আবু হামদান, নিজস্ব প্রতিবেদক
ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় ২য় স্থান অর্জন করেছেন একাধিকবার বিশ্বজয়ী কুরআনের হাফেজ ক্বারী মাওলানা মুহাম্মাদ জাকারিয়া।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় ইন্দোনেশিয়ার কালিমানতানে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা ও পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
ইন্দোনেশিয়ার সর্ববৃহৎ ইসলামী গণসংগঠন নাহদলাতুল উলামা দ্বারা পরিচালিত ‘জামিয়াতুল কুররা ওয়াল হুফফাজ’ আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় ইন্দোনেশিয়ার প্রতিনিধি তানাহ লাউত ১ম এব , তানাহ বুম্বু ৩য় স্থান অর্জন করেছেন।
ইন্দোনেশিয়া আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতাকে ইংরেজিতে Musabaqah Tilawatil Quran বলা হয় যা সংক্ষেপে MTQ নামে ব্যপক পরিচিত। ১৯৪০ সাল থেকে ইন্দোনেশিয়ায় এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আয়োজক কমিটির প্রধান আব্দুল হাকিম মুসলিম বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এবারের আয়োজন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়েছে। এই আয়োজনের মাধ্যমে মুসলিমদের মধ্যে কুরআনের সুর ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পবিত্র গ্রন্থ আল-কুরআনে নিহিত তিলাওয়াত, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা, মুখস্থ ও মূল্যবোধের বিকাশকে উৎসাহিত করার জন্য এই প্রচেষ্টা।
তিনি বলেন, আমি আশা করি, এমন আয়োজন আল-কুরআনের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি এবং উপলব্ধি ও ভালবাসা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে। যা একজন মুসলিম হিসাবে জীবনের জন্য একটি নির্দেশিকা।
বিজয়ীদের উদ্দেশে আব্দুল হাকিম মুসলিম বলেন, যারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তাদের জন্য শুভকামনা। তবে যারা সফল হননি, তারা কখনো হাল ছেড়ে দেবেন না। আপনার সম্ভাবনার বিকাশ চালিয়ে যান, যাতে আপনি পরবর্তী আয়োজনে বিজয়ী হতে পারেন।
বিশ্বজয়ী হাফেজ ক্বারী মাওলানা মুহাম্মাদ জাকারিয়া বিজয়ী হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে মুঠোফোনে আওয়ার ইসলামকে বলেন, আলহামদুল্লিাহ! আরেকটি আন্তর্জাতিক অর্জন আমার সামনে পথচলা আরও সুগম করবে। নিজের স্বপ্ন পূরণে দৃড় প্রত্যয় নিয়ে আমি এগিয়ে যেতে চাই। প্রিয় দেশবাসী, আমার শিক্ষক, বাবা-মা, সহপাঠী-বন্ধুবান্ধবদের দোয়া ও ভালোবাসা আমার সেই স্বপ্ন পূরণের সারথি হবে ইনশাআল্লাহ।
বিশ্বজয়ী হাফেজ ক্বারী মাওলানা মুহাম্মাদ জাকারিয়া ২০১১ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ক্বিরাত প্রতিযোগিতায় চতুর্থ স্থান, ২০১৩ সালে জর্ডানে আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান, ২০১৪ সালে মিশরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে।
২০১৬ সালে কুয়েতে আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। ২০১৬ সালে বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় হিফজ ও ক্বিরাতে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
২০১৭ সালে সুদান আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন এবং তাফসির প্রতিযোগিতায় হিফজ ও তাফসির বিভাগে ৪র্থ স্থান অর্জন করেন।
২০১৯ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় সম্মাননা পুরস্কার অর্জন করেন।
এছাড়াও তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন হিফজ ও ক্বিরাত প্রতিযোগীতায় সুনাম অর্জন করেছেন।
তথ্যসূত্র: কালমানতান পোস্ট
আরএম/