বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে। নোটিশ দেওয়া হয়েছে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে সেই বিবৃতিতে সই করার জন্য। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই বিবৃতিতে আমি সই করব না।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল সে দেশে যে আইন সংস্কার হচ্ছে, বিচার সম্পর্কিত, তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বিবৃতিতে সই না করার চিন্তাটাও সে রকমই।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, যে বিবৃতি দিয়েছেন ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, আমি তাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত। আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।